# সনাতনীরা কত দিনে শ্রাদ্ধ করবেন ?
————————————————-
( পোস্টঃ ০১ )
মনু সংহিতা গ্রন্থের ৫/৮৩ এ বলা আছে,
“ব্রাহ্মণ ১০ দিন, ক্ষত্রিয়১২ দিন, বৈশ্য ১৫ দিন, শূদ্র ৩০ দিন অশৌচ পালন করবেন।
সুত ঋষি বলেছেন,
জাতি মাত্রে বিপ্র ১০ দিনে, ক্ষত্রিয় ১২ দিনে, বৈশ্য ১৫ দিনে, শূদ্র ৩০ দিনে শুদ্ধ হবে। (গরুড় পুরান ১০৭/১০-১১)
আবার
শতাতোপো ঋষি বলেছেন,
ক্ষত্রিয় ১১ দিনে, বৈশ্য ১২ দিনে ,শূদ্র ২০ দিনে শুদ্ধি হবে।
এ থেকে কি বুঝা যাচ্ছে, কোথাও মিল নেই ,তাহলে আমরা কোনটা মানবো??
এবার আসুন অন্য দিকে,,
ঋষি মনু বলেছেন,
” দশাহং শাবমাশৌচং সপিন্ডেষু বিঁধিয়তে” (মনু,স, ৫/৫৯)
অর্থাত্, সপিন্ডের মৃত্যু হলে ১০ দিন অশৌচ পালনই বিধেয়।
আবার গরুড় পুরাণে স্বয়ং শ্রী কৃষ্ণ বলেছেন,”
দশাহং শাবমাশৌচং সপিন্ডেষু বিধীয়তে। (গ. প.উ.৬/১০)
অর্থাত্ সপিন্ডের মৃত্যু হলে ১০ দিন অশৌচ পালন করতে হবে।
আশ্চর্য ব্যাপার শ্রী কৃষ্ণের নির্দেশ ও মনুর কথা হবহু এক।
এ থেকে বোঝা যায় সকলের জন্যই একই নিয়ম।
আর কলিযুগে জাত পাত নেই, এ যুগে ব্রাহ্মন এর ঘরে চোর ও জন্মে আবার শুদ্রের ঘরেও ব্রাহ্মণও জন্মে।। মানুষের কর্মের ও গুণের উপর ভিত্তি করেই চার বর্ণের সৃষ্টি।
গীতা ( চাতুর্বণময়াশ্রেষ্টং গুনকর্ম বিভাগস্ব )
# তাহলে এখন কতো দিনে শ্রাদ্ধ করবেন ??
আসুন জেনে নেই,
“মৃত ব্যাক্তির দশম দিবসে ক্ষুদা ভাব জন্মে।মৃত ব্যক্তি একাদশ কিংবা দ্বাদশ ১১/১২ এই দুই দিবসে ভোজন করে।
তাই এই দুই দিনের মৃত ব্যাক্তির উধেশ্যে পিন্ড দান করবে।” (গরুড় পুরাণ,.উ,৬/৭৭)
বরাহ পুরাণে (বরাহ.১৮৮/৪,৭-৮) বলা আছে,
“চার বর্ণের মানুষই একাদশ দিনে পিন্ড দান করবে””
ভগবান শ্রীকৃষ্ণ চরম সিদ্ধান্তে বলেছেন,
“একাদশে দ্বাদশে আদ্যং প্রকীর্তিতম্”( গরুড় পুরাণ.উত্তর.৬/৫১)
অর্থাত্, ১১বা ১২ দিন শ্রাদ্ধের দিন।
অতএব সিদ্ধান্ত এই যে, ১১ অথবা ১২ দিনের দিনেই শ্রাদ্ধ করতে হবে,১৩ দিনে না।
# এখন প্রশ্ন ১৩ দিনে কোনো করা যাবে না??
এ বিষয়ে বলা আছে,,”মৃত ব্যক্তিকে ১৩ দিনের দিন ক্ষুদা তৃষ্ণায় কাতর হয়ে যমলোকে যাওয়ার জন্য যাত্রা করতে হয়। (গ.প. উ. ১৬/৫৫)
১৩ দিনে যমদূত কতৃক ধৃত হয়ে বন্দী বানরের নেয় যমালয়ে যেতে হয়। (গ.প.৬/৮১)
⚠️ শাস্ত্রে ১৩ দিনে ক্রিয়া করার কোনো উল্লেখ নেই।
কিন্তু বর্তমান যুগের ব্রাহ্মণ রা মনু সংহিতার ৫/৮৩ নং শ্লোক এর দোহাই দিয়ে বিভিন্ন দিনে শ্রাদ্ধ করে বিভেদ সৃষ্টি করছে।।
কিন্তু তারা মনু সংহিতার ৫/৫৯ এই শ্লোক ও গরুড় পুরানের ৬/১০ এই শ্লোক টা দেখেও দেখে না ।।
গ্রন্থ রেফারেন্সঃ- শ্রীমদ্ভগবদগীতা,গরুড় পুরাণ,মনু সংহিতা,বরাহ পুরাণ ইত্যাদি।