হাওর ও হাওরের জনমানুষের ভাগ্য উন্নয়নে হাওর মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই

0
142

হাওর ও হাওরের জনমানুষের ভাগ্য উন্নয়নে হাওর মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই

হাওর শব্দটি ‘সায়র’ শব্দ থেকে উৎপত্তি। হাওর বিষয়ক মুক্তকোষ ‘হাওরপিডিয়া’ থেকে যদ্দুর জানা যায় – হাওর হচ্ছে বিশাল গামলা আকৃতির জলাশয় যা ভূ-আলোড়নের ফলে সৃষ্টি হয় এবং সেখানে অনেক পানি জমে।বাংলাদেশের সাত জেলায় ছোটবড় মিলে প্রায় ৪১৪ টির মতো হাওর রয়েছে।হাওর গুলো বর্ষা এবং শুকনো মরশুম উভয় দিক থেকেই গুরুত্বপূর্ণ।এই হাওরপারে বসবাসকারিরা যুগ যুগ ধরে বঞ্চিত লাঞ্চিত সেটা প্রকৃতি এবং মানুষ দু -দিক থেকেই।তাই হাওর ও হাওরের জনমানুষের ভাগ্য উন্নয়নে পৃথক হাওর মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার কোন বিকল্প নেই।এ বিষয়ে নিচে বিস্তারিত তুলে ধরার প্রয়াস করা হলো।

এক. অর্থনৈতিক বিবেচনায়ঃ

অর্থনৈতিক বিবেচনায় হাওরগুলোর দেখভাল করার জন্য অবশ্যই পৃথক হাওর মন্ত্রনালয় জরুরী।কারণ এই হাওরগুলো থেকে শুকনো মরশুমে প্রচুর ধান উৎপন্ন হয় যা দেশের জাতীয় আয় তথা খাদ্য চাহিদা পূরণে ব্যাপক ভূমিকা রাখে। সরকারের Ministry Of Agriculture (MOA) ওয়েবসাইট www.moa.gov.bd এর তথ্য মতে হাওরবেষ্টিত সাত জেলা – সুনামগঞ্জ,হবিগঞ্জ,সিলেট,মৌলভীবাজার,কিশোরগঞ্জ,নেত্রকোণা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া মিলে প্রায় ৫ লাখ ৪৬ হাজার ৫৩৪ হেক্টর জমিতে বোরো চাষ হয় যা দেশের প্রায় ২০ ভাগ। আর হাওরে শুধু বোরো আবাদ হয় ৪ লাখ ৫১ হাজার ৭৭০ হেক্টর জমিতে যা মোট আবাদের ৯.২৫ শতাংশ।আর এসব জমি থেকে প্রতিবছর প্রায় ২ কোটি ৫/১০ লক্ষ মেট্রিক টন ধান উৎপন্ন হয় ।অপর দিকে এই হাওরগুলো থেকে শুকনো ও বর্ষা উভয় মরশুমেই মৎস্য শিকার করা যায়।
মৎস্য অধিদপ্তর ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের তথ্য থেকে জানা যায়, দেশের প্রায় ২০০ প্রজাতির মাছ হাওর অঞ্চলে পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৬৩ প্রকার বিপন্ন প্রজাতির মাছের দেখা মেলে হাওরগুলোতে। ২০১৫-১৬ অর্থবছরে দেশে বার্ষিক মাছ উৎপাদন হয় ৩৯ লাখ মেট্রিক টন। এর মধ্যে হাওরগুলো থেকে পাওয়া গেছে প্রায় এক লাখ মেট্রিক টন মাছ। প্রাকৃতিক পরিবেশে বেড়ে ওঠা ও প্রকৃতি থেকে উৎপাদিত খাবার খায় হাওরের মাছ। তাই এসব মাছ চাষের মাছের চেয়ে তুলনামূলক সুস্বাদু। একই প্রজাতির বিভিন্ন ধরনের মাছের আবাসস্থল এই হাওর অঞ্চল। এর মধ্যে ঘোড়ামুখী, আগুনচোখা, ঘড়িয়াসহ আট ধরনের রুই মাছ। সরপুঁটি, কাঁঠালে পুঁটি, তিতপুঁটি, বাঘাপুঁটি, মেনাপুঁটি, জাতপুঁটি, গিলিপুঁটি, টেরিপুঁটি তো আছেই। মহাশোল, বাগাড়, ট্যাংরা, বুজুরি, রানি ট্যাংরা, গুলসা, গাঙ ট্যাংরা, আইড়, কই, নাপতে কইয়ের মতো হারিয়ে যাওয়া মাছের আবাসস্থল এখন হাওর।(প্রথম আলো,৫ মে,২০১৭)।তার মানে ধান এবং মাছ বিক্রি/রপ্তানি করেই এই সব হাওরগুলো থেকে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা উপার্জন করা সম্ভব যা জাতীয় আয়ে বিরাট ভূমিকা রাখতে পারে।এমতাবস্থায় এতবড় একটি আর্থিক সেক্টরের সুষ্ঠু ব্যবস্থানা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে হলে অবশ্যই পৃথক মন্ত্রণালয় প্রয়োজন রয়েছে।

দুই. পাথর, বালু উত্তোলন নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাপনা বিবেচনায়

কথায় আছে মৎস্য, পাথর, ধান, সুনামগঞ্জের প্রাণ।অর্থাৎ মাছ এবং ধান বাদ দিলেও পাথর,বালু’র মতো মহা গুরুত্বপূর্ণ একটি সেক্টর রয়েছে হাওরে।সুনামগঞ্জের হাওরে যাদুকাটা নদীতে লক্ষ লক্ষ নৌকা বালু,পাথর উত্তোলন করছে অথচ এগুলোর তেমন সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা নেই।অনেকাংশে অবৈধ লেনদেনের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকার সম্পদ হারিয়ে যাচ্ছে।অথচ পৃথক মন্ত্রনালয় থাকলে অবশ্যই এগুলো ব্যবস্থাপনার জন্য পর্যাপ্ত লোক থাকতো,যথা সময়ে অডিট হতো এতে জনগণ এবং সরকার উভয়েই লাভবান হতো।এদিকটি বিবেচনা করেও পৃথক মন্ত্রণালয় জরুরী।

তিন. বছর বছর হাওরের ফসলহানি থেকে বাঁচানো বিবেচনায়

বলার অপেক্ষা রাখেনা এই হাওরগুলোতে রত্ন ফলে।লক্ষ, কোটি মেট্রিকটন ধান উৎপন্ন হয় এই হাওরগুলো থেকেই যা দেশের প্রায় ২০/২৫ ভাগ খাদ্য চাহিদা পূরণ হয়।অথচ হাওরের বেড়িবাঁধ,জাঙালের অব্যবস্থাপনার ফলে প্রায় বছরই অকালে পানিতে তলিয়ে যায় হাওরগুলো। এতে কেবল হাওরবাসী নয় সমগ্র দেশেরই ক্ষতি সাধিত হয় অকালে হাওরডুবিতে।হালের পানি উন্নয়ন বোর্ড(পাউবো) বেচারা নামের সার্থকতা বজায় রাখতে পানির উন্নয়ন করে চলেছে নিয়ত কিন্তু বাঁধ কিংবা জাঙালের আর উন্নয়ন করতে পারছেনা সিকিভাগও।অথচ একটি পৃথক মন্ত্রনালয় থাকলে বার বার এরকম হতোনা।আমরা যতই পিআইসি ব্যবস্থাপনা,উপজেলা বা জেলা প্রশাসনকে দোষারোপ করিনা কেন হাওরের এসব সমস্যা সমাধান করার জন্য পৃথক মন্ত্রনালয় না থাকায় কেউ ই প্রকৃত অর্থে হাওরের সমস্যাগুলো নিয়ে ভাবে না বা ভাববার সময় ও নেই।আর সত্যিকার অর্থেই একটি জেলার অনেক ধরনের সমস্যা থাকে, জেলা প্রশাসন চাইলেও তো সকল প্রচেষ্টা এই সেক্টরে নিবদ্ধ রাখতে পারবেনা।এমতাবস্থায় পৃথক মন্ত্রনালয় হলে অবশ্যই নির্দিষ্ট মন্ত্রনালয় এগুলো নিয়ে ব্যপকভিত্তিক গবেষণা করে হাওরের সমস্যাগুলোর সঠিক মূল নিরুপণ করে উদ্যোগ নিলে অবশ্যই হাওরের সমস্যাগুলো দ্রুত সমাধান হতে বাধ্য।এদিক বিবেচনাকল্পেও পৃথক হাওর মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার বিকল্প নেই।

চার. হাওরের জনমানুষের ভাগ্য উন্নয়ন বিবেচনায়

হাওরপারের জনমানুষের খুব পরিচিত একটি প্রবাদ “বর্ষায় নাও,হেমন্তে পাও” অর্থাৎ নাও আর পাও ছাড়া হাওরবাসীর যোগাযোগের আর কোন সম্বল নেই।যে হাওরের মানুষ হাড়খাঁটুনি করে মাছ শিকার করে,ধান উৎপাদন করে দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখে, বাস্তবচিত্রে তাদের নিজেদের উন্নয়ন কিংবা উপভোগের কোন সুযোগই নেই।না আছে হাওর এলাকায় ভালো যোগাযোগ ব্যবস্থা,না আছে ছেলে মেয়ে শিক্ষিত করার ভালো শিক্ষা প্রতিষ্ঠাণ! রাত দিন খাটুনি করে যারা দেশকে দিয়ে যাচ্ছে তাদের ভাগ্য উন্নয়নে কি দেশের/সরকারের কিছুই করার নেই? অবশ্যই আছে।কিন্তু ওদের নিয়ে কে দুদন্ড ভাববে ? দেশ যখন উন্নয়নের মহাসড়কে বিদ্যুৎবেগে ট্রেন দৌড়াচ্ছে,হাওরবাসী তখন অতল হাওরে নৌকা দৌড়াচ্ছে! হ্যাঁ বাস্তব চিত্রটা এমনই।তাই হাওরবাসীর জীবনমান উন্নয়ন তথা ভাগ্য উন্নয়ন ঘটাতে হলে অবশ্য অবশ্যই হাওরবাসীর সুখ-দুখ বলার একটি জায়গা তৈরী করতে হবে,যেখানে দুঃখগুলো জমা করলে সমাধান হিসেবে তা হাওরবাসীর ঘরে ঘরে ফিরে আসবে।সেই জায়গাটি আর কিছু নয়, সেটিই মূলত হাওর মন্ত্রনালয়,যেটি অবশ্য অবশ্যই সরকারের বিবেচনায় আনতে হবেই।নচেৎ দেশেকে উন্নয়নের মহাসড়কে দৌড়ানো সম্ভব নয়,কারন হাওরবাসীও যে দেশেরই অংশ!

পাঁচ. হাওরের প্রাকৃতিক সম্পদ সংক্ষণে

দেশের হাওরগুলো প্রাকৃতিক সম্পদে ভরপুর। বড় বড় হাওর যেমন টাঙ্গুয়ার হাওর,হাকালুকি হাওর,শনির হাওর সহ অনেক হাওরেই মাছ,ধান বাদেও রয়েছে বিভিন্ন প্রকার গাছ গাছালি,বিভিন্ন প্রকার পাখি।শুধু টাঙ্গুয়ার হাওরের ক্ষেত্রে যদি আমরা দেখি –

ওখানের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের একটি অংশ হলো পাখি।এখানে নানা জাতের প্রায় ২০৮ প্রজাতির(পাখিশুমারী-২০১৯) পাখির সন্ধান পাওয়া যায়।
স্থানীয় জাতের পাখি ছাড়াও শীতকালে, সুদূর সাইবেরিয়া থেকে আগত পরিযায়ী পাখিরও আবাস এই হাওর।পরিযায়ী পাখিদের মধ্যে বিরল প্রজাতির প্যালাসেস ঈগল বড় আকারের গ্রে কিংস্টর্ক রয়েছে এই হাওরে। স্থানীয় জাতের মধ্যে শকুন, পানকৌড়ি, বেগুনি কালেম, ডাহুক, বালিহাঁস, গাঙচিল, বক, সারস, কাক, শঙ্খ চিল, পাতি কুট।
বিপন্ন প্রজাতির পরিযায়ী পাখি কুড়ুল (বাংলাদেশে এর নমুনাসংখ্যা ১০০টির মতো)। প্রতি বছরই টাঙ্গুয়ায় সমগ্র দেশের মধ্যে সবচেয়ে বিরল কয়েক জাতের পাখি দেখা যায়। এর মধ্যে রয়েছে বৈকাল তিলিহাঁস, বেয়ারের ভুঁতিহাস এবং কালোলেজ জৌরালি (ইংরেজি: Black-tailed godwit)। বাংলাদেশে দৃশ্যমান আটটি বেয়ারের ভুঁতিহাসের পাঁচটিই পাওয়া গেছে টাঙ্গুয়ায়। বিরল প্রজাতির পাখিদের মধ্যে আরো আছে কালোপাখা টেঙ্গি, মোটাঠুঁটি ফাটানো, ইয়ার, মেটে রাজহাঁস, মাছমুরাল, লালবুক গুরগুরি, পাতি লালপা, গেওয়াল বাটান, লম্বা আঙুল চা পাখি, বড় গুটি ঈগল, বড় খোঁপা ডুবুরি, কালো গির্দি প্রভৃতি।

পাখি ছাড়াও কিছু সরিসৃপ এবং উভচর প্রাণীরাও টাঙ্গুয়ার প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বর্ধক হিসেবে ভূমিকা রাখে।এদের মধ্যে ৬ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ২০ প্রজাতির সাপ, বিরল প্রজাতির উভচর, ৪ প্রজাতির কচ্ছপ, ৭ প্রজাতির গিরগিটিসহ নানাবিধ প্রাণীর আবাস এই হাওরের জীববৈচিত্র্যকে করেছে ভরপুর। বিলুপ্ত কাছিমের মধ্যে রয়েছে হলুদ কাছিম, কড়ি কাইট্টা ও পুরা কাইট্টা।(তথ্যসূত্র হাওরপিডিয়া)। তাহলে একবার ভাবুন এই সম্পদগুলো রক্ষার জন্য কি পৃথক শাসন বা রক্ষা ব্যবস্থাপনা দরকার নয়? অবশ্যই দরকার।আর সেটিই হচ্ছে হাওর মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করে বিশেষ ব্যবস্থায় হাওর মনিটরিং করা।

ছয়. হাওরের সাহিত্য সাংস্কৃতিক সম্পদ সংরক্ষণে

বলা চলে সাহিত্য সংস্কৃতির পাদপীঠস্থান এই হাওর পারের বসতিগুলো।হাসন রাজা,রাধারমণ,আরকুম শাহ,করিম শাহ, আমিরুদ্দীন সহ অসংখ্য গুণী শিল্পীদের জন্ম হাওরপারেই।এসব গুণী শিল্পীদের লিখা গানগুলো আজ দেশে বিদেশে সমাদৃত হচ্ছে।তারপরো প্রচারের অভাবে অনেক লিখাই আজ হারিয়ে যাবার পথে।হাওর পারে রয়েছে নিজস্ব সংস্কৃতি যেমন,ধামাইল গান,আইলাম্বর সহ নানাজাতের আচার যা সংরক্ষণ করতে পারলে বিশ্ব এতিহ্যে স্থান পেতে পারতো।তাই হাওরভিত্তিক একটি মন্ত্রনালয় থাকলে মন্ত্রনালয়ের বিশেষ ব্যক্তিরা অবশ্যই এ ব্যাপারে বিশেষ উদ্যোগ নিতে পারতো যার ফল সারা দেশবাসীই কম বেশি ভোগ করতে পারতো।

পরিশেষে বলা যায়, হাওর বিষয়ক পৃথক মন্ত্রনালয় ব্যতীত কোন ভাবেই হাওরের সুফল ভোগ সম্ভব নয়। চট্টগ্রামে যদি ৩ জেলা নিয়ে পার্বত্য বিষয়ক মন্ত্রণালয় হতে পারে, তাহলে হাওর বেষ্টিত ৭ জেলা নিয়ে, হাওরাঞ্চলের টেকসই উন্নয়নের স্বার্থে হাওর বিষয়ক মন্ত্রণালয় স্থাপন করতে সমস্যা কোথায়? তাই হাওর ও হাওরের জনমানুষের কথা চিন্তা করে আমি
হাওর সাহিত্য উন্নয়ন সংস্থা (হাসুস) বাংলাদেশ’র পক্ষ থেকে অতিসত্ত্বর হাওর মন্ত্রনালয় প্রতিষ্ঠার জন্য জোর দাবি জানাই।আমাদের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী,দেশরত্ন বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখহাসিনার হাত ধরে দেশ দুর্দান্ত গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।আশা করি,তিনি হাওরের মানুষের প্রতিও সদয় মনোভাব প্রকাশ করবেন।এরই ধারাবাহিকতায় আশা রাখি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী আমাদের হাওর মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠার দাবিটি অত্যন্ত গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করে, দ্রুততার সাথে পূরণ করবেন,সেই সাথে দূর করবেন হাওরবাসীর দীর্ঘ দিনের দুর্দশার চিত্র,মানবতার জননী বঙ্গকন্যা হয়ে উঠবেন হাওরবাসীর অতি আপনজনের আপনজন।

লেখক

জীবন কৃষ্ণ সরকার
কবিও প্রাবন্ধিক
সভাপতি, হাওর সাহিত্য উন্নয়ন সংস্থা(হাসুস) বাংলাদেশ

তথ্যসহায়তাঃ হাওরপিডিয়া,উইকিপিডিয়া,প্রথম আলো,www.moa.gov.bd

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে