হরিচাঁদ ঠাকুর কে
হরিচাঁদ ঠাকুর (১১ মার্চ ১৮১২ – ৫ মার্চ ১৮৭৮) মতুয়া সম্প্রদায়ের প্রবর্তক ছিলেন। তিনি সমাজের পিছিয়ে পড়া নিম্নশ্রেণির অথবা,দলিত মানুষের উন্নয়নে কাজ করেছেন।
শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর ১৮১২ খ্রিষ্টাব্দের ১১ই মার্চ অবিভক্ত বাংলার গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানী থানার অন্তর্গত ওড়াকাঁন্দির পার্শ্ববর্তী সাফলাডাঙ্গা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। তার মাতা-পিতার নাম অন্নপূর্ণা বৈরাগী ও যশোমন্ত বৈরাগী। তার প্রতিষ্ঠানিক শিক্ষা সেভাবে হয়নি, কিন্তু প্রেম-ভক্তির কথা সহজ-সরলভাবে প্রচার করতেন। বৈষ্ণব বাড়িতে জন্ম হওয়ার কারণে শাস্ত্র আলোচনার মাধ্যমে হিন্দু ও বৌদ্ধ শাস্ত্রের সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করেন, বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান করার সুযোগে অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান অর্জন করেছিলেন তিনি।তার প্রচলিত সাধন পদ্ধতিকে বলা হতো মতুয়াবাদ। তার দুই ছেলে গুরুচাঁদ ঠাকুর ও উমাচরণ। গুরুচাঁদ ঠাকুরের পিতা শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের মৃত্যুর পর মতুয়া ধর্মের উন্নতিসাধন, শিক্ষার প্রসারে ব্রতী হয়েছিলেন। শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের জীবনী নিয়ে কবি রসরাজ তারক চন্দ্র সরকার শ্রীশ্রী হরিলীলামৃত নামক গ্রন্থটি রচনা করেন। শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুর কলি যুগের শ্রীবিষ্ণু’র একজন বিশেষ অবতার যা তার অনুসারিরা(ভক্তরা) সকলে বিশ্বাস করেন এবং তাকে বলা হয় পতিতপাবন।
গোপালগঞ্জ জেলার কাশিয়ানি উপজেলার ওড়াকাঁন্দি-তে হরিচাঁদ ঠাকুরের ঠাকুরবাড়ি অবস্থিত। স্থানটি গোবরা-কাশিয়ানী একক ডিজেল রেললাইনের ছোট বাহিরবাগ স্টেশন থেকে ৮ কিমি উত্তর-পূর্বে।
প্রতি বছর চৈত্র মাসের মধুকৃষ্ণা ত্রয়োদশী তিথীতে ঠাকুর বাড়িতে মহাবারুনি স্নান ও মতুয়া মহামেলা হয়। মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে পশ্চিমবঙ্গের বনগাঁর ঠাকুরনগর ঠাকুরবাড়ি ও মতুয়া ধাম বর্তমানে একটি গুরুত্বপূর্ণ তীর্থ কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে। মতুয়া ধাম ঠাকুরনগর রেলওয়ে স্টেশন থেকে ১ কিলোমিটারের মধ্যে অবস্থিত। প্রতিবছর চৈত্র মাসে মতুয়া সম্প্রদায়ের ধর্মগুরু শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ও তার কনিষ্ঠপুত্র শ্রী শ্রী গুরুচাঁদ ঠাকুরের আদর্শে মতুয়া ধামে মতুয়া মহামেলা বসে।
হরিচাঁদ ঠাকুর ১২৮৪ বঙ্গাব্দের (১৮৭৭ খ্রি:) ২৩ ফাল্গুনে মৃত্যুবরণ করেন।