জাতীয়করণ চেয়ে চিঠি-১

0
239

জাতীয়করণ চেয়ে প্রধামন্ত্রী বরাবর অধ্যক্ষের একটি হৃদয় বিদারক চিঠি ”

বেসরকারি স্কুল, কলেজ , মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষক কর্মচারীদের মুজিব শতবর্ষে জাতীয়করণ চেয়ে মাননীয় প্রধান মন্ত্রী বরাবর করুন আর্তনাতে মর্মস্পর্শী খোলা চিঠির মাধ্যমে আবেদন জানিয়েছেন বাংলাদেশ কলেজ শিক্ষক সমিতি (বাকশিস) বরিশাল জেলার সভাপতি ও বরিশাল জেলার উজিরপুরের গুঠিয়া আইডিয়াল ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ এস এম তাইজুল ইসলাম।নিচে হাওরপিডিয়ার পাঠকদের জন্য চিঠিটি হুবহু তুলে ধরা হলো:

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,
প্রথমে মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে বেসরকারি শিক্ষকদের পক্ষ থেকে আপনাকে প্রানঢালা অভিনন্দন। আশাকরি আল্লাহর রহমতে সুস্থ এবং ভালো আছেন।

মা জননী গো!
আমরা বেসরকারি শিক্ষক, আপনার কাছে গিয়ে কথা বলতে পারছি না সে জন্য কিছু কথা ফেইসবুক এর মাধ্যমে জানালাম। সাবেক শিক্ষা সচিব এন আই খান বলেছেন -“মেধা তৈরীর নিপুন কারিগর হলো শিক্ষক।” আর ভালো ছাত্ররা যদি এই পেশায় না আসে, তাহলে ভালো শিক্ষাও দিতে পারবে না। আগামী দিনের রাষ্ট্র পরিচালনায় দেখা দিবে সংকট। বেসরকারি প্রাইমারিতে কোনো আয় ছিল না তারপরেও আপনি ২৬ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় সরকারি করে যেমনি ইতিহাস গড়েছেন তেমনি আপনি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা পর্যায়ের সকল বেসরকারি স্কুল, কলেজ , মাদ্রাসা ও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও সরকারি করে আর একটি ইতিহাস গড়ে যাবেন। বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আয় আছে এবং এ আয় যদি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয় তাহলে সকল প্রতিষ্ঠান সরকারি বা জাতীয়করণ করতে সরকারের
একটি টাকাও অতিরিক্ত ব্যয় হবেনা। যদি দয়া করে হিসাব টা একটু দেখেন- EMIS এর তথ্যানুযায়ী স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা ও কারিগরি সব মিলে প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৩৯,০৯২ টি। মোট শিক্ষক সংখ্যা ৫,০৬,৬৩৭ জন। সরকার বছরে বেতন দিচ্ছে -১,৫২৫ কোটি টাকার মত। স্কুল, কলেজ, মাদ্রাসা, কারিগরি সহ মোট শিক্ষার্থী হলো-১,৬২,৬৩,৭২৪ জন। এই বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থীদের বেতন যদি ২০/-টাকা করা হয় তাহলে প্রতি মাসে আসে – (১,৬২,৬৩,৭২৪ জন* ২০ টাকা)=৩২,৫২,৭৪,৪৮০/-টাকা। বছরে আসে-(৩২,৫২,৭৪,৪৮০/-টাকা*১২)= ৩৯০,৩২,৯৩,৭৬০/- টাকা । সেটা সবই রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হবে। সরকার প্রদত্ত টাকার সাথে যদি এ আয় যোগ করা হয় তবে সব প্রতিষ্ঠান সরকারি করেও অর্থ থেকে যাবে। বর্তমান বাজার মূল্যে বেতন যদি ৫০/- টাকাও করা হয় তাতে মোটেও বেশি হবেনা। আর ৫০/-টাকা বেতন হলে টাকার পরিমান দাড়ায়(১,৬২,৬৩,৭২৪ জন*৫০ টাকা)=৮১,৩১,৮৬,০০০/- টাকা। বছরে আসে-(৮১,৩১,৮৬,০০০/- টাকা*১২)= ৯৭৫,৮২,৩২,০০০/- টাকা । এতে শিক্ষক-কমৃচারীদের বেতন পরিশোধ করার পরও অতিরিক্ত যে টাকা থাকবে তা দ্বারা অবকাঠামো নির্মাণকাজের জন্য ব্যয় করা যাবে এবং পেনশনের জন্য জমা রাখা যাবে। চাকুরি সরকারি হলে এবং বেশি বেতন পেলে ভালো ও মেধাবী শিক্ষাথীরা এই পেশায় আসবে। একজন ভালো শিক্ষক একটা ভালো জাতি উপহার দিতে পারবে।
২০২০ শিক্ষাবর্ষ থেকে এসএসসি-এইচএসসি’র যে ২ বিষয়ের পরীক্ষা থাকছে না
মা জননী!
বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ প্রফেসর সিরাজুল ইসলাম বলেছেন , “শিক্ষা ব্যবস্থা জাতীয়করণ ছাড়া জাতির উন্নয়ন সম্ভব নয়। প্রধানমন্ত্রী এগিয়ে আসলে শিক্ষানুরাগীরাও এগিয়ে আসবেন।’’ মহাপরিচালক নোমানুর রশীদ বলেন -“শিক্ষা যদি হয় জাতির মেরুদণ্ড, তাহলে শিক্ষক হচ্ছে প্রান ভোমরা।’’ তিনি ১৯৭৭সাল থেকে এই কথাটাই বলে আসছেন। আশাকরি শিক্ষার গুনগত পরিবর্তনের জন্য আপনি আমাদেরকে নিরাশ করবেন না।

মা জননী গো!
মুজিব শতবর্ষে সকল বেসরকারি শিক্ষক সমাজ আপনার মুখের দিকে তাকিয়ে আছে একটি ঘোষণার আশায় আর তা হলো- “বেসরকারি শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ করা হলো।”

বিনীত নিবেদক,
এস. এম. তাইজুল ইসলাম,
অধ্যক্ষ গুঠিয়া আইডিয়াল ডিগ্রি কলেজ গুঠিয়া,
উজিরপুর, বরিশাল।
জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।
মুজিব শতবর্ষে, জয় হোক শিক্ষা ব্যবস্থার।

“দয়া করে বেশি করে শেয়ার করবেন”

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে