হাওরসাহিত্য পাঠাগার সম্পর্কিত কিছু প্রশ্ন ও উত্তর

0
191

১.পাঠাগারের কত সালের কত তারিখে প্রতিষ্ঠিত হয়?
উত্তরঃ ২০১৭ সালের পহেলা জানুয়ারী।
২.পাঠাগার গড়ার লক্ষ উদ্দেশ্য কি?
উত্তরঃ হাওর এলাকার ছেলেমেয়েদেরকে জ্ঞান অন্বেষণের প্রতি আগ্রহ সৃষ্টি করা।নবীন প্রজন্মকে হাওরের সাহিত্যের প্রতি সচেতনতা সৃষ্টি করা সেই সাথে তাদেরকে মাদকের ছোঁবল থেকে রক্ষা করা।
৩.প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে কি কি আসবাপত্র ও
কি পরিমাণ বই নিয়ে যাত্রা শুরু হয়েছিল?
উত্তরঃ আসবাব পত্র- ৫ টি চেয়ার,দুটি টেবিল,একটি ওয়াটার ফিল্টার,১ টি বুক সেল্ফ।
বই ছিল ২৫০ টি।
৪.শুরুর দিকে স্থানীয়দের অভিব্যক্তি কেমন ছিল? বর্তমানে তাদের অভিব্যক্তি কি?
উত্তরঃ শুরুর দিকে স্থানীয়দের অভিব্যক্তি দুই ধরণের ছিল।এক ধরণের অভিব্যক্তি ছিল আমাকে সরাসরি উৎসাহ দিত, খুবই প্রসংশা করতো তবে ঠিক ঐ লোকদেরই অনেকে আমার অলক্ষে একে অন্যের কাছে সসালোচনা করতো এই বলে যে জীবন কৃষ্ণ এইসব কি পাগলামি শুরু করছে।ছেলেমেয়েদের নিয়ে আড্ডা দেয়।ওদের পড়ালেখা নষ্ট করে।তাছাড়া এরকম আমরা আরো অনেক দেখেছি কিছুদিন কিছু বই নিয়ে হইহুল্লোড় করে পরে আর দিশ থাকেনা।এসব কথা আমার আপনজনদের মাধ্যমে আমার কানে আসতো।তবে এখন আর কেউ এসব বলেনা বললেই চলে।
৫.বতর্মানে সদস্য সংখ্যা কত?
উত্তরঃ সাধারণ সদস্য ২৬৫ জন,আজীবন সদস্য ৩৩ জন।
৬.এখন পর্যন্ত কতটি সাহিত্য আড্ডা হয়েছে?
উত্তরঃ১৩১ টি। তবে করোনার কারনে এবছর আড্ডা কম হচ্ছে।
৭.বতর্মানে বইয়ের সংখ্যা কত? আসবাবপত্র বতর্মানে কি কি আছে?
উত্তরঃ বর্তমানে বইয়ের সংখ্যা ৩০৬৩ টি।বর্তমানে আসবাব পত্র – ৩০ টি চেয়ার,দুটি টেবিল,৭ টি বুক সেল্ফ,১টি ওয়াটার ফিল্টার,১ টি সিলিং ফ্যান,১ টি বাল্ব,১ টি রেক।
৮.যে ঘরে পাঠাগারের কার্যক্রম পরিচালিত হয় সেটির ভাড়া কত?
উত্তরঃ কারেন্ট আসার পূর্বে ১০০০ ছিল।বর্তমানে কারেন্টরবিল সহ ১২০০ করে দিচ্ছি।
৯.ভাড়ার টাকার পরিশোধ করা হয় কীভাবে?
উত্তরঃ পাঠাগারের সদস্যদের কোন চাঁদা না তুলায় এবং কোন প্রকার সরকারি বা বেসরকারি আর্থিক অনুদান না পাওয়ায় পুরো ভাড়াটি পাঠাগারের প্রতিষ্ঠাতা এবং সভাপতি জীবন কৃষ্ণ সরকার বহন করছেন।
১০.পাঠাগারের উল্লেখ্যযোগ্য কর্মকান্ড যদি থাকে তার বিবরণ। কবে কোথায় কীভাবে তা সম্পাদিত হয়েছে? উল্লেখযোগ্য কোন কোন ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন?
উত্তরঃ পাঠাগারটিকে সাংগঠনিকভাবে পরিচালনার জন্য হাওর সাহিত্য উন্নয়ন সংস্থা(হাসুস) বাংলাদেশ নামে ২০১৮ সালে একটি সংগঠন করা হয়।হাসুস এবং পাঠাগারের যৌথ উদ্যোগে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে দাতিয়াপাড়া লায়েছ ভূঁইয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রয়াত কথা সাহিত্যিক ডাঃ মিরাজ উদ্দিন’র স্মরণে ১ম হাওর সাহিত্য উৎসব পালন করা হয়।সেখানে প্রধান অতিথি বীর মুক্তিযোদ্ধা মনজুরুল হক তারা সহ হাওরের বিভিন্ন জেলা থেকে প্রায় দুই শতাধিক সাহিত্য প্রেমী উপস্থিত ছিলেন।পরবর্তিতে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বরে সুনামগঞ্জ জগৎ জ্যোতি পাঠাগারে ২য় হাওর সাহিত্য উৎসবটি পালিত হয়।সেখানে প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ টেলিভিশনের নিয়মিত গীতিকার শেখ এম এ ওয়ারিশ,প্রধান বক্তা হিসেবে হাওরগবেষক সজলকান্তি সরকার, বিভিন্ন কলেজের অধ্যাপক,প্রভাষক সহ প্রায় ২০০ জনের মতো হাওরের বিভিন্ন জেলার সাহিত্য প্রেমী যোগ দেন।তবে পাঠাগারের ছাদে এ পর্যন্ত প্রায় ৬ টি প্রোগ্রাম সম্পন্ন হলেও একটি প্রোগ্রামে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন হাওর গবেষক সজলকান্তি সরকার।জায়গা স্বল্পতার জন্য বড় করে প্রোগ্রাম না করতে পারায় বিশেষ ব্যাক্তিদের ইনভাইট করা হয়নি।
১১. এখন পর্যন্ত কতজন ব্যক্তি পাঠাগারে বই/আসবাবপত্র দান করেছেন?
উত্তরঃ ২৬৫ জন।
১২.পাঠাগারের উল্লেখযোগ্য কি কি কার্যক্রম চালু আছে?
উত্তরঃ প্রতি সপ্তাহে সাহিত্য আড্ডার পাশাপাশি বিভিন্ন জাতীয় উৎসব পালন করা হয়।উৎসব গুলোতে গান, কবিতা আবৃত্তি,চিত্রাংকন,রচনা প্রতিযোগিতা,বই পড়া প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়।
১৩.সরকারি সহায়তা পেয়েছেন কি? যদি না পেয়ে থাকেন তাহলে তার কারণ কি?
এখন পর্যন্ত কোন সরকারি সযোগিতা পাইনি।তবে এর প্রধান কারন কি কি সেক্টর থেকে বা সরকারের কোন কোন প্রজেক্ট থেকে পাঠাগারের সহযোগিতা দেয়া হয় তা নিশ্চিত হতে পারিনি।তাই কোথাও সহযোগিতার আবেন না করার দরুন সহযোগিতা পাইনি।
১৪.পাঠাগার স্থাপনের ভাবনা কেন ভাবলেন?
উত্তরঃ ছোটবেলা থেকেই বই পড়া খুব ভালোবাসতাম। পাঠ্য বইয়ের বািরে বই পড়া যেনো আমার একটা নেশার মতো ছিল।সেই বই পড়া থেকেই বই লেখা শুরু করি।আর সেই থেকেই দুর্গম হাওরে ছেলেমেয়েদের জ্ঞান অন্বেষণের সুবিধা করে দেবার জন্যই পাঠাগার স্থাপনের ভাবনা করি।
১৫.পাঠাগার নিয়ে ভবিষ্যত পরিকল্পনা কি?
উত্তরঃ পাঠাগারটিকে আমি আমার সন্তানের মতো মনে করি।তাই আমারর সন্তানকে যেমন আমি দেশের একজন শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠিত ব্যক্তি হিসেবে দেখতে চাই,ঠিক তেমনি পাঠাগারটিকেও আমি দেশের অন্যতম একটি শ্রেষ্ঠ,মডেল পাঠাগার হিসেবে দেখতে চাই।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে