পীর হাবিবুর রহমান।। Peer Habibur Rahman

0
273

সুনামগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার কুরবান নগর ইউনিয়ন এর মাইজ বাড়ী গ্রামের কৃতি সন্তান, মাননীয় সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ ভাই এর বড় ভাই খ্যাতিমান সাংবাদিক, কলামিষ্ট,বাংলাদেশ প্রতিদিন এর নির্বাহী সম্পাদক পীর হাবিবুর রহমান।

৫ ফেব্রুয়ারী ২০২২,শনিবার বিকাল ৪ টা ৮ মিনিটে এই বরণ্যে সাংবাদিক শেষ নিঃস্বাস ত্যাগ করেন।তার এই অকাল মৃত্যুতে হাওর সাহিত্য উন্নয়ন সংস্থা (হাসুস) বাংলাদেশ ও তার প্রতিষ্ঠাতা হাওরকবি জীবন কৃষ্ণ সরকার গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।এছাড়া বিভিন্ন সাংবাদিক মহল থেকে শুরু করে সর্বস্থরের জন্য জনগণ জনাব পীর হাবিবুর রহমানের জন্য শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন।

নিচের লেখাটি সুনামগঞ্জ মিরর পত্রিকা থেকে সংগৃহিত

জলজোছনার মায়া ছড়ানো, সবজে ঘেরা শান্ত শহর সুনামগঞ্জে পীর হাবিবুর রহমানের জন্ম। ১৯৬৩ সালের ১২ নভেম্বর রইস আলী পীর ও সৈয়দা রহিমা খাতুনের ঘরে জন্ম নেন তিনি।

বেড়ে ওঠেন সুনামগঞ্জে। সুনামগঞ্জের মাটিতে কাটিয়েছেন দুরন্ত শৈশব ও কৈশোর। সরকারি জুবিলী উচ্চ বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছেন। আজীবন ভালোবেসেছেন সুনামগঞ্জের জলজোছনা। সুনামগঞ্জ তাঁর প্রথম প্রেম হলে দ্বিতীয় প্রেম ছিল রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস। বিভিন্ন লেখায় প্রায়ই স্মৃতিচারণ করতেন মতিহারের।
রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতকোত্তর পীর হাবিবুর রহমান ১৯৮৪ সালে মতিহারেই সাংবাদিকতায় হাতেখড়ি নেন। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসক্লাবের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা এই সাংবাদিক ১৯৮৫ সালে সেনাশাসন বিরোধী আন্দোলনে গ্রেফতার হয়ে কারাবরণ করেন।

‘৯২ সাল থেকে বাংলাবাজার পত্রিকা ও ‘৯৯ সালে যুগান্তরের নির্মাণ বিনির্মাণ পর্বে রাজনৈতিক রিপোর্টার হিসেবে খ্যাতি লাভ করেন। তার হাত দিয়ে রাজনীতির অন্দরমহলের চিত্রপট উঠে এসেছে। অনুসন্ধিৎসু পাঠকের তৃষ্ণা নিবারণ করেছেন আলোচিত সব খবর দিয়ে।

১/১১-এ আমাদের সময়-এ আলোচিত কলামিস্ট হিসেবে পাঠক মহলে নিজেকে উন্মোচিত করেন। তার ঢাউস সাইজের এক- একটি কলাম ঘিরে সেই সময় বিতর্কেরও ঝড় ওঠে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক হিসেবে সাহিত্যের রসবোধে তার এক- একটি কলাম ভাষাশৈলীতে পাঠককে টেনে নিয়ে যায় চিন্তার জগতে।
আমাদের সময়-এ কিছুদিন উপ-সম্পাদক পদে কাজ করেছেন। দীর্ঘদিন বাংলাদেশ প্রতিদিন-এ নির্বাহী সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন। দলীয় বৃত্তের বাইরে প্রথাবিরোধী এই লেখক নিজের মতো করে চলতে পছন্দ করতেন।

পীর হাবিবুর রহমানের বড়ভাই অ্যাডভোকেট মতিউর রহমান পীর সুনামগঞ্জ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি। আইনচর্চার পাশাপাশি তিনি রেডক্রিসেন্টের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে কাজ করছেন। ছোটভাই অ্যাডভোকেট পীর ফজলুর রহমান মিসবাহ সুনামগঞ্জ-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বিরোধীদলীয় হুইপ।

আহনাফ ফাহমিন অন্তর ও রাইসা নাজ চন্দ্রস্মিতা, পীর হাবিবুর রহমানের দুই সন্তান। সাংবাদিকতার পাশাপাশি পীর হাবিবের প্রকাশিত বই হচ্ছে- অফ দ্য রেকর্ড, এক্সক্লুসিভ, টক অফ দ্য প্রেস, ভিউজ আনকাট, মন্দিরা (উপন্যাস) ও বুনোকে লেখা প্রেমপত্র।

সুনামগঞ্জের এই কৃতিসন্তান, জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক পীর হাবিবুর রহমান ৫ ফেব্রুয়ারি ২০২২ ইংরেজি তারিখে মৃত্যুবরণ করেন।

তিনি বোনম্যারো ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। গত বছরের অক্টোবরে মুম্বাই জাসলুক হাসপাতালে বোনম্যারো ট্রান্সপ্লান্টেশনের মাধ্যমে ক্যানসার মুক্ত হন। কিন্তু গত ২২ জানুয়ারি তিনি করোনায় আক্রান্ত হন। এরপর ল্যাবএইড হাসপাতালে ভর্তি হন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় করোনামুক্ত হলেও কিডনি জটিলতার কারণে পীর হাবিবুর রহমানকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শুক্রবার সন্ধ্যায় স্ট্রোক করলে তাকে ল্যাবএইড হাসপাতালের আইসিইউতে স্থানান্তর করা হয়। সেখান থেকেই তিনি না ফেরার দেশে চলে গেলেন।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে