উপনিষদ (সংস্কৃত: उपनिषद्) হিন্দুধর্মের এক বিশেষ ধরনের ধর্মগ্রন্থের সমষ্টি । এই বইগুলিতে হিন্দুধর্মের তাত্ত্বিক ভিত্তিটি আলোচিত হয়েছে । উপনিষদের অপর নাম বেদান্ত । ধর্মপ্রাণ হিন্দুরা বিশ্বাস করেন, উপনিষদ্গুলিতে সর্বোচ্চ সত্য স্রষ্টা বা ব্রহ্মের প্রকৃতি এবং মানুষের মোক্ষ বা আধ্যাত্মিক মুক্তি লাভের উপায় বর্ণিত হয়েছে । উপনিষদ্গুলি মূলত বেদ-পরবর্তী ব্রাহ্মণ ও আরণ্যক অংশের শেষ অংশে পাওয়া যায় । এগুলি প্রাচীনকালে গুরু-শিষ্য পরম্পরায় মুখে মুখে প্রচলিত ছিল।
উপনিষদ্ সাধারণভাবে “বেদান্ত” নামে অভিহিত হয়ে থাকে। এই শব্দটির অর্থ ব্যাখ্যাত হয় “বেদের শেষ অধ্যায়সমূহ বা শেষাংশ” হিসেবে। আবার বিকল্প একটি অর্থও করা হয়ে থাকে। সেটি হল “বেদের বিধেয় বা সর্বোচ্চ উদ্দেশ্য” এছাড়া উপনিষদ সংখ্যা হল ১০৮ টি তার মধ্যে বৈদিকভাবে প্রামাণিক উপনিষদ ১১টি এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ঐতরেয়, কঠ, কেন, ছান্দোগ্য, ঈশ, বৃহদারণ্যক, শ্বেতাশ্বতর, তৈত্তিরীয়, প্রশ্ন, মুণ্ডক, মাণ্ডূক্য উপনিষদ।ব্রহ্ম (পরম সত্য) ও আত্মা (ব্যক্তির অন্তর্নিহিত সত্ত্বা) উপনিষদের মূল উপজীব্য বিষয় এবং “তুমিই যে সেই আত্মা, তা জানা”ই হল গ্রন্থাবলির মূল বক্তব্য।’ঈশ্বরগীতা,’শিবগীতা,ভগবদ্গীতা ও ব্রহ্মসূত্রের সঙ্গে মুখ্য উপনিষদ্গুলি (এই তিন শাস্ত্র একত্রে প্রস্থানত্রয়ী নামে পরিচিত)পরবর্তীকালের একাধিক বৈদান্তিক দার্শনিক গোষ্ঠীর ভিত্তি স্থাপন করে। এগুলির মধ্যে হিন্দুধর্মের দু’টি প্রভাবশালী অদ্বয়বাদী ধারা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য।
ঐতিহাসিকদের মতে, মুখ্য উপনিষদ্গুলি প্রাক্-বৌদ্ধ যুগ থেকে শুরু করে খ্রিস্টীয় প্রথম সহস্রাব্দের প্রথমার্ধ্ব পর্যন্ত সুদীর্ঘ সময়কালের বিভিন্ন পর্বে রচিত হয়। অপর দিকে অপ্রধান উপনিষদগুলি মধ্যযুগ ও প্রাক্-আধুনিক যুগের রচনা।অবশ্য প্রতিটি উপনিষদের সঠিক রচনাকাল নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক রয়েছে। ব্রিটিশ কবি মার্টিন সেমোর-স্মিথ উপনিষদ্গুলিকে “সর্বকালের ১০০টি সবচেয়ে প্রভাবশালী বই”-এর তালিকাভুক্ত করেছেন।আর্থার শোপেনহাওয়ার, রালফ ওয়াল্ডো এমারসন ও হেনরি ডেভিড থোরো সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি উপনিষদ্গুলির গুরুত্ব স্বীকার করেছেন। গবেষকেরা উপনিষদের দর্শনের সঙ্গে প্লেটো ও কান্টের দর্শনের মিল খুঁজে পান।
উপনিষদ সংখ্যা হল ১০৮ টি তার মধ্যে বৈদিকভাবে প্রামাণিক উপনিষদ ১১টি এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল ঐতরেয়, কঠ, কেন, ছান্দোগ্য, ঈশ, বৃহদারণ্যক, শ্বেতাশ্বতর, তৈত্তিরীয়, প্রশ্ন, মুণ্ডক, মাণ্ডূক্য উপনিষদ।
(তথ্য সূত্রঃ উইকিপিডিয়া)