আশফাক স্যার,দেহে প্রাণ থাকতে ভুলা যাবেনা যার নাম

0
109

জন্মের পর দেশটিতে বাস করতে করতে বয়স ৩৩ পেরোল।চাকরির পরীক্ষা যেমন দিয়েছি, পরীক্ষার ফল বের হতেও দেখেছি,অনিয়ম হতেও দেখেছি অহরহ।তবে আজ এই বেলায় বলতে হয় জীবনে অন্তত একটি স্বচ্ছ নিয়োগ দেখে এই প্রিয় ভূমি থেকে বিদায় নিতে পারবো। সেটা চিরদিন হৃদয় পটে অমলিন হয়ে থাকবে।আর সেই নিয়োগটি হচ্ছে এনটিআরসিএর দ্বিতীয় চক্রের নিয়োগ প্রক্রিয়া। বলতেই হয় “ আশফাক স্যার, দেহে প্রাণ থাকতে ভুলা যাবেনা আপনার নাম।” জন্মদাতা মা বাবার পরে পৃথিবীতে যদি কোন রিযিক দাতা থেকে থাকে, তিনি হচ্ছেন আপনি।আপনি যে দুঃ স্বাহসিকতা দিয়ে সততার মাধ্যমে মৃত প্রায় এনটিআরসিএ কে পুনর্জীবন দিয়েছিলেন,সরকারের মুখকে করেছিলেন উজ্বল, সাথে ৪০০০০ মেধাবী শিক্ষককে পৃথীবিতে বাঁচার অবম্বন করে দিয়েছেন সেটা পৃথিবীতে বিরল।এই ৪০ হাজার প্রাণ তথা তাদের পরিবারবর্গ ক্ষণিকের জন্যও ভুলবেনা আপনাকে।আমি বর্তমানে সিলেটের প্রাণকেন্দ্রে একটি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা করছি কেবল আপনার স্বচ্ছ নিয়োগ প্রক্রিয়ার জন্য।জীবনে আপনাকে দেখার সৌভাগ্য হয়নি একবারো।একবার দেখা হলে আপনাকে পা ছুঁয়ে সালাম করতাম নিমিষে।দেশ সেরা শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত সাবজেক্ট নিয়ে পড়া লেখা করেও যখন বেকারত্বের ঘানি টানছিলাম,সিলেটরই অনেক বিদ্যালয়ে পরীক্ষা দিয়ে, ভাইভা দিয়ে প্রথম হয়েও বার বার যখন অদৃশ্য ইশারায় নিয়োগ বঞ্চিত থেকে ছিলাম তখনই আপনি এলেন সাক্ষাত রিযিক মঞ্জুরক হিসেবে।আপনাকে ভুলে থাকা দেহে প্রাণ থাকতে কোনদিন,কোন মুহুর্তই সম্ভব নয়।আমার স্ত্রী, পুত্র সহ আমি চিরদিনই আপনার কাছে ঋণী।সৃজনশীল ট্রেনিং এ গিয়ে যখন দেখলাম আমার অনেক সহকর্মী আমার নিয়োগকৃত বিদ্যাপীঠটিতে নিয়োগ নিতে পারেনি কেবল তাদের নাম্বার আমার থেকে কম থাকার কারনে তখন বুঝতে বাকি থাকেনা এটা আপনার সততার ফসল,যা জীবনে প্রথম মেধার মূল্যায়ন হিসেবে পেলাম।ঠিক এভাবে যদি প্রতিটি ক্ষেত্রে মেধার মূল্যায়ন হতো তাহলে মেধাবীরা আর এদেশ ছেড়ে বিদেশ পাড়ি দিতোনা কোন দিন।আপনাকে হাজারো সালাম হে প্রিয় আশফাক স্যার। আপনার বিদায় তথা অবসরের কথার শোনার পর থেকেই এই দেহটা মুশরে উঠছে বার বার এই ভেবে যে এই দেশে আরেক আশফাক জীবদদশায় আর দেখা মিলবে কিনা।প্রায় অসম্ভবই হবে।

তবু সময়ের ফ্রেমে আপনাকে বেঁধে রাখা যাবেনা জানি।আপনি বিদায় নেন সমস্যা নেই তবে পরম প্রভুর কাছে আকুল আবেদন আপনি যতদিন এই ধরায় বেঁচে থাকেন যেনো আপনার শেষ জীবনের প্রতিটা মুহুর্ত সুন্দর সুস্থ সময় কাটাতে পারেন।এটা আমার আপনার জন্য শেষ কামনা।

লেখক
জীবন কৃষ্ণ সরকার
প্রগতি উচ্চ বিদ্যালয়,সিলেট।
সভাপতি,হাওর সাহিত্য উন্নয়ন সংস্থা(হাসুস) বাংলাদেশ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে