এখানে সম্পূর্ণ গ্রন্থটি পাওয়া যাচ্ছে।পড়বেন প্লিজ…
বইটি সুনামগঞ্জের মধ্যনগর উপজেলার বংশীকুন্ডা উত্তর ও দক্ষিণ দুই ইউনিয়নের প্রথম প্রকাশিত কবিতার বই।
মটির পুতুল (কাব্যগ্রন্থ)
লেখকঃ জীবন কৃষ্ণ সরকার।
উৎসর্গঃ শ্রদ্ধেয় পিতা-মাতা ও শ্রদ্ধেয় চাচীমা
প্রকাশকালঃ অমর একুশে বইমেলা- ২০১৬
প্রকাশকঃ শাহ্ প্রকাশন,কদমতলী সিলেট।
পরিবেশকঃ ওহী প্রকাশনী,সিলেট।
মূল্যঃ ১২০ টাকা।
ISBN:978-984-8464-73-1
লেখক পরিচিতিঃ
কবি জীবন কৃষ্ণ সরকার,জন্মঃন০৪/০১/১৯৮৭ খ্রিষ্টাব্দে।জন্মস্থানঃ সবুজ শ্যামলে ছায়ঢাকা গ্রামঃবাট্টা,ডাকঘরঃবংশীকুণ্ডা,থানাঃমধ্যনগর,জেলাঃসুনামগঞ্জ,সিলেট। পিতাঃসুধীর রঞ্জন সরকার,মাতাঃ মিলন রাণী সরকার,তিনভাই,দুই বোন,কবি সবার বড়। শিক্ষায় বি.এসসি (অনার্স),এম.এসসি(গণিত),শাবিপ্রবি থেকে।বর্তমানে তিনি একটি বিদ্যালয়ে গণিতের শিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন।৬ষ্ঠ শ্রেণী থেকেই তিনি নিজেকে লেখালেখিতে মনযোগী করে তুলেছেন। মূলতঃ তিনি একজন কবি।’মাটির পুতুল’ কবির প্রথম কাব্যগ্রন্থ। স্থানীয় ও জাতীয় পত্র পত্রিকা,লিটল ম্যাগাজিন এবং অনলাইন পত্রিকা গুলোতে নিয়মিত তিনি লিখে যাচ্ছেন।লেখা লেখিতে মা বাবা সহ প্রিয় ছাত্র-ছাত্রীরা উৎসাহ এবং দিয়ে যাচ্ছেন। লেখালেখিতে নিজেকে পরিশ্রমী করে তোলার জন্য যথেষ্ট শ্রম ও কর্ম সাধনায় নিয়োজিত এক সরল মানুষ।লেখনী চর্চার সাথে খুব হিসেব করে পথ চলায় তিনি পারদর্শী মনোভাবে সৌন্দর্যবোধকে সাজিয়ে তুলতে চেষ্টা করে যাচ্ছেন।লেখনিসত্ত্বায় নিজেকে জড়িত রেখেছেন বিষাদের ছায়া থেকে অবমুক্তির অবকাশকে জয় করার প্রতাশায়।
প্রকাশকের কথাঃ
স্বাভাবিক জীবনে সম্পূর্ণ নিভৃতচারি ভাবনায় যাপিত থেকে সাহিত্য সাধনায় লিপ্ত হয়েছেন জীবন কৃষ্ণ সরকার।মূলত তিনি শিক্ষকতার মহান পেশায় নিয়োজিত এক মহৎপ্রাণ।
মনের অভ্যন্তরে দেহ,মস্তিষ্ক,রক্ত,মাংসের শ্বাস-প্রশ্বাসে কিংবা চোখের চারপাশে যে রেখা চিত্র ফোটে উঠে প্রতিদিন তা স্মরণে রেখে কল্পনা প্রসূত হয়ে যেকোন লেখক লিখে যান।কবি,সাহিত্যিকরা এমনই নিয়মে নিজস্ব অবস্থান তৈরি করেছেন।’মাটির পুতুল’কবি’র প্রথম কাব্যগ্রন্থটিতে ব্যর্থতা নয়,সফলতার স্বপ্ন বুকে ধারণ করে ক্রমে ক্রমে সামনে যাবারহিসাব মিলাতে সুর, ছন্দের তালে তালে উপমার অভিসারে নিজেকে খুব সহজ-সরল রুপে সাহিত্য বাতাসের সাথে মিশতে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন।নানা ধরণের প্রচলিত সমাজ ব্যবস্থার বাস্তব ঘটনার বিষয়গুলোতে প্রতিবাদী এবং সাহসী শক্তিতে জীবনের টলোমলো পথচলাকে পাঠকের কাছে লোখনিতে তৃলে ধরার নান্দনিকতায় সচেতনতা রক্ষা করেছেন।নীতি-নৈতিকতার মূল্যবোধে পাঠকের সন্মূখে আনন্দপূর্ণ কথার নির্মাণে রসাত্মকযুক্ত করে বাক্যে লিখেছেন বেশ কিছু অনুভব,কিছু শ্বাসরোধী কথা।আমাদের পাঠক হৃদয়ের অন্বেষণে ধাক্কা দিয়েছে।আমরা কবি ও কাব্যগ্রন্থের বহুল প্রচার এবং সাফল্য কামনা করছি।
——সুফিয়া জমির ডেইজি
প্রকাশক,শাহ্প্রকাশন,সিলেট।
সূচিপত্রঃ
১.স্মৃতিকথা
২.হাসির গোপাল
৩.মামু’র জোড়
৪.মাটির পুতুল
৫.অবাক লাগে
৬.হরতাল বনাম রাজনীতিক
৭.কূঁয়ো ব্যাঙ
৮.আমার বাবা
৯.চন্দ্রনাথ
১০.নববর্ষ
১১.একুশ ও বলে
১২.আশা
১৩.শ্রমিকের জীবন কথা
১৪.বিজয় তুমি
১৫.একুশ আমার গর্ব
১৬.ঝগড়া
১৭.দুর্দান্ত একুশ
১৮.শাহজালাল বাবার মাজার
১৯.সূর্য সন্তান
২০.সুখ
২১.বোমা!
২২.হাওর
২৩.সাধের স্বাধীনতা
২৪.সাবাস বাঙালী
২৫.রাজপথ
২৬.মনাই নদী
১। স্মৃতিকথা
বংশীকুন্ডা ইউনিয়ন মোর
বাট্টা গ্রামে বাড়ি
টাংগুয়ার হাওরের পশ্চিমে ভাই
পুবে মনাই নদী।
আর ও পুবে হাতপাঠন হয়
পশ্চিমে দক্ষিণউড়া
ডানেতে আছে ঘাসি গ্রাম
বামে বাসাউড়া।
আ-বলিতে আম শিখেছি
বাট্টার পাঠশালাতে
এস.এস.সি ভাই পাশ করেছি
মমিন বিদ্যালয় হতে।
রাখলাম এবার নাম পরিচয়
বলবো মনের কথা
বর্ষাকালে ঝিল মিল পানি
বসন্তে ফল পাতা।
আষাঢ় মাসে ভাসা পানি
নৌকো নিয়ে চলি
ঈদ আর পূজোয় সবাই মিলে
করি কোলাকোলি।
শ্রাবণ এ নৌকো বাইচ আর
কতো রঙের মজা
তার চেয়ে ভাই আরো খুশি
যখন ধরে খাজা।
গভীর রাতে হ্যাজাক নিয়ে
হাওরে বের হতাম
কচ্ছপ,কাছিম,রুহিত সহ
সুস্বাদু মাছ পেতাম।
এতো স্বাদের মাছ খেলে ভাই
তাও কি ভুলা যায়?
এজন্যই তো শহর থেকে
বারে বার গ্রামে যাই।
চৈত্র মাসে বাড়ির পিছে
সোনার ফসল ফলে
মাঁচা ভরে প্রতি বছর
কৃষকরা ধান তুলে।
ধান তুলিয়া আম পাড়িয়া
জৈষ্ঠা সংক্রান্তিতে
খেতাম মোরা চিড়ে,মুড়ি
আরও কাঁঠাল সাথে।
এর পরে ভাই ষাড়ের লড়াই
দেখতে অসাধারণ
আশা রাখি দেখলে কেহ
ভরিবেই তাহার মন!
আরো আছে জারি,সারি
যাত্রা গানের পালা
প্রতি বছর ফাল্গুন মাসে
মহিষখোলার মেলা।
গাজীর পালার মজার কথা
না বলিলেও চলে
এজন্যই তো গ্রাম ই শ্রেষ্ঠ
গবেষকরাও বলে।
তাই বলি ভাই লিখবো কতো
আমার স্মৃতিকথা
বর্ণনার আর শেষ হবেনা
লিখলেও হাজার পাতা।
২৪ আগস্ট ২০০৫
মল্লিকপুর,সুনামগঞ্জ।
২. হাসির গোপাল
রেল স্টেশনে দেখা হলো
ধরলো আমার পিছু
কিছু বুঝার আগেই গোপাল
ডাকলো আমায় চাচ্চু
বললো হেসে চাচু আপনার
গন্তব্য কোন জায়গায়?
ভাবলাম আমি কি জানি কি
পড়েছি বে-কায়দায়।
কি আর করবো উত্তর দিলাম
যাবো আজ বেলাবো
হেসে গোপাল বললো চাচ্চু
আমিও তো যাবো।
ভাবলাম আমি মনে মনে
এতো আজব লোক
আজ সকালে রওয়ার আগে
দেখেছি কার মুখ?
ঠিক আছে যা ভাগ্যে আছে
তাই হবে ট্রেনেতে
‘চাচ্চু’ যখন ডাকছেই আমায়
নিবোই আমার সাথে।
পথি মধ্যে ট্রেনের মাঝে
জিজ্ঞাসিলাম তাকে
কি জন্য আজ বেলাবোতে
যাবা আমার সাথে।
ভঙ্গি দেখে মনে হলো
বুঝেনি সে কিছু
মৃদু হেসে চেয়ে রইলো
বললো শুধু চাচ্চু।
আবার জিজ্ঞাসিলাম তাকে
আসছো কোথা হতে?
মাথা নিচু করে রইলো
মৃদু হাসির সাথে।
রেগে বললাম উত্তর দিসনা
ডাকলি কেনো চাচ্চু?
তবুও হাসিলো গোপাল
বলিলো না কিছু।
এক্ষণে বুঝিলাম আমি
কাকে কি বলতেছি
আমি যাই বলিনা কেনো
রোগটাই যে তার হাসি।
২০ ফেব্রুয়ারী ২০১৩
৮৫,সোনার পাড়া,মীরাবাজার,সিলেট।
৩. মামু’র জোর
ছোট্ট হতেই কোন ক্লাসে
ফেল করিনি কভু
ভাইভা বোর্ডে প্রশ্ন বাণে
ছাড় দিলনা তবু।
জিজ্ঞাসিলো আমেরিকার
পিয়ন সংখ্যা কত?
কত জন লোক এমএসসি পাশ
আছে তোমার মত?
ধীরে বললাম মাফ করবেন স্যার
বলতে পারতেছিনা
এক জন বলল ঠিক আছে
থাক আর বলতে হবেনা।
জানতে চাইলো বাবার নাম কি?
ভাই আর বোন কত জন?
মনে হলো এরাই বুঝি
আমার আপন জন।
বল্লাম আমি সুধীর সরকার
দুই ভাই দুই বোন আছে
প্রশ্ন করলেন তোমার বাবার
কি ধন সম্পদ আছে?
উত্তর দিলাম যৎসামান্যই
নেইকো তেমন বেশি
শুনে ভাইভা বোর্ডের সবাই
মারলো এক গাল হাসি।
হেসে বললেন পড়া-লেখায়
পাশ করেছ বেশ
তোমার ভাইভা এ পর্যন্ত
আমরা করলাম শেষ।
এমন সময় ফোন কল আসলো
এক্সটার্নালের কাছে
বলতে শুনলাম ‘মামু’ দিলে
সংরক্ষিতই আছে।
আর বুঝার রইলোনা বাকি
ভাইভা নামের ‘ফ্যাশন’
আমার মতই ফিরছে শত
হতাশ হয়ে এমন।
মনে পরে পড়লাম কতো
দিনের পর রাত ভোর
বুঝলাম এখন চাকরি পেতে
লাগে ‘মামু’র জোর।
১৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৩
৪. মাটির পুতুল
যুবক যুবতী’ র রোমান্টিকতায়
আধুনিক যুগে আর কি যে চাই!
রাস্তা ঘাটে তাদের মেলা
পার্ক বিদ্যাপিঠ কি গাছতলা!
কথাই তাদের কর্ম যখন
মোবাইল হলো আসল ‘ফ্যাশন’
তাই দেখে আজ ভাবছি শিমুল
আমিই কেবল মাটির পুতুল।
গল্প কথায় তাদের হাসি
জুসের সাথে জমছে বেশি
বাপ বেচারার শান্তনা হায়!
আমার সন্তান ইস্কুলে যায়।
মাস পরে পরীক্ষা যখন
নকল করাও তাদের ফ্যাশন
তাই দেখে আজ ভাবছি শিমুল
আমিই কেবল মাটির পুতুল।
বিদ্যাপিঠে স্যারের ক্লাসে
কি মনোরম মোবাইল বাজে!
বল্লে কিছু স্যার মহোদয়
“আই অ্যাম স্যরি ” বললেই তো হয়!
স্যার বেচারা অবাক মানুষ
বুঝে না সে তাদের হাউস
তাই দেখে আজ ভাবছি শিমুল
আমিই কেবল মাটির পুতুল।
১৬ই নভেম্বর ২০০৮
শাবির বাসে বসে,সিলেট।
৫. অবাক লাগে
যে দিকে তাকাই সেদিকে দেখি
চারদিকে শুধু বিপদ সেকি!
পাবো নাকি ক্ষুধা,মুক্তির সুধা
এধরা থাকিতে?
ভাবতে অবাক লাগে।
যতদিন যায় ততো মনে হয়
এ ধরা কি শুধুই বিষাদময়?
কেনো বিধি হায়!আনিলে আমায়
এ ধরা মাঝে
ভাবতে অবাক লাগে।
যেও না জানে কিছু
তার সাথে লোক নিচ্ছে পিছু
ডাকছে তারা চাচ্চু চাচ্চু
জানিনা এ ভুল ভাঙ্গবে কবে?
ভাবতে অবাক লাগে।
নির্বোধ অপরকে বুঝায়
সব সমাধান হয় টাকায়
সেও মেনে নেয় তার সাথে
তা কি তাদের সাজে?
ভাবতে অবাক লাগে।
মূর্খ জ্ঞাণ দেয় পন্ডিতকে
তাই মেনে নেয় লোকে
হায়! বিধি জানিনা
এই অন্ধকার ঘুচিবে কবে?
ভাবতে অবাক লাগে।
তাই বলিবো কি আর
হবে কি তাদের বিচার?
না হলে প্রভু আমাকে নিয়ে যাও
এ ধরা থেকে
ভাবতে অবাক লাগে।
২৯ জুন ২০০৬
১৭৩/বি,দপ্তরিপাড়া,সিলেট।
৬. হরতাল বনাম রাজনীতিক
মানুষ রুপে জন্মে মোরা
করেছি কি ভুল?
রাস্তা,ঘাটে জীবন দিয়ে
দিতে হবে এর মাশুল?
অবরোধে মানুষ হত্যা
ঘটছে অহরহ
দিনের পর দিন বাড়ছে আরো
দেখিবার নাই কেহ।
দলীয় নেতা কর্মী বলেই
হবেন তার বিচার
সত্যি হরতাল রাজনীতিকের
চূড়ান্ত হাতিয়ার।
বিশ্বজিতের জীবন গেলো
আরো কতো প্রাণ
এরই নাম কি রাজনীতিকদের
চরিত্র সুমহান?
পুলিশরাও সব চেয়ে দেখলো
মারলো কতো কোপ
এভাবেতেই খালি হচ্ছে
কতো মায়ের বুক।
শান্তি পূর্ণ আন্দোলনের
এ কেমন ব্যবহার!
সত্যিই হরতাল রাজনীতিকের
চূড়ান্ত হাতিয়ার।
বাপের জন্মে নেইকো বাড়ি
পুড়তে যায় সে গাড়ি
দলীয় ‘পাওয়ার’ পাইলে
সে যে কত বাহাদুরী!
প্রকাশ্যে সে দিবালোকে
পিস্তল হাতে চলে
ঢুকলেও জেলে বেরিয়ে পরে
রাজনীতিকদের বলে।
ভাবে মনে খুন করিলেও
ঠেকাবে কে আর?
সত্যিই হরতাল রাজনীতিকের
চূড়ান্ত হাতিয়ার।
কোট- কাচারি, যানবাহন,স্কুল
সবই থাকে বন্ধ
দেশের ছাপ্পান্নটা বাজলেও
ঐ ব্যক্তিরা অন্ধ।
জি.ডি.পি,জি.এন.পি সব
গেলো রসাতলে
বিদেশিরাও মুখ ফেরালো
অস্থিতিশীল বলে।
দুর্ভিক্ষের তেতাল্লিশ এলেও
নয়কো বিবেচনার
সত্যিই হরতাল রাজনীতিকের
চূড়ান্ত হাতিয়ার।
২৭জানুয়ারী ২০১৩
১৩৬,বসুন্ধরা,দর্জিবন্ধ,সিলেট।
৭. কূঁয়ো ব্যাঙ
একদা এক ঘরের কোণে
ছিলো কূঁয়ো ব্যাঙ
দেখতে তাকে যেমন -তেমন
লম্বা লম্বা ঠ্যাং।
খাবার খেতে ঘরের বাহির
কভু না বের হতো
ঘরের কোণে তৈরি করলো
ছোট্ট একটা গর্ত।
এই গর্ততেই বসে থেকে
ক্ষিধে যখন পায়
সামনে পোকা-মাকড় পেলে
তাই ধরে খায়।
এভাবে কি ক্ষিধে মিটে
ঘরের কোণে বসে?
ক্রমে তাহার মৃত্যু হলো
জানতে পারি শেষে।
এ জগতে কূঁয়ো ব্যাঙ এর
সংখ্যা সীমা নাই
কূঁয়ো ব্যাঙ তো ‘ব্যাঙ’ এর মধ্যে
সীমাবদ্ধ নাই।
এক ধরণের মানুষ আছে
কাজ না ভালোবাসে
সারাটা দিন ‘সিডি’ নিয়ে
থাকে ঘরে বসে।
এক ধরণের মানুষ আছে
নববিবাহিত
তাদেরো তো একই দশা
দেখছি কত শত।
উচিৎ কথা বললে তাদের
গায়ে উঠে জ্যাং
তারাও নয়কি বসে থাকা
ঘরের কূঁয়ো ব্যাঙ?
১ জুলাই ২০০৬
১৭৩/বি,দপ্তরিপাড়া, সিলেট।
৮. আমার বাবা
আমার বাবা খুবই প্রিয় মানুষ
প্রায়ই আমাদের করে দিতেন হুঁশ
লেখা, পড়া মন দিয়ে করো
একদিন হবে তোমরাই মহান বড়ো।
শুনে বাবার মুখের মধুর বাণী
ঘুচে গেলো মোর অন্ধত্বের গ্লানি
বাবা আমায় খুবই ভালোবাসেন
তাই পড়ার সময় প্রায়ই
আমার কাছে বসে থাকেন।
বলেন বাবা শুন ওরে বাছা
লেখা পড়ায় হয়োনাকো কাঁচা
পড়ার চেয়ে রত্ন কিছু নাই
মৃত্যু হলেও শান্তি তবু স্বর্গে হবে ঠাঁই।
শুনে বাবার মধুর কন্ঠ স্বর
ঔষধ,বড়ি ছাড়াই আমার ছেড়ে দিতো জ্বর
মনে হতো আমার বাবার বাণী
হাজার টাকার ঔষধের চাইতেও দামি।
শুনলে তাহার হাসি মুহ্য মুহ্য
দুঃখ,জ্বর মোর ভুলে গিয়ে শান্ত হয় দেহ
তাইতো আমি বাবার মুখের হাসি
সব চাইতে বেশী ভালোবাসি।
শুনলে বাবার মধুর কন্ঠের গান
সব কিছু ভুলে গিয়ে শান্ত হয় প্রাণ
বাবা একা গান গাইতো যখন
আমি বাবার পাশে গিয়ে বসে থাকি তখন।
বাবা বলেন ওরে বাছা ধন
আমার মতো গান গাইতে
তোরাও একদিন হবে গায়ক
জানবে সকল জন।
শুনে বাবার মুখের আশির্বাদ
মনে হলো প্রবল শক্তি
এখন আমার হাত
ন্যায়ের পথে চলতে নাহি ভয়
দুর্যোগপূর্ণ বিশ্বটাকে করবোই একদিন জয়।
বাবা বলেন শুনরে ওরে খোকা
খেটে মানুষদেরকে কভু দিসনা ধূঁকা
পারলে দেখা করিস তাদের সাথে
থাকলে টাকা কিনতে কিছু দিবি তাদের সাথে।
তাইতো বলি আমার বাবার কথা
শেষ হবেনা লিখলেও হাজার পাতা।
৪ জানুয়ারী ২০০৫
মল্লিকপুর,সুনামগঞ্জ,সিলেট।
৯.চন্দ্রনাথ
একদা এক বালক ছিল
নাম তার চন্দ্রনাথ
দেখতে অবাক লাগতো তাহার
লম্বা লম্বা দাঁত।
পড়াশোনা করতো না সে
করতো ঘোরাফেরা
দেখতে তাকে যেমন তেমন
দুষ্টুমিতে সেরা।
মানতো না সে কোন কথা
মা-বাবা ভাইয়ের
ঝগড়া করলে মারতো ঘুষি
তার সঙ্গী সাথীদের।
এই কারণে সঙ্গী সাথী
কেউ হতোনা তার
সঙ্গী হলেই তাহার হাতের
খেতে হতো মার।
সঙ্গী,সাথী ছাড়া চন্দ্র
একা একা বেড়ায়
যেখানে শুনে ঝগড়ার খবর
সেখানেই সে যায়।
একদিন মোল্লার পাড়া
লাগলো ভিষণ ঝগড়া
চন্দ্র শুনে দৌড় মারিল
একখান লাঠি লইয়া।
লাঠি দিয়ে করবে আঘাত
কিন্তু হায়রে! হায়!
লাঠির দ্বারা পড়লো আঘাত
তার নাকেরি ডগায়।
কি হয়েছে!কি হয়েছে!
চন্দ্রনাথের নাক ভেঙ্গেছে
মা বাবা তার ছুটে এসে
দেখতে পেলো তাই
এমন আঘাত পেয়েছে চন্দ্র যে
তার প্রাণ বাঁচানো দায়।
০১ এপ্রিল ২০০৫
মল্লিকপুর,সুনামগঞ্জ,সিলেট।
১০. নববর্ষ
নববর্ষ মানে-
নতুন দিনেন সূচনা
নবববর্ষ মানে-
বেঁচে থাকার ব্যঞ্জনা।
তাছাড়া কি-
আর কিছু নয় নববর্ষ?
তাছাড়াও তো রয়েছে আরো
রুপসী বাংলা হর্ষ।
নববর্ষের চেতনায়
চাররদিক মুখরিত হয়
এমন দিনে কারো প্রিয়া কি
নিরালায় বসে রয়?
এমন দিনে মানব জীবনে
লাগে আনন্দের ঢেউ
বিড়াল মশাইও আনন্দে
ডাকে মিউ মিউ।
সেদিন পশু-পাখি সব নিরালায়
বসে বলে প্রিয়জনের কাছে
সুখে দুখে মোরা সকলে সকলের
রবো একই সাথে।
প্রাণ দিতে হয় দিব
তবু অন্যায়ের ডাক
নাহি মানিবো
ন্যায়ের জন্য প্রাণ উৎসর্গ করিবো
থাকিবো সকলের সাথে।
নববর্ষের এই প্রতিজ্ঞা
করিয়া একই সাথে
সাররাটি বছর মিলেমিশে কাটাই
মোরা আনন্দেতে।
পুরনো বছর শেষ হয়ে গেলে
নতুন বছরের ঘটে আগমন
সকলে মিলিয়া মোরা জানাই
নববর্ষকে সুস্বাগতম।
০৬ নভেম্বর ২০০৫
১৭৩/বি,দপ্তরিপাড়া, সিলেট।
১১. একুশ ও বলে
বাংলাদেশের মানুষ আমরা
হয়েছি কতো স্মার্ট
কথার সাথে আকার ভঙ্গীতে
রয়েছে কতো আর্ট।
বাংলার ছেলে বাংলা বলে
নাহি পায় কোনো সুখ
অযথা সালামরা দিয়েছে জীবন
প্রাণে লাগে বড়ো দুখ।
আমিও বলি বুঝেনিকো তারা
হয়েছিল বেসামাল
একুশ ও বলে বীর বাঙ্গালী
হয়েছে ডিজিটাল!
ম্যান ইজ মরটেল নাটকে বললে
খুশি হই অনেক জনে
মানুষ মরণশীল বললে
সুখ নাহি লাগে প্রাণে।
ডিয়ার লিশনার কথাটি এখন
শুনতে লাগে ভালো
প্রিয় শ্রোতা বললে ভাবে
কেনো যে এমন হলো?
শুদ্ধ বাংলা ভাষার ব্যাবহার
হয়ে যায় তাদের কাল
একুশ বলে বীর বাঙ্গালী
হয়েছে ডিজিটাল!
বাংলা গান আর লাগেনাকো ভালো
বাঙ্গালীর সন্তান!
হিন্দি ছবি গানে এখন
ভরে যে সবার প্রাণ।
সিরিয়াল তো আছেই সাথে
সোম থেকে শনিবারে
টাপুর -টুপুর দেখলে আহা!
মনটা সবার ভরে।
বাংলা নাটক দেখলে বাঙ্গালীর
মনে হয় জঞ্জাল
একুশ ও বলে বীর বাঙ্গালী
হয়েছে ডিজিটাল!
বাংলার মাঝে ইংরেজী শব্দ
শুনতে চমৎকার
বলে লোকে শিক্ষিত হয়ে
শিখেছে ভাষার ব্যাবহার!
ভাবেনি তারা এজন্যই কি
একুশ এসেছিল?
আর এজন্যই কি রফিক জব্বার রা
শহীদ হয়েছিল?
বাংহিন্দি,বাংলিশ নিয়ে বাংলা
এই বুঝি তোর হাল
একুশ ও বলে বীর বাঙ্গালী
হয়েছে ডিজিটাল!
১ ফেব্রুয়ারী ২০১৩
১৩৬,বসুন্ধরা,দর্জিবন্ধ,সিলেট।
১২. আশা
এইযে মানুষ,রঙ্গের ফানুস
শ্বাস পুরোলেই শেষ
তবু মানুষ বেঁচে থাকতে
আশার নাইকো শেষ।
এটা করতে, ওটা করতে
না রাখিবো বাকি
শেষ বেলাতে এসে দেখি
সব কিছুতেই ফাঁকি।
মনে বড়ো আশা ছিল
করবো অনেক ভাই
কাজের বেলায়
দেখি আমি সবকিছুতেই ছাই।
তাই বলে কি এজগতে
আশা করতে নেই?
এ পর্যন্ত যা হয়েছে
আশার মাধ্যমেই।
মনে প্রবল আশা রেখে
কাজ করিলে ভাই
বেশি না হোক কম হলেও
সফল হবে সবাই।
আশা নিয়ে কাজ করিতে
সাহস আছে যার
বিশ্বটাকে জয় করিতে
তাকেই এখন দরকার।
কাজ না করে মন মাঝে
যে বা করে আশা
সাফল্য থাক্ দূরের কথা
তার হয় গাঙের পাড়ে বাসা।
২৮জুন ২০০৬
১৭৩/বি,দপ্তরিপাড়া, বসুন্ধরা,সিলেট।
১৩. শ্রমিকের জীবন কথা
ভোরের কাক ডাকছে,ছেলেটি বলছে,মাগো!উঠো…
সকাল হয়ে গেছে
গতকাল বাবা কি এনেছে?
খেতে দাও মা খাবো…
ক্ষিধে,যাতনা আর যে সহে না-বলো মা…,…,
কি এনেছে বাবা?
মা চুপ করে আছে।
চিন্তা করছে গতকাল…গতকাল স্বামীতো ঘরেই ফেরেনি-
কোন বিপদ হয়নিতো?
প্রভু তুমিই তাকে দেখে নিয়ো।
এদিকে সকাল গড়িয়ে গেছে,উদিত রবি মধ্য গগণে
ছেলেটি চিৎকার করছে দুমুটো অন্নের জন্য
মা দু’মুটো ক্ষুদ রেধে বলছে এগুলো খাও বাবা…
তোমার বাবা ফিরলে পায়েস খাওয়াবো।
ধূক ধূক সন্ধ্যা হলো,
ঘরে ফেরেনি-স্বামী।
চিন্তায় ঘরের কোণে বসে আছে রমণী,
হঠাৎ কপাটে কট-শব্দ,চমকিত হয়ে এগুতেই
আবছা আলোয় স্বামীকে দেখতে পেলো রমণী
গত রাতে তুমি কোথায় ছিলে?
কোন কাজ পাইনিতো,তাই সাহেবের বাড়িতেই পড়ে রয়েছিলাম,এগুলো নাও কিছু রাঁধো।
বাবা,বাবা আমার জন্য কি এনেছো তুমি
সন্ধ্যে হয়ে যাওয়ায় আজ কিছু
আনতে পারিনি বাবা
ভাত রাঁধলে আমরা সবাই মিলে খাবো…,…।
১৪. বিজয় তুমি
কতটা দিন চেয়ে আছি
নেই ঘুম,নেই আহার
তবু সুখেই আছি
বিজয় তুমি আসবে বলে।
তোমার জন্য লিখেছি কবিতা
কতদিন -রাত
তোমার জন্য রেখেছি কত
সানকি ভরা ভাত,
শত কষ্টের মাঝেও আছি
আনন্দ বিহব্বলে
বিজয় তুমি আসবে বলে।
তোমায় নিয়ে দেখেছি স্বপ্ন
লিখেছি কতো গান
হোক যতো বড়ই কেহ
নয়কো তোমার সমান।
তোমার জন্য শত বঞ্চনা
ধুয়েছি চোখের জলে
বিজয় তুমি আসবে বলে।
তোমার জন্য লক্ষ,কোটি
করেছে জীবন দান
চলে গেছে অপারে তবু
হারায় নি তাদের মান।
শত অত্যাচার সহ্য করেছি একটি সত্যের বলে
বিজয় তুমি আসবে বলে।
১২ ডিসেম্বর ২০০৭
১৭২/বি,দপ্তরিপাড়া, দর্জিবন্দ,সিলেট।
১৫. একুশ আমার গর্ব
মাতৃভাষা বাংলা আমার
বাংলাতে গাই গান
ভুলবোনা ভাই তাঁদের যারা দিলো
জান কোরবান।
সালাম,বরকত জীবন দিলো
আরো কতো প্রাণ
তাইতো মোরা সকলে গাই
অমর একুশের গান।
আমরা কেনো বিশ্ববাসী
বলছে তাঁদের কথা
এজন্যই তো বিশ্বমাঝে
উঁচু মোদের মাথা।
তাই বলি ভাই করোনা কেউ
এই সম্মানটা খর্ব
একুশ আমার গর্ব- রে ভাই
একুশ আমার গর্ব।
০৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৩
১৩৬,বসুন্ধরা,নায়নগর,সিলেট।
১৬. ঝগড়া
শুনো হে মানুষ ভাই
মানুষে মানুষে ঝগড়া করতে নাই
আজকের এই বিশ্বখানি
শুধু অস্ত্রের ঝন-ঝনানী
লাভ হয়েছে কতো খানি
তা ভেবে দেখে নাই।
সৃষ্টির সেরা জীব মানুষ
তাই তাকে হতে হবেই হুঁশ
অন্যায়কে করতে হবে তুষ
এছাড়া আর উপায় নাই।
খুন, জখম,হত্যা করা
নিজের মরণ নিজে মরা
একদিন কাঁদতে কাঁদতে হবে সারা
এমন নির্বোধ কোথায় পাই?
এ যুগে হয়েছে যারা খুনি
তাররা ভাবতে পারে জ্ঞাণী
মরণ ডেকে আনছে কতখানি
সেদিকে তাদের লক্ষ নাই।
সহজ সরল পথে চলা
ন্যায়ের পথে কথা বলা
কাউকে না করা অবহেলা
সেই লক্ষ মোদের হওয়া চাই
মানুষে মানুষে ঝগড়া করতে নাই।
৪ জানুয়ারী ২০০৫
১৩৬,বসুন্ধরা,রায়নগর,সিলেট।
১৭.দুর্দান্ত একুশ
আমি তখন দ্বিতীয় শ্রেণীতে পড়ি,
বাবার সাথে গেলুম ফুল নিয়ে
দেখলুম হাজার-হাজার লোক সকলে অবনত মস্তকে
পুষ্পস্তবক অর্পণ করছে রক্তিম সূর্যশোভিত একটি মিনারে
তখনও বুঝতে পারিনি- দিনটিতে কি হয়েছিলো?
বাবার মুখে শুনলোম দিনটি ছিলো সেই দিন-
যেদিন সালাম, রফিকের বুকের তাজা রক্ত ঢেলেছিলো
আমাদের মায়ের ভাষা,বাংলা ভাষার জন্য
দিনটি ছিলো সেইদিন-
যা আমাদেরকে সাহস যুগিয়েছিলো
পরাধীনতার শৃঙ্খল ভেঙ্গে মুক্তির আন্দোলনে যোগ দিতে
দিনটি ছিলো সেইদিন-
যা আমাদেরকে প্রেরণা যুগিয়েছিলো-
দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে
বাংলার চূড়ান্ত বিজয়কে চিনিয়ে আনতে।
শুনে শিউরে উঠলুম।
এরপর আর বুঝতে বাকি রইলোনা-
যে দিনটি আমাদেরকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ শিখিয়েছিলো। যে দিনটি শিখিয়েছিলো ন্যায়ের জন্য আত্ম ত্যাগ করতে। সেই দিনটির নাম শুধু একুশ হবে কেনো?
সেই দিনটির নাম হবে’ দুর্দান্ত একুশ’।
সেই থেকে আজ অবধি পথ চলা
সবার পেছনে থাকা যে রোগা ছেলেটির
অস্পষ্ট কথা আর ভীত,সন্ত্রস্ত প্রাণ
যে ছেলেটি বার্ষিক পরীক্ষায় ভালোভাবে পাস ও করতে পারতো না। সেই ছেলেটি আজ বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ালেখা করছে।
শুধু একটাই বিশ্বাস,একটাই প্রেরণা- আমি সেই মায়ের ছেলে, সেই মায়ের সন্তান, যে দেশের মাটিতে শহীদের পবিত্র রক্তে তৈরি হয় মিনার,গোলাম মাহবুব,ধীরেন্দ্রনাথ,গাজীউল হক, শেখ মজিবুর রহমানের মতো বীর সৈনিকদের দুর্দান্ত নেতৃত্বে
তৈরি হয় একটি অবিস্মরণীয় দিন’ দুর্দান্ত একুশ’।
আজকে যখন কবি সেলিনা হোসেনের কথায়,
মাহিদুল ইসলামের আবৃত্তিতে আর মহাদেব সাহা’ র কবিতায়, একুশকে উপলদ্ধি করি,তখন হৃদয় থেকে সত্যিই বার বার একটি কথাই উচ্চারিত হয়,একটি শব্দই ধ্বনিত হয়, তুমিই সেই বাঙালির বীরত্ব
তুমিই সেই অমূল্য স্বাধীনতার অগ্রপথিক
চির স্মরণীয় ‘ দুর্দান্ত একুশ’।
২৫ জানুয়ারী ২০১৩
১৩৬,বসুন্ধরা,দর্জিবন্ধ,সিলেট।
১৮. শাহজালাল বাবার মাজার
সিলেট শহর পূণ্যভূমি
সবলোকেরাই বলে
আমরাও বলি পূন্যভূমি
হিন্দু-মুসলিম মিলে।
সিলেটিরা গর্ব করি ‘আমরা সিলেটি’
সব দিকেতেই সেরা আমরা
মূল রহস্য কি?
কিসের জন্য সেরা হলাম
ভেবেছো কি একবার?
শাহজালাল বাবার মাজার।
আরো আছে মাধবকুণ্ড
পড়ে ঝর্ণার পানি
দেখতে ইচ্ছুক সব মানুষই
একথাটা মানি
আসবার পথে কিসের কথা
মনে পড়ে সবার?
শাহজালাল বাবার মাজার।
ভিন সিলেটি যদি কেহ
চায় সিলেট বেড়াতে
বাসা থেকে আসার আগে কি বলে দেখতে?
সিলেট এসে কত রঙের
দৃশ্য দেখতে পায়
শেষে হলেও কোথায় এসে
দোয়া আশীর্বাদ চায়?
কোথায় বসলে শান্তি লাগে
দুখ লাগেনা,আর
শাহজালাল বাবার মাজার।
সিলেটিরা লোক ভালো নয়
যেমনি সত্য নয়
সিলেটিরাই শুধু ভালো
তেমনি সত্য নয়
তবুরে ভাই আমরা দেখি
নির্বাচনের কালে
দোয়া,দুরদ পড়তে আসে
সবাই সদল-বলে,
প্রথমেই সিলেটের দোয়া
এই কৃতিত্ব কার?
শাহজালাল বাবার মাজার।
২৫ ফেব্রুয়ারী ২০১৩
১৩৬,বসুন্ধরা,দর্জিবন্ধ,সিলেট।
১৯. সূর্য সন্তান
কাঁপছে অবনী পাপের ভারে
তমশা ঘনিছে নাহিক দূরে
তাহলে কি হায়!পাবোনা উপায়
কেহ কি দিবে পরিত্রাণ?
সে আর কেহ নয় বাংলার সূর্য সন্তান।
চারদিকে আজ বোমার ছোবল
তাই দেখে আজ কাঁদিছে আঁচল
একি প্রভু হে জগদ্বীশ্বর
কে রাখিবে তোমার মান?
সে আর কেহ নয় বাংলার সূর্য সন্তান।
নিশাকর কহে ওহে তপন
জানোকি কেনো হচ্ছে এমন?
উপায় কি আছে দেখ ভাই
যে রাখিবে মেদিনীর প্রাণ
সে আর কেহ নয় বাংলার সূর্য সন্তান।
অর্ণব কহে ওহে শ্রোতস্বিনী
রক্তের খেলায় মেতেছে ধরণী
চারদিকে আজ শুধু হানাহানি
রাখিবে কি কেহ জগদ্বীশের মান?
সে আর কেহ নয় বাংলার সূর্য সন্তান।
ভূজঙ্গ কহে ওহে মাতঙ্গ
বসুন্ধরা হলো বুঝি সব লন্ডভন্ড?
আছে কি কেহ বেরুবে সাহসে
রক্ষিবে মোদের জান
সে আর কেহ নয় বাংলার সূর্য সন্তান।
অম্বর শুধায় ওহে পবন
ক্ষণ মুহুর্তে যাবে কি জীবন?
দেবে কি কেহ মেদিনীর তরে
আপন জান কোরবান?
সে আর কেহ নয় বাংলার সূর্য সন্তান।
২৮ ডিসেম্বর ২০০৭
৭২/বি,দপ্তরিপাড়া, সিলেট।
২০. সুখ
সুখ পাখিটির দেখা পেতে
সবাই খুঁজে মরে
তবু কেনো পায়না সুখ তা
খুব সামান্যে জানে।
কেহ বলে পাবে দেখা
ধৈর্য্য ধরো তবে
ধৈর্য ধরে করলে কর্ম
সুখ এমনি চলে আসবে।
মানি তোমার মহৎ বুলি
কথা মন্দ নয়
এ জগতে ধৈর্য ধরবার
মানুষ ক’জন হয়।
সকলেই চায় সুখি হতে
এজগতে ভাই
সুখপাখি যে কেমনে আসে
তাহার খবর নাই।
যারা শুধু পাইতে চায় সুখ
কর্ম না করে
দেখা গেছে তারাই আগে
সুখ-সুখ করে মরে।
পাবে কিসে?কাজ না করে
কথায় কি আর হয়
সুখ পাখি তো তাদের কেনা
হাতের মোয়া নয়।
তাইতো বলি সুখ-সুখ করে
আর কেঁদোনা ভাই
কর্মের মত প্রকৃত সুখ
এজগতে নাই।
০১ জুলাই ২০০৭
৫,বসুন্ধরা,রাজবাড়ি,সিলেট।
২১. বোমা!
বোমা! বোমা! বোমা!
ফুটলো বুঝি বোমা
মারছে বোমা একের পর এক
নাই তার কোন সীমা।
রাতে যখন ঘুমুতে যাই
মনে হয় যে ভাই
ঘুম থেকে যে জাগতে পারবো
নিশ্চয়তা নাই।
লেখা,পড়ায় বসতে গেলে
মনে পড়ে যায়
এই বুঝি হায়!ত্রাসের বোমা!
ফুটলো আমার গায়।
রাস্তা, ঘাটে কোন আওয়াজ
শুনতে পেলে ভাই
মনে ভাবি ফুটছে বোমা!
আর রক্ষা নাই।
কাজে কর্মে মন বসেনা
চিন্তা করি হায়!
শেষ পর্যন্ত মরণ হবে
হাইড্রোজেন বোমায়!
এভাবে কি এ দুনিয়ায়
বেঁচে থাকা যায়
বাঁচতে হলে বাঘের মত
সাহস থাকা চাই।
হতে পারে বোমাবাজরা
পরম শক্তিশালী
সবাই মিলে ভাঙতে হবে
‘গড’ ফাদারদের জালি।
সুখ চাইলে দুখগুলো সব
সয়ে নিতে হয়
তাহলে তো বিশ্বটাকে
করা হবে জয়।
০৩ জুলাই ২০০৬
১৭৩/বি,দপ্তরিপাড়া, সিলেট।
২২. হাওর
হাওর পাড়ে বাসা আমার
হাওর পাড়ে বাড়ি
চৈত্রমাসে ফসলের ক্ষেত
দেখতে মনোহরি।
বর্ষাকালে হাওর মাঝে
ঝিলমিল করে পানি
সেই পানিতে ট্রলার নিয়ে
চলি উজান ভাটি।
মাঝদুপুরে হাওর মাঝে
ধরে মাছের খাঁজা
তুঁড়ি দিয়ে মাছ ধরতে ভাই
লাগে ভারী মজা।
তারপরে ভাই কত রঙ্গের
শাপলা ফুল ফুটে
মুট ভরিয়া ফুল তুলিয়া
নৌকা লাগাই ঘাটে।
শাপলা ফুল আর মাছের ঝুল ভাই
খেতে খুবই মজা
এমন স্বাদ আর ভুলবো নাকো
যদিও খাই পিজা।
হেমন্তে ভাই হাওর মাঝে
আমরা সিঁচি ডোবা
নানান রঙ্গের মাছ দেখে তাই
সকলেই হই বোবা।
বিশ্বাস আর অবিশ্বাস করা
রইলো তোমার উপর,
একবার হলেও যাইবা তোমরা
দেখতে মোদের হাওর।
৩ ফেব্রুয়ারী ২০১৩
১৩৬,বসুন্ধরা,দর্জিবন্ধ,সিলেট।
২৩. সাধের স্বাধীনতা
কবির কাব্যে, উপন্যাসে
লিখব কত দুঃখ কথা
একাত্তরে যুদ্ধ হলো
জীবন দিল আম জনতা,
হারে সাধের স্বাধীনতা!
দেশের তরে যুদ্ধ করে
মরল কতো অকাতরে,
আরো কতো পঙ্গু হয়ে
মরাই এখন লক্ষ্য গাঁথা,
হায়রে সাধের স্বাধীনতা!
বীরের মত যুদ্ধ করে
জান-টাকে ভাই বাজি ধরে,
করেও স্বাধীন এদেশটাকে
নেইকো এখন নিরাপত্তা।
একাত্তরের বীর জনতা
চাইলি যা তুই পাইলি কি তা?
ছিল মনে প্রবল আশা
জুটল কেবল ছেড়া-কাঁথা।
ভেবেছিলাম দিনে -রাতে
গড়বো এদেশ নিজের হাতে,
অবরোধের খেসারতে
জুটল কেবল র্যাবের গুঁতা,
হায়রে সাধের স্বাধীনতা!
বাঁচবো কিনা আরো কয়দিন
সব-ই এখন তাঁদের অধীন,
দম-টা আছে আর যতোদিন
পাইতে চাই ভাত নিশ্চয়তা,
হায়রে সাধের স্বাধীনতা।
২৭ জানুয়ারী ২০১৩
১৩৬,বসুন্ধরা,দর্জিবন্ধ,সিলেট।
২৪.সাবাস বাঙালী
সাবাস বাঙালি সাবাস
সত্যি বলতে হয়
দুর্যোগপূর্ণ বিশ্বটাকে
করবেই একদিন জয়।
জয়ের মালা চিরদিনই
হবে তোমাদের জানি
সকল বাঁধা পেরিয়ে মুছে দেবে
অন্ধত্বের গ্লানি
তোমাদের হৃদয়ে দেখতে পাই
সেই উচ্ছ্বল, উল্লাস
সাবাস বাঙালি সাবাস।
তোমরাই হবে বীর বাঙালী
এই ধরণীর বুকে
বিশ্ববাসী অবাক হয়ে
দেখবে তোমাদেরকে
তোমরাই ধ্বংস করবে একদিন
পৃথিবীর সব ত্রাস
সাবাস বাঙালি সাবাস।
তোমরাই হবে সর্বসেরা
সর্বগুণীজন
তোমাদের দ্বারা সকল কাজে
ভরবে সবার মন
তোমাদের পথ চলায় যেনো
কাঁপবে আকাশ-বাতাস
সবাস বাঙালি সাবাস।
৭ জুলাই ২০০৬
১৭৩/বি,দর্জিবন্ধ,সিলেট।
২৫.রাজ পথ
আমি রাজ পথ
কি বলিব কবিতার ভাষায়। ভোর না হতেই অযুত যান-বাহন অবিরাম,দ্বি- প্রহর,কখনো ত্রি-প্রহর চলে মোর মাথায়। মাঝ দুপুরে খড় রোদে বুক জ্বলে মোর দ্গ্ধ হয়
তবু নিষ্ঠুর মানব হায়! আমার উপকারের কথা নাহি কয়।
রোদের দহনে,গাড়ির ঘর্ষণে আজো বেঁচে আছি
বেঁছে থাকবো, মানবের হিতের তরে,
আমার প্রাণ অকাতরে সব টুকু বিলিয়ে দেবো।
তবু কেন হায়!লোকে বলে যায়
পৃথিবীতে নেই কোন নিঃস্বার্থ প্রেমিক
আমি যে আমার প্রাণ,মানবেরে করলাম দান
তার কি দাম নেই একটু খানিক।
আমার এই উপকার খানি,যদি লোকের মুখে শুনি
তাহলেই তো ধন্য আমি,
ক্লেশ দুঃখ রবেনা আর
সকল দুঃখ ঘুছিবে আমার।
৯ জুলাই ২০০৫
প্রত্যয় ৭২বি,রায়নগর,সিলেট।
২৬. মনাই নদী
ভোর না হতেই জিজ্ঞাসিতাম
ওগো ঠাকুর মা
মনাই নদীর তীরে আমায়
নিয়ে চলনা।
বলতেন আমায় পরে যাবো
আমার ঠাকুরমায়
সাতসকালে নদীর তীরে
যাওয়া নাহি যায়।
নদীতে সব কুমীরগুলো
হা করিয়া থাকে
সকালে যে আগে যাবে
খাবেই আগে তাকে।
কুমীরের নাম শুনে আমি
যদিও ভয় পাই
তবু ঠাকুর মায়ের কথা
আমি শুনি নাই।
বল্লাম আমি শেষ কথাটা
শুনো ঠাকুরমা
আজ না গেলে আর কখনো
তোমায় ডাকবো না।
কি আর করবে ভেবে চিন্তে
আমার ঠাকুরমায়
প্রত্যহ সকাল বেলায়
হেথায় নিয়ে যায়।
মনাই নদীর মিষ্টি পানি
খেতে লাগতো মজা
এমন স্বাদ আর কোথাও নেই
যদিও খাই ফিজা।
গোসল করলে ঐ নদীতে
যেনো মনে হয়
শত বিপদ থাকলে পরেও
প্রাণটা শীতল হয়।
ভাটিয়ালী সুরে আমার
প্রাণটা ভরে যায়
এমন শান্তি মনে হয়
এমন শান্তি মনে হয়
আর কোথাও নাই।
বিকেল বেলা ঘুড়ি নিয়ে
যেতাম নদীর ধারে
দেখতাম জেলেরা অনেক
জাল দিয়ে মাছ ধরে।
কত রঙের মাছ দেখে ভাই
পেতাম বড়ো সুখ
এজন্যই তো আজো আমার
কাঁপে পাষাণ বুক।
মনাই নদীর কথা এখন
যদি বলে কেউ
বুঝি আমার প্রাণে লাগে
তাঁর সোনালী ঢেউ।
তাইতো বলি ওগো প্রভু
জানাই তোমার তরে
শেষ ঠিকানা দিয়ো মোরে
মনাই নদীর তীরে।
০৭ জুলাই ২০০৬
০৫,বসুন্ধরা,রাজবাড়ি,সিলেট।