আকাশ সরকারের কবিতা।।

0
256

আকাশ সরকার ২০০৪ সালের ১০ ই জুলাই সুনামগঞ্জ জেলার ঢুলপুষি গ্রামে জন্মগ্রহন করে।তার পিতার নাম সুরেশ সরকার, মাতা গীতা রাণী সরকার। আকাশ ২০১৪ সালে ঢুলপুষি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করে। ২০১৭ সালে বংশীকুন্ডা মমিন উচ্চ বিদ্যালয় থেকে কৃতিত্বের সাথে জে এস সি পরীক্ষায় উর্তীন্ন হয়।জে এস সি পাশ করার পর তার পড়া লেখা আর এগোয়নি।২০১৩ সাল থেকেই সাহিত্যের প্রতি আকাশের প্রবল আগ্রহ জাগে।তার প্রথম কবিতা ” মহানায়ক ” আকাশের কাব্যিক জীবন সুন্দর ও সার্থক হোক, শুভ কামনা নিরন্তর।
মহানায়ক

আকাশ সরকার

চারিদিকে শুনা যায় হাহাকার,
চারিদিকে শুধু অন্যায় অত্যাচার।
কারো সাহস নেই বিদ্রোহ করার,
সবাই সহ্য করছে এই অবিচার।
হানা দিচ্ছে হানাদার,
সবকিছু করে দিচ্ছে চুরমার।
বায়ু অগ্নি আকাশের সমস্ত তারাকে সাক্ষী রেখে,
এমন এক বীর সন্তান জন্ম নিয়েছিল ধরণীর বুকে।
ধরণীতল সিক্ত করে জন্ম নিয়েছিল এমন এক শিশু,
তার তেজ দেখে মনে হয় আকাশের দিবাবসু।
চোখ দুটো ছিল তার অগ্নি বিন্দু,
হৃদয় ছিল তার বিশাল সিন্ধু।
তার হুংকার শুনে মনে হয় কেশরী,
তার ভয়ে পালিয়েছিল সমস্ত অরি।
যার মুখ গহ্বর থেকে নির্গত হয়েছিল বিদ্রোহের ভাষা,
তাকে দেখে সবাই ফিরে পায় বেঁচে থাকার আশা।
তিনি হলেন মহা নায়ক মহান নেতা,
বাঙালি জাতির পিতা।
যিনি রেখে গেছেন বাংলা ভাষার মান,
তিনি হলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।

আমার জন্মভূমি
আকাশ সরকার

তুমি আমায় বেধেছ মায়ার ডোরে,
আমি তোমায় কোনদিন যাব না ছেড়ে।
তোমার কোলে জন্ম আমার মরণ তোমার বুকে,
চিরদিন থাকব আমি তোমার সুখে দুখে।
তোমার চারিপাশ সুজলা সুফলা শস্য শ্যামলা,
তুমি মায়াময়ী রুপসী বাংলা।
যেথায় বিলে ঝিলে শাপলা ফুটে রাশি রাশি,
যেথায় দেখা মিলে কাশফুলের অপরুপ হাঁসি।
যেথায় তেরোশত নদী,
বয়ে চলে নিরবধি।
আমার জন্মভূমির মায়াময় প্রকৃতি,
আমার জন্মভূমি আমার অনিত্রী।
আমি দেখেছি আমার জন্মভূমি বাংলা মায়ের মুখ,
ভুলে গিয়ে সব দুখ পেয়েছি স্বর্গ সুখ।
তোমার রুপের নেইত কোনো শেষ,
তুমি আমার জন্মভূমি মাতৃভূমি বাংলাদেশ।

ঢুলপুষি
আকাশ সরকার

আমি গর্বিত আমার গ্রামের জন্য,
তৃষ্ণায় দিয়েছে জল ক্ষুধায় দিয়েছে অন্ন।
আমি গর্বিত আমার গ্রামের লাগিয়া,
আমায় দিয়েছে মায়ের আদর স্নেহ মায়া।
আমি গর্বিত আমার গ্রামকে নিয়ে,
বট বৃক্ষের ছায়া দিয়ে রেখেছে জরিয়ে।
আমার গ্রামের মাটির বুকে মাথা রাখিলে,
মনে হয় যেন শুয়ে আছি মায়ের কোলে।
আমার প্রাণের থেকেও প্রিয় আমার গ্রামের মাটি,
জীবন দিয়ে হলেও রাখিব খাটি।
যে গ্রামে সোনালি ধান ফলে রাশি রাশি,
সেই গ্রামের নাম ঢুলপুষি।
যে গ্রামে মিলেমিশে থাকে পাড়া প্রতিবেশি,
সেই গ্রামের নাম ঢুলপুষি।
যে গ্রামে সবাই থাকে হাঁসি খুশি,
সেই গ্রামের নাম ঢুলপুষি।

গরিবের সম্মান
আকাশ সরকার

গায়ের মোড়ল রহমান,
কাউকে করে না সম্মান।
মোড়ল ডাকিয়া বলিল এই রহিম চাষা,
তর আবার কিসের আশা।
তুই হলি গরীব তর কিসের সম্মান,
তর সম্মান আমার জুতোর সমান।
আমি এই গায়ের মোড়ল রহমান ,
সবাই আমায় করে সম্মান।
আমি ধনী বলে,
সবাই আমার কথা মেনে চলে।
রহিম চাষা বলিল শুনুন মোড়ল মশাই,
আপনি এক কসাই।
আপনি এক বিষধর ভুজঙ্গ,
চুষে খান গরিবের অঙ্গ।
আপনার ক্ষেত ভরা ধান ফলায় গরিব চাষী,
তাই আপনার মুখে এত হাঁসি।
আপনার গোয়াল ভরা গরু চড়ায় গরীব রাখাল,
তাই আপনার দই দুধের কপাল।
আপনার এই দালান কৌটা,
বানিয়েছে কোনো গরীব মিস্ত্রির হাতুড়িটা।
মোড়ল মশাই আমরা নই চড়াই,
করিনা অন্যের বড়াই।
খেলবেন না নিয়ে গরীবের মান,
দিবেন গরীবের প্রাপ্প সম্মান।

শারদ প্রভাত
আকাশ সরকার

কে গো তুমি শিউলি ফুলে,
ঋতুর রাণী শরৎ বলে মাথা দোলে।
ঐ যে দেখা যায় উর্ধ্ব গগণে,
বৃষ্টি হীন বারিদ ভেসে ভেড়ায় গোধূলি লগণে।
কাশফুল দিয়ে কুন্তলের কোপার মাঝে,
কে গো তুমি সেঝেছ অপরূপ সাঝে।
শিশিরের মুক্তো দানা ঝলমল করে দূর্বাঘাসে,
কাশফুল দোলে মৃদু বাতাসে।
মাঠে মাঠে দেখা মিলে ধবলের খেলা,
গগণে ঘুরে বেড়ায় কালো বারিদের ভেলা।
শারদ প্রভাতে শিশির ভেজা শেফালী ফুল,
শৈবালিণীর কূল ঘেষে ফুটে অজস্র কাশফুল।
শারদীয় গগণে মিটি মিটি জ্বলে তারা,
মন চায় একটি তারা ধরে আনি যায় না তারে ধরা।
চারিদিকে কিরণ ছড়ায় শারদীয় ইন্দু,
গুড়ি গুড়ি হয়ে ঝড়ে শিশির বিন্দু।
মনে হয় স্বর্গ সুখ এসে নামে ধরাতে,
শারদ এই প্রভাতে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে