যক্ষ যুধিষ্টির সংবাদঃ যক্ষের ৩৪ মহাগুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর দিলেন যুধিষ্টি

0
1885

যক্ষ-যুধিষ্ঠির সংবাদ

যুধিষ্ঠিরকে মোট ৩৪’টি প্রশ্ন করেছিলেন যক্ষ । প্রতিটি প্রশ্নের ভাঁজে-ভাঁজে আবার আরো দুতিনটি করে প্রশ্ন ।

প্রশ্ন ১ : “কে সূর্যকে ঊর্ধ্বে ধরে রেখেছে ? কে সূর্যের চারিদিকে ভ্রমণ করে ? কোথায় তিনি প্রতিষ্ঠিত আছেন ?”
উত্তর ১ : “ব্রহ্মাই সূর্যকে উদিত করান । দেবগণই তাঁর পার্শ্বচর, ধর্মই সূর্যকে অস্তগমন করান । এবং সত্যেই তিনি প্রতিষ্ঠিত ।”

প্রশ্ন ২ : “ব্রাহ্মণ হয় কি প্রকারে ? মানুষ কিসে মহৎ পদ লাভ করে ? কিসে দ্বিতীয়বান্‌ হয় ? কিসে বুদ্ধিমান হয় ?”
উত্তর ২ : “বেদ অধ্যয়নেই ব্রাহ্মণ । তপস্যাতেই মহৎ পদ লাভ হয় । ধৈর্য মানুষকে সহায়বান্‌ দ্বিতীয়বান্‌ করে । জ্ঞানীব্যক্তির সেবার দ্বারাই মানুষ বুদ্ধিমান হয় ।”

প্রশ্ন ৩ : “ব্রাহ্মণের দেবত্ব কি ? কোন্‌ ধর্মের জন্য তাঁরা সাধু ? তাঁদের মনুষ্যভাব কি ? অসাধুভাব কেন হয় ?”
উত্তর ৩ : “স্বাধ্যায়ই ব্রাহ্মণের দেবত্ব । তপস্যার ফলে সাধুতা । মৃত্যু আছে তাই তাঁদের মনুষ্যভাব । পরনিন্দার ফলে তাঁরা অসাধু হন ।”

প্রশ্ন ৪ : ক্ষত্রিয়ের দেবত্ব কি ? তাঁদের ধর্ম কি ? কিসে তাঁদের মনুষ্যভাব ? তাঁদের অসাধুতা কি ?”
উত্তর ৪ : “অস্ত্রনিপুণতাই ক্ষত্রিয়ের দেবত্ব । যজ্ঞই তাঁদের সাধু ধর্ম । ভয়ই মনুষ্যভাব । শরণাগতকে পরিত্যাগই তাঁদের অসাধুভাব ।”

প্রশ্ন ৫ : “যজ্ঞিয় সাম কি ? যজ্ঞিয় যজুঃ কি ? যজ্ঞকে বরণ করে কি ? কি সেই, যাকে যজ্ঞ অতিক্রম করে না ?”
উত্তর ৫ : “প্রাণ যজ্ঞিয় সাম । মন যজ্ঞিয় যজুঃ । ঋক্‌মন্ত্র যজ্ঞকে বরণ করে । যজ্ঞ তাকে অতিক্রম করতে পারে না ।”

প্রশ্ন ৬ : “কৃষকের কাছে প্রধান কি ? বপনকারীর কাছে প্রধান কি ? প্রতিষ্ঠিত ধনীর কাছে শ্রেষ্ঠ কি ? জনকের কাছে প্রধান কি ?”
উত্তর ৬ : “কৃষকের কাছে বর্ষণ, রোপনকারীর কাছে বীজ, ধনীর কাছে গো-সম্পদ, সন্তানেচ্ছুর কাছে পুত্রই শ্রেষ্ঠ ।”

প্রশ্ন ৭ : “এমন ব্যক্তি কে আছে যে বুদ্ধিমান, সকলের সম্মানিত, বিষয়ভোগে নিরত, শ্বাস-প্রশ্বাস নিচ্ছে তথাপি জীবিত নয় ?”
উত্তর ৭ : “যে ব্যক্তি দেবতা, অতিথি, ভৃত্য, পিতৃপুরুষগণ এবং আত্মা – এই পঞ্চবিধকে দানাদি দিয়ে পোষণ করে না, সে জীবিত থেকেও মৃত ।”

প্রশ্ন ৮ : “পৃথিবীর অপেক্ষা গুরুতর কি ? আকাশের থেকে উচ্চতর, বায়ুর চেয়ে দ্রুততর এবং তৃণ অপেক্ষা বহুতর কি ?”
উত্তর ৮ : “মাতা পৃথিবী অপেক্ষা গুরুতর । পিতা আকাশ অপেক্ষা উচ্চতর । মন বায়ু অপেক্ষা দ্রুততর এবং চিন্তা তৃণ অপেক্ষা বহুতর ।”

প্রশ্ন ৯ : “তাকিয়ে ঘুমায় কে ? কে জন্মের পরেও নিস্পন্দ থাকে ? কার হৃদয় নেই ? বেগ দ্বারা কে বৃদ্ধি পায় ?”
উত্তর ৯ : “মৎস্য নিদ্রাকালেও চক্ষু মুদ্রিত করে না । অণ্ড প্রসূত হয়েও স্পন্দিত হয় না । পাষাণের হৃদয় নেই । নদী বেগে বৃদ্ধি পায় ।”

প্রশ্ন ১০ : “প্রবাসী, গৃহবাসী, আতুর ও মুমূর্ষু – এদের বন্ধু কে ?”
উত্তর ১০ : “প্রবাসীর মিত্র সহযাত্রী । গৃহবাসীর মিত্র ভার্যা । আতুরের মিত্র চিকিৎসক । মুমূর্ষুর মিত্র দান ।”

প্রশ্ন ১১ : “সকল প্রাণীর অতিথি কে ? সনাতন ধর্ম কি ? অমৃত কি ? জগতের স্বরূপ কি ?”
উত্তর ১১ : “সকল প্রাণীর অতিথি অগ্নি । অবিনাশী নিত্যধর্মই সনাতন ধর্ম । গো-দুগ্ধই অমৃত । বায়ু সর্বজগতের স্বরূপ ।”

প্রশ্ন ১২ : “একাকী কে বিচরণ করে ? জাত হয়েও আবার জন্মায় কে ? হিমের ঔষধ কি ? মহাক্ষেত্র কি ?”
উত্তর ১২ : “সূর্যই একাকী বিচরণ করেন । চন্দ্রমা পুনঃপুনঃ জন্মগ্রহণ করেন । অগ্নিই হিমের ঔষধ । এই পৃথিবীই মহাক্ষেত্র ।”

প্রশ্ন ১৩ : “ধর্মের, যশের, স্বর্গের ও সুখের মুখ্যস্থান কি ?”
উত্তর ১৩ : “ধর্মের মুখ্যস্থান দক্ষতা । যশের মুখ্যস্থান দান । সত্য স্বর্গের এবং চরিত্র সুখের মুখ্যস্থান ।”

প্রশ্ন ১৪ : “মনুষ্যের আত্মা কে ? দৈবকৃত সখা কে ? জীবনের সহায় কি ? পরম অবলম্বন কি ?”
উত্তর ১৪ : “পুত্রই মানুষের আত্মা । ভার্যাই দৈবকৃত সখা । মেঘ তার সহায় এবং দানই পরম অবলম্বন ।”

প্রশ্ন ১৫ : “উত্তম গুণ কি ? উত্তম ধন কি ? উত্তম লাভ কি ? উত্তম সুখ কি ?”
উত্তর ১৫ : “দক্ষতা উত্তম গুণ । বেদজ্ঞান উত্তম ধন । আরোগ্য উত্তম লাভ । অন্তরের সন্তোষ উত্তম সুখ ।”

প্রশ্ন ১৬ : “কোন্‌ ধর্ম শ্রেষ্ঠ ? কোন্‌ ধর্ম সদা ফলদায়ী ? কাকে সংযত করলে আর অনুশোচনা করতে হয় না ? কার দ্বারা সন্ধিভঙ্গ হয় না ?”
উত্তর ১৬ : “দয়া শ্রেষ্ঠ ধর্ম । বেদোক্ত ত্রয়ীধর্মই সদা ফলদায়ী । মনকে সংযত করলে আর অনুশোচনা করতে হয় না । সাধু ব্যক্তি দ্বারা সন্ধিভঙ্গ হয় না ।”

প্রশ্ন ১৭ : “কি ত্যাগ করলে লোকপ্রিয় হওয়া যায় ? কি ত্যাগ করলে শোক হয় না ? কি ত্যাগ করলে সুখী হয় ?”
উত্তর ১৭ : “অভিমান ত্যাগ করলে লোকপ্রিয় হওয়া যায় । ক্রোধ ত্যাগ করলে কখনও শোক করতে হয় না । কামনা ত্যাগ করলে লোকে সুখী হয় ।”

প্রশ্ন ১৮ : “ব্রাহ্মণকে, নট ও নর্তককে, ভৃত্য এবং রাজাকে কেন দান করা হয় ?”
উত্তর ১৮ : “ধর্মের জন্য ব্রাহ্মণকে, যশের জন্য নট ও নর্তককে, প্রতিপালনের জন্য ভৃত্যকে এবং ভয়ের জন্য রাজাকে দান করা হয় ।”

প্রশ্ন ১৯ : “জগৎ কি দিয়ে আবৃত ? কেন তা প্রকাশিত হয় না ? কিসের জন্য মানুষ মিত্রকে ত্যাগ করে ? কিসের জন্য মানুষ স্বর্গে যায় না ?”
উত্তর ১৯ : “অজ্ঞানের দ্বারা জগৎ আবৃত । তমোগুণের দ্বারা একে অপরকে প্রকাশিত করে না । লোভের বশে মানুষ মিত্রকে ত্যাগ করে । সংসার-আসক্তির জন্য মানুষ স্বর্গে যায় না ।”

প্রশ্ন ২০ : “কোন্‌ মানুষ, কোন্‌ রাষ্ট্র, কিরূপ শ্রাদ্ধ এবং কিরূপ যজ্ঞকে মৃত বলে ?”
উত্তর ২০ : “দরিদ্র মানুষ, অরাজক রাষ্ট্র, ব্রাহ্মণহীন শ্রাদ্ধ এবং দক্ষিণাবিহীন যজ্ঞকে মৃত বলে ।”

যক্ষের বোধহয় প্রশ্নবাণ শেষ হয়ে আসছে । তাই একটু থেমে জিজ্ঞাসা করলেন –

প্রশ্ন ২১ : “কাকে দিক্‌, কাকে উদক, কাকে অন্ন এবং কাকে বিষ বলে ? শ্রাদ্ধের কাল কি ? এই কথার উত্তর দিয়ে জলপান করতে পার ।”
উত্তর ২১ : “সাধুগণ দিক্‌, আকাশই জল, ধেনুই অন্ন, যাচ্‌ঞা বিষ । ব্রাহ্মণই হলেন শ্রাদ্ধের কাল ।

এই বলে যুধিষ্ঠির পাল্‌টা প্রশ্ন করলেন – “এবিষয়ে আপনি কি বলেন ?” উত্তর না দিয়ে যক্ষ আবার প্রশ্ন করলেন –

প্রশ্ন ২২ : “তপস্যার লক্ষণ কি ? দম কাকে বলে ? পরম ক্ষমা এবং পরম লজ্জা কি ?”
উত্তর ২২ : “স্বধর্মনিষ্ঠাই তপস্যা । মনের দমনই দম । দ্বন্দ্ব-সহিষ্ণুতাই ক্ষমা । অকার্য থেকে নিবৃত্ত হওয়ার নামই লজ্জা ।”

প্রশ্ন ২৩ : “জ্ঞান কি ? দয়া, শম, সরলতাই-বা কি ?”
উত্তর ২৩ : “আত্মতত্ত্বের অপরোক্ষ জ্ঞানই জ্ঞান । চিত্তের শান্তিই শম । সকলের সুখ ইচ্ছা করা দয়া এবং সমচিত্ততাই সরলতা ।”

প্রশ্ন ২৪ : “কোন্‌ শত্রু দুর্জয় ? কোন্‌ ব্যাধি অশেষ ? কে সাধু, কেই-বা অসাধু ?”
উত্তর ২৪ : “ক্রোধ দুর্জয় শত্রু । লোভ মানুষের অশেষ ব্যাধি । সর্বজীবের হিতাকাঙ্ক্ষী যিনি তিনিই সাধু । নির্দয় মানুষই অসাধু ।”

প্রশ্ন ২৫ : “রাজন্‌, মান মোহ আলস্য এবং শোক কাকে বলে ?”
উত্তর ২৫ : “ধর্মমূঢ়তাই মোহ । আত্মাভিমানই মান । ধর্মে নিষ্ক্রিয়তাই আলস্য । অজ্ঞানই শোক ।”

প্রশ্ন ২৬ : “ঋষিরা ধৈর্য, স্থৈর্য, পরম স্নান ও পরম দান কাকে বলেছেন ?”
উত্তর ২৬ : “স্বধর্মে স্থিরতা স্থৈর্য । ইন্দ্রিয়সংযম ধৈর্য । মনের মালিন্য ধুয়ে ফেলাই পরম স্নান । প্রাণীগণের রক্ষা পরম দান ।”

প্রশ্ন ২৭ : “পণ্ডিত, নাস্তিক, মূর্খ, কাম এবং মাৎসর্য কাকে বলে ?”
উত্তর ২৭ : “ধর্মজ্ঞ ব্যক্তিকে পণ্ডিত বলে । নাস্তিককে মূর্খ বলা হয় । সংসারের হেতু কাম । হৃদয়ের সন্তাপকে বলে মাৎসর্য ।”

প্রশ্ন ২৮ : “অহঙ্কার, দম্ভ, পরম দৈব এবং পৈশুন্য (খলতা) কাকে বলে ?”
উত্তর ২৮ : “অজ্ঞানকে অহঙ্কার বলে । নিজেকে অত্যন্ত ধার্মিক মনে করাই দম্ভ । দানের ফল পরম দৈব । অন্যের উপর দোষারোপ করাকেই পৈশুন্য বলে ।”

যক্ষ এবার তাঁর মোক্ষম প্রশ্নটি ছুড়লেন –

প্রশ্ন ২৯ : “ধর্ম অর্থ কাম এরা পরস্পর বিরোধী । নিত্য বিরোধী এই তিনের একত্র অবস্থান কি সম্ভব ?”
উত্তর ২৯ : “যখন ধর্ম এবং ভার্যা পরস্পর অবিরোধী হয় তখন সদা পরস্পর বিরোধী ধর্ম অর্থ কামের একত্র অবস্থা সম্ভব ।”

প্রশ্নটি যেমন জটিল এবং ব্যাপক, যুধিষ্ঠিরের উত্তরও তেমনি ঋজু এবং সরল । মহাভারতের মধ্যে ধর্ম-অর্থ-কাম-মোক্ষ এই চারটি তত্ত্বেরই সমন্বয় ও সিদ্ধির কথা বলা হয়েছে [আদিপর্ব|১|৮৫] অতএব যক্ষের এই প্রশ্নটি মহাভারতের অন্যতম মূল প্রশ্নেরই এক গ্রন্থগ্রন্থি । (উভয়ভারতীর এমনি এক প্রশ্নের উত্তর দিতে সন্ন্যাসী শঙ্করাচার্যকে কিছু দিনের জন্য ফিরে যেতে হয়েছিল সংসারে ।) যুধিষ্ঠিরের এই সংক্ষিপ্ত উত্তরে যক্ষ বোধহয় অবাক হলেন । সঙ্গে সঙ্গে একটা পাল্‌টা প্রশ্ন ছুড়লেন । বলছেন, তাড়াতাড়ি উত্তর দাও –

প্রশ্ন ৩০ : “কে অক্ষয় নরকে গমন করে ?”
উত্তর ৩০ : “প্রার্থী দরিদ্র ব্রাহ্মণকে যে নিজেই ডেকে এনে পরে ‘নেই’ বলে ফিরিয়ে দেয় সেই অক্ষয় নরকে যায় । ধর্মশাস্ত্র বেদ ব্রাহ্মণ দেবতা ও পিতৃপুরুষদের প্রতি যে মন্দবুদ্ধি রাখে সেই অক্ষয় নরকে যায় । অর্থ থাকতেও যে দান করে না, দানযোগ্য ব্রাহ্মণকে দেয় না, স্ত্রীপুত্রদের দেবার সময় ‘নেই’ বলে প্রত্যাখ্যান করে, সেই অক্ষয় নরকে যায় ।”

প্রশ্ন ৩১ : “কুল, সদাচার, স্বাধ্যায় এবং শাস্ত্রশ্রবণ – এর মধ্যে কোন্‌টির দ্বারা উত্তম ব্রাহ্মণত্ব লাভ হয় ?”
উত্তর ৩১ : “কুল, স্বাধ্যায়, শাস্ত্রশ্রবণ এর কোনটাই উত্তম ব্রাহ্মণত্বের কারণ নয় । ব্রাহ্মণোচিত বৃত্তির আচরণেই উত্তম ব্রাহ্মণত্ব লাভ হয় । চারি বেদে পারদর্শী হয়েও যে ব্রাহ্মণ দুরাচারী সে শূদ্রের অধম । আবার বিদ্বান্‌ না হয়েও যিনি ব্রতপরায়ণ, দমগুণসম্পন্ন তিনিই ব্রাহ্মণ ।”

প্রশ্ন ৩২ : “মিষ্টভাষী, বিচার-বিবেচনা করে যিনি কাজ করেন, যিনি বহু মিত্রকারী ধর্মপরায়ণ তিনি কি লাভ করেন ?”
উত্তর ৩২ : “মিষ্টভাষী সকলের প্রিয় হন । ভেবেচিন্তে যিনি কাজ করেন তিনি বেশী সাফল্য লাভ করেন । বহু মিত্রকারী সুখী হন । আর ধর্মপরায়ণ ব্যক্তি সদ্‌গতি লাভ করেন ।”

এবার যক্ষ নিক্ষেপ করলেন তাঁর চতুর্মুখী এক ভয়ঙ্কর গূঢ় প্রশ্ন –

প্রশ্ন ৩৩ : “সুখী কে ? আশ্চর্য কি ? পথ কি ? বার্তা কি ?”
উত্তর ৩৩ : “দিবসের পঞ্চম অথবা ষষ্ঠভাগে (সন্ধ্যায়) নিজের গৃহে বসে যে শাকান্ন আহার করে, যে অঋণী অপ্রবাসী, সেই সুখী ।
প্রতিদিন মানুষের মৃত্যু হচ্ছে দেখেও মানুষ চিরকাল বেঁচে থাকতে চায়, এর চেয়ে আশ্চর্য আর কি আছে ?
তর্কের শেষ নেই, শ্রুতিসমূহও বিভিন্ন, এমন মুনি নেই যাঁর মত ভিন্ন নয়, তার কোনটাই একমাত্র প্রমাণ বলে গণ্য নয়, সুতরাং ধর্মের তত্ত্ব গুহায় নিহিত । তাহলে মহাজন যে পথে গেছেন তাঁদের পথই একমাত্র পথ ।
এই মহামোহরূপ কটাহে মহাকাল প্রাণসমূহকে পাক করছেন । সূর্য তার অগ্নি, রাত্রিদিন তার ইন্ধন, মাস ঋতু তার আলোড়নের দর্বী (হাতা), এই হল বার্তা ।”

যক্ষ সন্তুষ্ট হয়ে বললেন, তুমি আমার প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দিয়েছ । এখন বল –

প্রশ্ন ৩৪ : “পুরুষ কে ? সর্বধনেশ্বর কে ?”
উত্তর ৩৪ : “পুণ্যকর্মের যশোগৌরব পৃথিবী ও স্বর্গ স্পর্শ করে, যতকাল সেই গৌরববাণী থাকে ততকালই লোকে পুরুষ বলে গণ্য হয় । প্রিয়-অপ্রিয়, সুখ-দুঃখ, অতীত-ভবিষ্যৎ যিনি তুল্যজ্ঞান করেন তিনিই সর্বধনেশ্বর ।”

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে