রকক্কুয়াল-সজলকান্তি সরকার

0
154

রাক্কুয়াল
======
সজলকান্তি সরকার
আব্বা,
আমার জন্য একটা জাম্পার কিন্যিও,
মেলা শীত পড়ছে, ঠান্ডা লাগে।
বিআনে যখন গরু লইয়া মাঠে যাই,
শীতে কাপনি উডে,
উশে পাউ তবদা অইয়া যায়।
গিরস্তের পাতলা গামছায় শীত মানে না।
বেন্যিয়াবালা পান্তাভাত খাইলে পেটের ভিতরে শীত আটকিয়া মুচুর মারে।
রইদে হগলের গাউ গরম হয় আমার দাঁতকাঁপনি ছাড়ে না।
মুক্তিকান্দায় এখন আর আগের মত ঘাস নাই,
গরু লইয়া মানাই গাঙ পার হইয়া কইজুরা কান্দায় যাইতে হয়।
আর মনাই গাঙের ডাইয়া পানিতে
কাল্যিয়া দামার লেঙুরও ধইরা
লেংডা অইয়া যখন হাতার দেই,
শীতে তখন শইল জিলিঙ্গা লাগে।
মাথায় বান্ধা হাপ্যান্ড-গামছাও ভিজ্যিয়া যায়।
আব্বা?
আমার জন্য একটা মুডাহুতার হুলআতা লাল জাম্পার কিন্যিও।
যাতে শীতের বাপেও না পায়।
রাইতে ঘুমাইলে পাতলা খেতায় শীত মানে না।
মাজন বাড়ির আলগঘরে চকিতে জাগা নাই।
কামলারা ঘুমায়।
আমি মাডিতে চাডি পাত্যিয়া হুতি।
হাঞ্জা-হতা ঠেলাজালি দিয়া ইছা মাছ মারতে হয়।
পশ্চ্যিয়াল বাতাস তখন বুক্যের ভিতরে ডুক্কিয়া যায়।
যেনই যাই শীতে খালি আমারে তাউরায়।
জান আব্বা?
জব্বাইরা একটা জাম্পার কিনছে ছুডুমুডু!
শীত মানে না।
হিন্দুপাড়ার কাঞ্চৈন্যা কিনছে একটা
লিলাম্যিয়া পাতলা গিলাপ।
আর মদনায় ত রাক্কুয়ালের ইজ্জতেই মারছে!
হে গাউ দেয় একটা-
ছিরাভিরা বুক উদলা বিলাতি কোট।
হগলে তারে লইয়া, খাউরি খায় আর হাসে।
আব্বা?
আমার জাম্পারডা সুন্দর দেক্কিয়া কিন্যিও?
সমস্যা কিতা?
এইবার ত বেতন বাড়ছে।
মা’র লাগ্যিয়াও একটা কাডিগান কিন্যিও।
মাজন ত কইছে কাইল বেতনের অগ্রিম দিব, একমণ ধান।
ও আব্বা? তুমি কইও দুইমণ দিতে।
আমি ত এখন আর খালি রাক্কুয়াল না?
কামলার কামও করি।
চিন্তা কইর না আব্বা।
সামনে বছর কামলা বদ্দ অইয়াম!
বেতনও বাড়ব।
তখন তোমার লাগ্যিয়া একটা সুন্দর দেক্কিয়া সেগাঢ় গিলাপ কিন্যিয়া দিয়াম।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে