সরস্বতী দেবী কে?।।সরস্বতী দেবীর পরিচয়।।

0
1203

সরস্বতী হলেন জ্ঞান, সঙ্গীত, শিল্পকলা, বুদ্ধি ও বিদ্যার হিন্দু দেবী। তিনি সরস্বতী-লক্ষ্মী-পার্বতী এই ত্রিদেবীর অন্যতম। এই ত্রিদেবীর কাজ হল ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিবকে যথাক্রমে জগৎ সৃষ্টি পালন করতে সাহায্য করা। সরস্বতীর গায়ের রং শুভ্র(সাদা)। শ্বেতপদ্ম তার আসন। তার এক হাতে পুস্তক ও এক হাতে বীণা। তার হাতে বীণা থাকায় তাকে বীণাপাণি বলা হয়। এছাড়াও তিনি শ্রুতদেবী নামেও কথিত হন।(উইকিপিডিয়া)
পুরাণ অনুসারে দেবী

পার্বতী, লক্ষী, সরস্বতী এই ত্রি- দেবীর মধ্যে অন্যতম হলেন সরস্বতী। স্কন্দ পুরাণ অনুযায়ী, প্রজাপিতা ব্রহ্মার মানসকন্যা সরস্বতী। তাঁর রূপে মুগ্ধ হয়ে ব্রহ্মা মিলিত হতে চান। সরস্বতী আত্মরক্ষা করতে বিভিন্ন প্রাণীর রূপ ধারণ করেন। অনুসরণকারী ব্রহ্মাও সেই প্রাণীর রূপ নেন। এভাবেই বারবার মিলিত হওয়ার ফলে প্রাণী জগৎ-এর সৃষ্টি। প্রজাপিতার এই দুরাচারের জন্যই দেবাদিদেব শরবিদ্ধ করেন তাঁকে। শিবের শরণাপন্ন হয়ে তপস্যা শুরু করেন ব্রহ্মা জায়া গায়ত্রী। এরপরেই প্রাণ ফিরে পান প্রজাপিতা। কুলীন একমাত্র এই অভিশপ্ত দেবতারই মন্দির নেই। প্রজাপিতা ব্রহ্মা সর্বরত্ন শিলা নিক্ষেপ করেন পুষ্করের জলে। নির্মিত হয় মন্দির। তিনি চাইলেন এখানেই অধিষ্ঠান করুক সরস্বতী। দেবী পাতাল নিবাসী। ব্রহ্মা বললেন, ত্রি-সন্ধ্যা তর্পণ করবেন দেবীর উদ্দেশ্যে। সরস্বতী দেবীর মত নিয়ে হ্রদ খনন করা হল। সেখানেই বাস করতে থাকলেন দেবী। আবার অন্য মতে, সরস্বতী শিব-পার্বতী কন্যা।

দেবীভাগবত পুরাণ অনুযায়ী, দেবী নারায়ণ পত্নী। কৃষ্ণের জ্বিহাগ্র থেকেই তাঁর আবির্ভাব। আদ্যা প্রকৃতির তৃতীয় অংশে দেবীর জন্ম। শম্ভু- নিশুম্ভ বধ করতে দেবী চণ্ডিকার দেহ থেকে আবির্ভাব হয় ‘কৌষিকী’ রূপী সরস্বতীর। মার্কণ্ডেয় পুরাণেও এই কথা বলা হয়েছে।

কথিত আছে, নারায়ণ জায়া তিন দেবী। লক্ষী, গঙ্গা ও সরস্বতী। গঙ্গা ও নারায়ণ পরস্পরের মধ্যে হাসাহাসি করলে তিন সতীনের মধ্যে বিবাদ দেখা যায়। এরপরেই গঙ্গার অভিশাপে সরস্বতী মর্ত্যে নদী হিসেবে প্রবাহিত হতে থাকেন। দেবী সরস্বতী যেন ত্রিরূপী। একদিকে তিনি নারায়ণ সঙ্গিনী, একদিকে নদী ও অন্যদিকে প্রজাপিতা জায়া।
শুক্ল যজুর্বেদে বর্ণিত হয়েছে, দেবরাজ ইন্দ্র অসুস্থ থাকার সময় দেবী সরস্বতী গান, বাজনা ও শুশ্রূষার মধ্য দিয়ে তাঁকে সুস্থ করে তোলেন।

বায়ুপুরাণ অনুযায়ী, দেবাদিদেবের তাণ্ডবে জগৎ সংসার ধ্বংস হলে পুনরায় ব্রম্ভাণ্ডকে শিক্ষা, শিল্প আর রূপ-লাবণ্যে সুন্দর করে সাজিয়ে তুলতে প্রজাপিতার মানসকন্যা হিসেবেই দেবীর জন্ম।

পদ্মপুরাণ অনুযায়ী, ঋষি কাশ্যপের স্ত্রী সরস্বতী। তিনি দক্ষরাজের কন্যা এবং ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণে দেবী নারায়ণ ঘরণী।
গরুড় পুরাণে সরস্বতী হলেন তুষ্টি, পুষ্টি, শ্রদ্ধা, ঋদ্ধি, প্রভা, কলা, মেধা ও স্মৃতি শক্তি।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে