সক্রেটিস।।Socratis।।জ্ঞানের পিতা সক্রেটিস।।

0
324

সক্রেটিস

(৪৭০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ – ৩৯৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) প্রাচীন গ্রিক দার্শনিক। এই মহান দার্শনিকের সম্পর্কে তথ্য লিখিতভাবে পাওয়া যায় কেবলমাত্র তাঁর শিষ্য প্লেটোর ডায়ালগ এবং সৈনিক জেনোফনের রচনা থেকে। তৎকালীন শাসকদের কোপানলে পড়ে তাঁকে হেমলক বিষ পানে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। তাকে পশ্চিমি দর্শনের ভিত্তি স্থাপনকারী হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। তিনি এমন এক দার্শনিক চিন্তাধারার জন্ম দিয়েছেন যা দীর্ঘ ২০০০ বছর ধরে পশ্চিমা সংস্কৃতি, দর্শন ও সভ্যতাকে প্রভাবিত করেছে। সক্রেটিস ছিলেন এক মহান সাধারণ শিক্ষক, যিনি কেবল শিষ্য গ্রহণের মাধ্যমে শিক্ষা প্রদানে বিশ্বাসী ছিলেননা। তার কোনো নির্দিষ্ট শিক্ষায়তন ছিলনা। যেখানেই যাকে পেতেন তাকেই মৌলিক প্রশ্নগুলোর উত্তর বোঝানোর চেষ্টা করতেন। তিনি মানব চেতনায় আমোদের ইচ্ছাকে নিন্দা করেছেন, কিন্তু সৌন্দর্য দ্বারা নিজেও আনন্দিত হয়েছেন।

জীবন ও কর্ম
সক্রেটিসের জীবনের বিস্তৃত সূত্র হিসেবে বর্তমানকালে তিনটি উৎসের উল্লেখ করা যেতে পারে: প্লেটোর ডায়ালগসমূহ, এরিস্টোফেনিসের নাটকসমূহ এবং জেনোফেনোর ডায়ালগসমূহ। সক্রেটিস নিজে কিছু লিখেছেন বলে কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি। এরিস্টোফেনিসের নাটক দ্য ক্লাউডে সক্রেটিসকে দেখানো হয়েছে একজন ভাঁড় হিসেবে যে তার ছাত্রদের শিক্ষা দেয় কীভাবে ঋণের দায় থেকে বুদ্ধি খাটিয়ে মুক্তি পাওয়া যায়। এরিস্টোফেনিসের অধিকাংশ রচনাই যেহেতু ব্যঙ্গাত্মক ছিল সেহেতু এই রচনায় সক্রেটিসকে যেভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে তা সম্পূর্ণরূপে গ্রহণযোগ্য নয়।

প্লেটোর বর্ণনামতে সক্রেটিসের বাবার নাম সফ্রোনিস্কাস এবং মায়ের নাম ফিনারিটি যিনি একজন ধাত্রী ছিলেন। তার স্ত্রীর নাম জানথিপি যার বয়স ছিল সক্রেটিসের থেকে অনেক কম। সংসার জীবনে তাঁদের তিন পুত্রসন্তানের জন্ম হয় যাঁদের নাম ছিল লামপ্রোক্লিস, সফ্রোনিস্কাস এবং মেনেজেনাস। সক্রেটিস তাঁর শাস্তি কার্যকর হওয়ার পূর্বে পালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ ফিরিয়ে দেন। এর পর নিজ পুত্রদের ত্যাগ করার জন্য সক্রেটিসের বন্ধু ক্রিটো তার সমালোচনা করেছিলেন। সক্রেটিসের জন্ম ৪৭০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে গ্রিসের এথেন্স নগরীতে এলোপাকি গোত্রে জন্মগ্রহণ করেছিলেন।
তিনি ঠিক কীভাবে জীবিকা নির্বাহ করতেন তা পরিষ্কার নয়। ফিলাসের টিমোন এবং পরবর্তী আরো কিছু উৎস অনুসারে প্রথম জীবনে তিনি তাঁর বাবার পেশা অবলম্বন করেছিলেন। তাঁর বাবা ছিলেন একজন ভাস্কর। সে হিসেবে তাঁর প্রথম জীবন কেটেছে ভাস্করের কাজ করে। প্রাচীনকালে অনেকেই মনে করত গ্রিসের অ্যাক্রোপলিসে দ্বিতীয় শতাব্দী পর্যন্ত বিরাজমান ঈশ্বরের করুণা চিহ্নিতকারী মূর্তিগুলো সক্রেটিসের হাতে তৈরি। অবশ্য বর্তমান কালের বুদ্ধিজীবীরা এর সুনির্দিষ্ট প্রমাণ খুঁজে পাননি। অপরদিকে সক্রেটিস কোনো পেশা অবলম্বন করেননি এমন প্রমাণও রয়েছে। জেনোফোন রচিত সিম্পোজিয়ামে সক্রেটিসকে বলতে শোনা যায়, তিনি কখনো কোনো পেশা অবলম্বন করবেননা, কারণ তিনি ঠিক তা-ই করবেন যেটা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন আর তা হচ্ছে দর্শন সম্বন্ধে আলোচনা। এরিস্টোফেনিসের বর্ণনায় দেখা যায় সক্রেটিস শিক্ষার বিনিময়ে অর্থ নিতেন এবং গ্রিসের চেরিফোনে একটি সোফিস্ট বিদ্যালয়ও পরিচালনা করতেন। তার দ্য ক্লাউডস্‌ রচনায় এই ভাষ্য পাওয়া গিয়েছে। আবার প্লেটোর অ্যাপোলজি এবং জেনোফোনের সিম্পোজিয়ামে দেখা যায় সক্রেটিস কখনোই শিক্ষার বিনিময়ে অর্থ নেননি। বরঞ্চ তিনি তার দারিদ্র্যের দিকে নির্দেশ করেই প্রমাণ দিতেন যে, তিনি কোনো পেশাদার শিক্ষক নন। তাকে বলতে শোনা যায়:

“ নিজেকে অন্যের মধ্যে বিলিয়ে দেওয়াই আমার অভ্যাস; আর এজন্যই এমনিতে না-পেলে পয়সাকড়ি দিয়েও আমি দার্শনিক আলোচনার সাথী সংগ্রহ করতাম। ”
প্লেটোর ডায়ালগগুলোর বিভিন্ন স্থানে লেখা হয়েছে যে, সক্রেটিস কোনো এক সময় সামরিক বাহিনীতে যোগ দিয়েছিলেন। প্লেটোর বর্ণনায় সক্রেটিস বলেন, তিনি তিন তিনটি অভিযানে এথেনীয় সেনাবাহিনীর সাথে যোগ দিয়েছেন। এই অভিযানগুলো সংঘটিত হয়েছিল যখাক্রমে পটিডিয়া, অ্যাম্‌ফিপোলিস এবং ডেলিয়ামে। সিম্পোজিয়ামে আলসিবিয়াডিস নামক চরিত্র বর্ণনা করে পটিডিয়া এবং ডেলিয়ামের যুদ্ধে সক্রেটিসের বীরত্বের কথা এবং এর আগের যুদ্ধে তিনি কিভাবে নিজের প্রাণ বাঁচিয়েছিলেন সেকথা। ডেলিয়ামের যুদ্ধে তাঁর অসাধারণ অবদানের কথা লাকিস নামক রচনাতেও বর্ণীত হয়েছে। মাঝেমধ্যেই সক্রেটিস বিচারালয়ের সমস্যাকে যুদ্ধক্ষেত্রের সঙ্গে তুলনা করেছেন। তিনি বলেন একজন বিচারক দর্শন থেকে সরে আসবেন কী-না তা ভেবে দেখা তেমনই প্রয়োজন যেমন উপযুক্ত পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে যুদ্ধক্ষেত্র ত্যাগ করবে কী-না তা একজন সৈন্যের ভেবে দেখা প্রয়োজন।

সক্রেটিস দেখতে মোটেও সুদর্শন ছিলেননা। টাকবিশিষ্ট মাথা, চ্যাপ্টা অবনত নাক, ছোটো ছোটো চোখ, স্ফীত উদর এবং অস্বাভাবিক গতিভঙ্গির সমন্বয়ে গঠিত ছিল তার সামগ্রিক চেহারা। দেহের শ্রী তেমন না-থাকলেও তার রসবোধ ছিল প্রখর। রঙ্গ করে প্রায়শই বলতেন: “নাসারন্ধ্রটি বড়ো হওয়ায় ঘ্রাণ নেওয়ার বিশেষ সুবিধা হয়েছে; নাকটি বেশি চ্যাপ্টা হওয়াতে দৃষ্টি কোথাও বাধা পায়না।” কথাবার্তা ও আচার-আচরণে তিনি ছিলেন মধুর ব্যক্তি। তাই যে-ই তার সঙ্গে কথা বলত সে-ই তার কথাবার্তা ও চরিত্রসৌন্দর্যে মুগ্ধ হয়ে যেতো। অধিকাংশের বর্ণনামতেই তিনি কোনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষা প্রদান করতেননা। রাস্তা-ঘাট, হাট-বাজারই ছিল তার শিক্ষায়তন। দর্শন অনুশীলন করতে গিয়ে সংসার ও জীবিকা সম্পর্কে খুবই উদাসীন হয়ে পড়েছিলেন তিনি। এ কারণে শেষ জীবনে তাঁর পুরো পরিবারকেই দারিদ্র্য ও অনাহারের মধ্যে জীবন যাপন করতে হয়। বেশির ভাগ সময়েই তিনি তাঁর শিষ্যদের বাড়িতে পানাহার করতেন। স্ত্রী জানথিপির কাছে তিনি ছিলেন অবজ্ঞার পাত্র। জানথিপি প্রায়ই বলতেন, তার নিষ্কর্মা স্বামী পরিবারের জন্য সৌভাগ্য না-এনে দুঃখ কষ্টই এনেছেন বেশি। তবে বাইরে বাইরে যতই তিক্ততা থাকুক অন্তরের অন্তস্থলে স্বামীর জন্য ভালোবাসা ছিল জানথিপির। সক্রেটিসের মৃত্যুতে তিনি যেভাবে শোক প্রকাশ করছেন তা থেকেই এই ভালোবাসার প্রমাণ পাওয়া যায়।

বিচার ও মৃত্যু

এথেনীয় সাম্রাজ্যের সর্বোচ্চ ক্ষমতার যুগ থেকে পেলোপনেশীয় যুদ্ধে স্পার্টা ও তার মিত্রবাহিনীর কাছে হেরে যাওয়া পর্যন্ত পুরো সময়টাই সক্রেটিস বেঁচে ছিলেন। পরাজয়ের গ্লানি ভুলে এথেন্স যখন পুনরায় স্থিত হওয়ার চেষ্টা করছিল তখনই সেখানকার জনগণ একটি কর্মক্ষম সরকার পদ্ধতি হিসেবে গণতন্ত্রের সঠিকত্ব নিয়ে প্রশ্ন তোলা শুরু করেছিল। সক্রেটিসও গণতন্ত্রের একজন সমালোচক হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন। তাই অনেকে সক্রেটিসের বিচার ও মৃত্যুটিকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে ব্যাখ্যা করেছেন।

এথেনীয় সরকার সক্রেটিসকে এমন দোষে দোষী বলে সাব্যস্ত করেছিল যাতে তাঁর মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হতে পারে। কিন্তু তাঁর গুণাবলি ও সত্যের প্রতি অটল মনোভাব সত্যিকার অর্থেই তৎকালীন সরকারি নীতি ও সমাজের সঙ্গে সংঘর্ষ সৃষ্টিতে সমর্থ হয়েছিল। এ প্রসঙ্গে থুসিডাইডিস বলেছেন: “এক কথায় তার উদ্দেশ্যে হাততালি দেয়া যেতে পারে যে, প্রথমবারের মতো কোনো একটি অনৈতিক আইন প্রণয়ন করেছে এবং যে অন্য এমন একজনকে কোনো একটি অপরাধ করতে উৎসাহিত করে যে, অপরাধের চিন্তা সে নিজেই কখনো করেনিসক্রেটিস সরাসরি বা অন্য কোনোভাবে বিভিন্ন সময়ে স্পার্টার অনেক নীতির প্রশংসা করেছে যে, স্পার্টা ছিল এথেন্সের ঘোর শত্রু। এসব সত্ত্বেও ঐতিহাসিকভাবে সমাজের চোখে তার সবচেয়ে বড়ো অপরাধ ছিল সামাজিক ও নৈতিক ক্ষেত্রসমূহ নিয়ে তীব্র সমালোচনা। প্লেটোর মতে সক্রেটিস সরকারের জন্য একটি বিষফোঁড়ার কাজ করেছিলেন যার মূলে ছিল বিচার ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা ও ভালোর উদ্দেশ্য নিয়ে সমালোচনা। এথেনীয়দের সুবিচারের প্রতি নিষ্ঠা বাড়ানোর চেষ্টাকেই তাঁর শাস্তির কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা যেতে পারে।

প্লেটোর অ্যাপোলজি গ্রন্থের ভাষ্যমতে, সক্রেটিসের বন্ধু চেরিফোন একদিন ডেলফির ওরাক্‌লের কাছে গিয়ে প্রশ্নে করে যে, সক্রেটিসের চেয়ে প্রাজ্ঞ কেউ আছে কী-না। উত্তরে ওরাক্‌ল জানায় সক্রেটিসের চেয়ে প্রাজ্ঞ কেউ নেই। এর পর থেকেই সক্রেটিসকে সমাজের চোখে একজন রাষ্ট্রীয় অপরাধী ও সরকারের জন্য বিষফোঁড়া হিসেবে দেখা হতে থাকে। সক্রেটিস বিশ্বাস করতেন ওরাক্‌লের কথাটি ছিল নিছক হেঁয়ালি। কারণ ওরাক্‌ল কখনো কোনো নির্দিষ্ট ব্যক্তিকে জ্ঞান অর্জনের কারণে প্রশংসা করেনা। এটি আদৌ হেঁয়ালি ছিল কী-না তা পরীক্ষা করার জন্য সক্রেটিস সাধারণ এথেনীয়রা যে লোকদের জ্ঞানী বিবেচনা করত তাদের কাছে গিয়ে কিছু প্রশ্ন করতে শুরু করেন। তিনি এথেন্সের মানুষদেরকে উত্তম, সৌন্দর্য এবং গুণ নিয়ে প্রশ্ন করেছিলেন। উত্তর শুনে তিনি বুঝতে পারেন এদের কেউই এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানেনা কিন্তু মনে করে যে তারা সব জানে। এ থেকে তিনি সিদ্ধান্তে উপনীত হন এই দৃষ্টিভঙ্গিতে সক্রেটিস সবচেয়ে প্রাজ্ঞ ও জ্ঞানী যে, সে যা জানে না তা জানে বলে কখনো মনে করেনা। তার এ ধরনের হেঁয়ালিসূচক প্রজ্ঞা ও জ্ঞান তখনকার স্বনামধন্য এথেনীয়দের বিব্রত অবস্থার মধ্যে ফেলে দেয়। সক্রেটিসের সামনে গেলে তাদের মুখ শুকিয়ে যেতে শুরু করে। কারণ তারা কোনো প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারতনা। এ থেকেই সবাই তাঁর বিরোধিতা শুরু করে।

এছাড়াও সক্রেটিসকে তরুণ সম্প্রদায়ের মধ্যে চরিত্রহীনতা ও দুর্নীতি প্রবেশ করানোর অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়। সব অভিযোগ বিবেচনায় এনে তাঁকে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হয়। মৃত্যুর মাধ্যম নির্দিষ্ট হয় হেমলক বিষ পান। প্লেটোর ফিডো গ্রন্থের শেষে সক্রেটিসের মৃত্যুর পর্বের বর্ণনা উদ্ধৃত আছে। কারাগার থেকে পালানোর উদ্দেশ্যে সক্রেটিস ক্রিটোর অনুরোধ ফিরিয়ে দেন। বিষ পানের পর সক্রেটিসকে হাঁটতে আদেশ করা হয় যতক্ষণ না তাঁর পদযুগল ভারী মনে হয়। শুয়ে পড়ার পর যে লোকটি সক্রেটিসের হাতে বিষ তুলে দিয়েছিল সে তাঁর পায়ের পাতায় চিমটি কাটে। সক্রেটিস সে চিমটি অনুভব করতে পারেননি। তার দেহ বেয়ে অবশতা নেমে আসে। হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে যায়। মৃত্যুর পূর্বে তার বলা শেষ বাক্য ছিল: “ক্রিটো, অ্যাসক্লেপিয়াস আমাদের কাছে একটি মোরগ পায়, তার ঋণ পরিশোধ করতে ভুলোনা যেন।” অ্যাসক্লেপিয়াস হচ্ছে গ্রিকদের আরোগ্য লাভের দেবতা। সক্রেটিসের শেষ কথা থেকে বোঝা যায়, তিনি বোঝাতে চেয়েছিলেন মৃত্যু হল আরোগ্য এবং দেহ থেকে আত্মার মুক্তি। রোমান দার্শনিক সেনেকা তাঁর মৃত্যুর সময় সক্রেটিসের নকল করার চেষ্টা করেছিলেন। সেনেকাও সম্রাট নিরোর আদেশে আত্মহত্যা করতে বাধ্য হয়েছিলেন।

দার্শনিক পদ্ধতি

সক্রেটিস দার্শনিক জেনোর মত দ্বান্দ্বিক পদ্ধতিতে বিশ্বাসী ছিলেন। এই পদ্ধতিতে প্রথমে প্রতিপক্ষের মত স্বীকার করে নেওয়া হয়, কিন্তু এর পর যুক্তির মাধ্যমে সেই মতকে খণ্ডন করা হয়। এই পদ্ধতির একটি প্রধান বাহন হল প্রশ্ন-উত্তর। সক্রেটিস প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমেই দার্শনিক আলোচনা চালিয়ে যেতেন। প্রথমে প্রতিপক্ষের জন্য যুক্তির ফাঁদ পাততেন এবং একের পর এক প্রশ্ন করতে থাকতেন। যতক্ষণ না প্রতিপক্ষ পরাজিত হয়ে নিজের ভুল স্বীকার করে নেয় ততক্ষণ প্রশ্ন চলতেই থাকত। সক্রেটিসের এই পদ্ধতির অপর নাম সক্রেটিসের শ্লেষ (Socratic irony)।

অপরীক্ষিত জীবন নিয়ে বেঁচে থাকা গ্লানিকর।
পোশাক হল বাইরের আবরণ, মানুষের আসল সৌন্দর্য হচ্ছে তার জ্ঞান।
নিজেকে জানো।
জ্ঞানের শিক্ষকের কাজ হচ্ছে কোনো ব্যক্তিকে প্রশ্ন করে তার কাছ থেকে উত্তর জেনে দেখানো যে জ্ঞানটা তার মধ্যেই ছিল।
পৃথিবীতে শুধুমাত্র একটি-ই ভালো আছে, জ্ঞান। আর একটি-ই খারাপ আছে, অজ্ঞতা।
আমি কাউকে কিছু শিক্ষা দিতে পারবনা, আমি শুধু তাদের চিন্তা করাতে পারব।
বিস্ময় হল জ্ঞানের শুরু।
টাকার বিনিময়ে শিক্ষা অর্জনের চেয়ে অশিক্ষিত থাকা ভালো।
বন্ধু হচ্ছে দুটি হৃদয়ের একটি অভিন্ন মন।
প্রকৃত জ্ঞান নিজেকে জানার মধ্যে, অন্য কিছু জানার মধ্যে নয়।
তুমি কিছুই জানোনা এটা জানা-ই জ্ঞানের আসল মানে।
যাই হোক বিয়ে করো। তোমার স্ত্রী ভালো হলে তুমি হবে সুখী, আর খারাপ হলে হবে দার্শনিক।
ব্যস্ত জীবনের অনুর্বরতা সম্পর্কে সতর্ক থাকুন।
আমাদের প্রার্থনা হওয়া উচিত সাধারণের ভালোর জন্য। শুধু ঈশ্বরই জানেন কীসে আমাদের ভালো।
সত্যিকারের জ্ঞান আমাদের সবার কাছেই আসে, যখন আমরা বুঝতে পারি যে, আমরা আমাদের জীবন, আমাদের নিজেদের সম্পর্কে এবং আমাদের চারপাশে যা কিছু আছে তার সম্পর্কে কত কম জানি।
সেই সাহসী যে পালিয়ে না গিয়ে তার দায়িত্বে থাকে এবং শত্রুদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে।
নিজেকে উন্নয়নের জন্য অন্য মানুষের লেখালেখিতে কাজে লাগাও এই জন্য যে অন্য মানুষ কিসের জন্য কঠোর পরিশ্রম করে তা তুমি যাতে সহজেই বুঝতে পারো।
সুখ্যাতি অর্জনের উপায় হল তুমি কী হিসেবে আবির্ভূত হতে চাও তার উপক্রম হওয়া।
তুমি যা হতে চাও তা-ই হও।
কঠিন যুদ্ধেও সবার প্রতি দয়ালু হও।
শক্ত মন আলোচনা করে ধারণা নিয়ে, গড়পড়তা মন আলোচনা করে ঘটনা নিয়ে, দুর্বল মন মানুষ নিয়ে আলোচনা করে।
বন্ধুত্ব করো ধীরে ধীরে, কিন্তু যখন বন্ধুত্ব হবে এটা দৃঢ় করো এবং স্থায়ী করো।
মৃত্যুই হল মানুষের সর্বাপেক্ষা বড়ো আশীর্বাদ।

তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে