নির্বাচনী দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদের করণীয়

0
189

নির্বাচনী দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদের করণীয়

১। নির্বাচনী কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পাওয়ার পর থেকে আপনি কখনো কোন চা-স্টলে বা উন্মোক্ত আড্ডায় কোন দলের সমর্থনে ক্যাম্পেইন করতে পারবেননা।
২। নির্বাচনের দিন নির্ধারিত সেন্টারে, নির্ধারিত বুথে কোন দলের সমর্থনে কাউকে ভোট দিতে প্ররোচিত করতে পারবেননা।
৩। কোনক্রমেই কাউকে ভোট দিতে আপনি নিজে গোপন কক্ষে নিয়ে যেতে পারবেননা।
৪। প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের সাথে ভালো ব্যবহার করুন এবং তাদেরক সার্বক্ষণিক গতিবিধি খেয়াল রাখুন।
৫। কোন প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের কোনক্রমেই গোপন কক্ষে যেতে দিবেননা।
৬। ভোটের শুরুতে স্বচ্ছ ব্যলটবাক্স প্রার্থীর এজেন্টদের দেখান এবং কোন প্রকার পূর্ব ভোট দেয়া হয়নি মর্মে তাদের স্বাক্ষর নিন। ইভিএম মেসিনে ভোট হলে ভোটের শুরুতে অটো প্রিন্টেড কপি যেটাতে ভোট শূন্য শূন্য দেখাবে সেটাতে প্রার্থীর পোলিং এজেন্টদের স্বাক্ষর নিন।
৭। ভোট কক্ষে কোন ক্রমেই কোন প্রার্থীর একের অধিক পোলিং এজেন্ট রাখা যাবেনা।
৮। ভোটার, পোলিং এজেন্ট, প্রিজাইডিং অফিসার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কর্মকর্তা, নির্বাচনী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ব্যতীত অন্য কোন বহিরাগতকে কোনক্রমেই ভোট কক্ষে প্রবেশ বা খবরদারি করতে দিবেননা।
৯। কিছুক্ষণ পর পর বুথের সামনের সারিতে দাঁড়ানো ভোটারদের স্মার্ট কার্ড, এনআইডি বা ভোটার নং সাথে এনেছে কিনা তা খোঁজনিন। এতে কেউ এসব জিনিস সাথে না রাখলে খুব দ্রুতই তা সংগ্রহ করতে পারবে।
১০। ভোটারের সাথে কখনই উগ্র ব্যবহার করা যাবেনা। সর্বাবস্থায় মার্জিত ব্যবহার করুন।
১১। একবার ভোট দিলে কেউ তাকে কালি দ্বারা চিহ্নিত করুন এবং দ্বিতীয়বার আর তাকে ভোট কক্ষে ঢুকতে দিবেননা।
১২। প্রিজাইডিং অফিসার সহ নির্বাচনী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাতের নাম্বার সাথে রাখুন, প্রয়োজনে তাদের দ্রুত ফোন দিন।
১৩। নির্বাচনের আগের দিন ভোট কক্ষ পরিস্কার পরিচ্ছন্ন করা, গোপন কক্ষ তৈরি করা সহ প্রয়োজনীয় সকল প্রস্তুতি সেরে ফেলুন।
১৪। ভোটের আগের দিন ভোট সেন্টারে সকল প্রস্তুতি নিয়ে অবস্থান করুন।
১৫। কোনক্রমেই ভোটকক্ষে অবস্থানকালে কোন রাজনৈতিক দলের চা,নাস্তা বা কোন প্রকার আপ্যায়ন গ্রহণ করবেননা।
১৬। নির্বাচনী কর্মকর্তা হিসেবে আপনার সাথে এক কপি পাসপোর্ট সাইজের ছবি ও ন্যাশনাল আইডি সাথে রাখুন না হলে যেকোন সময় রিটার্নিং কর্রকর্তা এসে আপনাকে বহিষ্কার করতে পারে।
১৭। যিনি ভোট দিবেন, ভোটার লিস্টে তার আঙ্গুলের ছাপ রাখুন, এগুলো ভুল করলে দায়িত্বে অবহেলা বিবেচনা করা হবে।
১৮। প্রার্থীর এজেন্টদের হাতে কোন মোবাইল এলাউ করবেননা, নাহলে হঠাৎ ফোন করে দলবল প্রবেশ করিয়ে আপনার সাথে রাফ আচরণ প্রদর্শন করতে পারে।

ইভিএম মেসিনে নির্বাচন হলে

১৯। ট্রেনিংকালে ইভিএম মেসিনের ব্যবহার ট্রেইনারের থেকে ভালোভাবে শিখে রাখুন।
২০। ভোটের আগের দিন ভোটকেন্দ্রে মেসিন বুঝে নিন, মেসিনের ব্যাটারী চার্জ দিয়ে রাখুন এবং মেসিন সচল বা ঠিক আছে কিনা তা বার বার যাচাই করুন।
২১। মেসিনের কোন ত্রুটি ধরা পরলে সাথে সাথে পরিবর্তন করে ব্যাকআপ মেসিন ব্যবহার করুন।
২২।আপনার প্রিজাইডিং অফিসার বা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এবং সহ প্রিজাইডিং অফিসার, পোলিং অফিসারদের সাথে ফোনে এবং সরাসরি সাক্ষাত করুন, প্রয়োজনে তাদের সাথে রাখুন।
২৩৷ নির্বাচনের দিন সকাল ৭ টার ভেতর ইভিএম মেসিন সেটিং সম্পন্ন করুন।
২৪। ইভিএম এর সাথে সংযুক্ত ডেস্কটপ মনিটরটি প্রার্থীদের এজেন্টদের সামনে রাখুন যাতে তারা স্পষ্ট দেখতে পায় তা নিশ্চিত করুন।
২৫। ভোটের শুরুতে থার্মাল পেপারটি প্রিন্ট হলে তাতে প্রার্থীর এজেন্টদের স্বাক্ষর নিন।
২৬। কখনোই কক্ষ ভিত্তিক ফল প্রিন্ট করবেননা।
২৭। ভোটারের সহযোগিতার জন্য একটি ব্যালট ইউনিটের ছবির সহায়তায় ভোটারদের কিভাবে ভোট দিতে হবে, যেমন পছন্দের প্রার্থীর ডান দিকের বোতামে চাপ দিয়ে নিচের সবুজ বোতামে চাপ দিয়ে ভোট নিশ্চিত করতে হয় তা বুঝিয়ে দিন।
২৮। ইভিএম মেসিন অন করার জন্য নির্ধারিত বোতামে প্রায় ১০ সেকেন্ড চাপ দিয়ে রাখুন, মেসিন অন হয়ে যাবে।
২৯। মেসিন পুরোপুরি চালু হবার জন্য প্রথমেই অডিট কার্ড লাগবে। অডিট কার্ড কেবল প্রিজাইডিং অফিসারের কাছেই থাকে, তাই দ্রুত তার হেল্প নিন।
৩০। মেসিন অন হবার পর সহকারি প্রিজাইডিং এর ফিঙারপ্রিন্ট লাগবে। সহকারি প্রিজাইডিং এর ফিঙার সেট করবেন প্রিজাইডিং অফিসার। সহকারি প্রিজাইডিং অফিসারের ফিঙার দেবার পর বুথ সিলেকশন করুন।
৩১। বুথ সিলেকশন হবার পর ভোটার তথ্য আপলোড করুন। তার পূর্বে পোলিং কার্ড ও এসডি কার্ড প্রবেশ করান। তাহলেই কেবল সকল তথ্য আপলোড হবে।
৩২। মেসিন অন করার প্রতিটি ধাপে ক্রমানুসারে, পিন নাম্বার, পাসওয়ার্ড, লাস্ট পাসওয়ার্ড চাইবে। তাই গুলো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণের থেকে সংগ্রহে রাখুন।
৩৩। ভোট শুরুর পর কোন কারণে ভোটকেন্দ্রে মারামারি, হাঙ্গামার উপক্রম দেখলে সঙ্গে সঙ্গে পোলিং কার্ড এবং এসডি কার্ড নিজের সংরক্ষণে রাখুন যাতে পরবর্তিতে ভোট শুরু হলে তা আবার ব্যবহার করা যায়।
৩৪। ভোটার চিহ্নিত করতে স্মার্টকার্ড, এনআইডি নাম্বার, ফিঙ্গার ব্যবহার করুন।
৩৫। ভোটার আইডি কার্ড,এনআইডি নাম্বার, সিরিয়াল নাম্বার কেউ না আনলে অযথা তর্কের দরকার নেই, শুধুমাত্র ফিঙ্গার দিয়ে সহজে তার ভোটকার্য সম্পাদন করুন।
৩৬। ভোট কক্ষের সামনে ভোটার ক্রমিক, পুরুষ,মহিলা চিহ্নিত করুন।
৩৭। ভোটারকে জানিয়ে দিন একজন সর্বোচ্চ তিনবার ভোট চেঞ্জ করতে পারবে, তবে সবুজ বাটনে চাপ দেবার পর আর চেঞ্জ করতে পারবেনা।
৩৮। নির্দিষ্ট সময় পর ভোট শেষ বাটনে চাপ দিয়ে ভোট শেষ করুন।
৩৯। ভোট শেষে মেসিনের সকল সেটিং খুলুন তবে পোলিং কার্ড সহ প্রিজাইডিং অফিসারের কাছে জমা দিন।
৪০। প্রিজাইডিং অফিসার কন্ট্রোল ইউনিটে সকল ভোটের তথ্য নিবেন এবং ফলাফল প্রস্তুত করবেন।
৪১। ফলাফল প্রস্তুত হলে সর্বনিম্ন ৬ কপি প্রিন্ট করে প্রার্থীর এজেন্ট,পুলিশ, গণমাধ্যম কর্মীদের দিন এবং রেজাল্টের বস্তায় ভিতরে রেখে সিলগালা করুন।
৪২। ভোটের নিমিত্তে প্রেরিত সকল অর্থের খরচ ব্যয় হিসেব করুন, নির্বাচনে দািয়ত্বরত সকল অফিসারদের তাদের সম্মানি যথাসময়ে বুঝিয়ে দিন।
৪৩। নির্বাচন শেষে অতিরিক্ত অর্থ বেঁচে গেলে তা নির্বাচন কমিশনে ঠেরত দিন।
৪৪। ভোটের আগের দিন ভোটের মেসিন, সরঞ্জামাদি সংগ্রহ ও জমাদানের সময় পুলিশ এবং আনসার সদস্যদের সহায়তা নিন।
৪৫। ভোট সেন্টারের নিরাপত্তার জন্য সার্বিক অবস্থায় পুলিশের সহায়তা এবং পরামর্শ নিন।
৪৬। ভোটের সকল জিনিসপত্র নির্বাচন কমিশনে বুঝিয়ে দিন এবং তারপর বিদায় নিন।

তথ্যসূত্র : নির্বাচনী দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারদের ট্রেনিংসেশন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে