সুকেশ রঞ্জন সরকার বনাম প্রতিরোধ যুদ্ধ ও মামলা

0
129

সুকেশ রঞ্জন সরকার। বঙ্গবন্ধু প্রেমিক। প্রতিরোধযোদ্ধা। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের পর জীবন-যৌবন প্রতিরোধযুদ্ধের লাল পাতায় লিখতে শুরু করেন। নিজ গ্রামের টিনের বাড়ির আঙিনা ও সরকারি চাকুরি ছেড়ে পিতা হত্যার প্রতিবাদের ফলে কারাগারেই কাটাতে হয় তার দীর্ঘজীবন। বড়ভাইও সহযোদ্ধা ছিলেন। বসতবাড়ি স্কুলের জন্য দান করে পরিবারের সকলেই এখন পরবাসী। বর্তমানে সুকেশ রঞ্জন সরকার জীবনমৃত্যুর সন্ধিক্ষণে জিন্দালাশ হয়ে সময় পার করছেন। আর কথায় কথায় বলছেন, “আমি আমার আরাধ্যদেবতা বঙ্গবন্ধুর কাছে চলে যেতে চাই।’
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হত্যার প্রতিবাদে ভাটি ময়ালে অনেক সশস্ত্র যুদ্ধক্ষেত্রে তিনিই ছিলেন মূল নায়ক। বিশেষ করে সুনামগঞ্জ জেলার তাহিরপুর উপজেলার রামজীবনপুর গ্রামে সশস্ত্র প্রতিরোধযুদ্ধে তিনি ছিলেন মহানায়ক। অন্যতম সহযোদ্ধা ছিলেন রতিশ তালুকদারসহ ১৩ সদস্যের বাহিনী।

৩সেপ্টেম্বর ১৯৭৬ সালে বাহিনীর হাই কমান্ডের নির্দেশে বেতাল পরগণা থেকে দলের কাজ শেষে উলুকান্দি রাতে খাওয়া-দাওয়া শেষ করে বেতগড়া ক্যাম্পে যাওয়ার পথে ভোর ৪টায় হালির হাওরে ঝড়ের কবলে পড়ে আত্মরক্ষার জন্য তার বাহিনী নিয়ে সকাল ৬.০০-৬.৩০মিনিটে রামজীবনপুর গ্রামে নৌকা ভিড়ান। সূর্য্য ওঠার আগেই বঙ্গবন্ধুর খুনি মোস্তাক গং পরিচালিত তৎকালীন আর্মিবিডিআরপুলিশ বাহিনী খবর পেয়ে রামজীবনপুর গ্রাম ঘেরাও করে। ৪ঠা সেপ্টেম্বর ১৯৭৬ সকাল ৮টা থেকে শুরু হয় সশস্ত্র যুদ্ধ। বিরামহীন চলে রাত পর্যন্ত। প্রতিরোধযোদ্ধাদের ৬/৭টি ব্যাংকার হয় গ্রামের পাড়ায় পাড়ায়। একসময় রামজীবনপুর গ্রামের পুর্বপাড়া আর্মিবিডিআপুলিশ বাহিনী দখলে নেয়। দীর্ঘ সময়ের যুদ্ধে বিডিআর এর নৌকার মাঝি মাহমুদপুর নিবাসী আব্দুল কাইয়ুম রহস্যজনক ভাবে নিহত হয়। ফলশ্রুতিতে গ্রামে মার্ডার শেলিং এর সিদ্ধান্ত হয়। যুদ্ধে URGES ও ENEGRA গ্রেনেড ব্যবহার হয়। তাই প্রতিরোধযোদ্ধাগণ গ্রামবাসীর জানমালের কথা বিবেচনা করে মাঝরাতে গ্রাম ত্যাগ করেন। তৎক্ষনাৎ প্রতিরোধযোদ্ধা দয়ানন্দ দাস নৌকায় উঠতে না পেরে গ্রেফতার হন। গুলীবিদ্ধ হন গ্রামের দিদার হোসেন। তারপর ১০জনকে আসামি করে মামলা হয়। সুকেশ রঞ্জন সরকার হন প্রধান আসামী। মামলার বাদী হয়… (চলবে)

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে