হর-পার্বতীর আদরের ছোট পুত্র কার্তিক। গণেশ তাঁর দাদা। তবে কোনও কোনও পুরাণে কার্তিককে বড় এবং গণেশকে ছোট পুত্র বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এসব নিয়ে নানা মতপার্থক্যও আছে। কার্তিক দেবসেনাপতি। তারকাসুরের অত্যাচার থেকে বাঁচার জন্য দেবতারা একজন শৌর্য-বীর্যসম্পন্ন দেবসেনাপতির খোঁজ করছিলেন। অবশেষে সকলে মিলে মহাদেবের শরণাপন্ন হলেন তপস্যা ভঙ্গ করে অন্তত যাতে একটা পুত্র তিনি দেবতাদের উপহার দেন। এতে শিব সম্মত হয়ে পুত্রলাভের নিমিত্ত পার্বতীর কাছে যান। কিন্তু শিবের মনোবাসনা পূর্ণ হওয়ার পূর্বেই দেবতারা তাঁর দরবারে হাজির হলেন। মহাদেবের তেজ গিয়ে পড়ল পৃথিবীতে। বসুন্ধরা এই তেজ সহ্য করতে না পেরে তা অগ্নিতে নিক্ষেপ করলেন। অগ্নি আবার সেই মহাতেজ শরবনে নিক্ষেপ করলেন। আর এই শরবনেই একটি সুন্দর সন্তানের জন্ম হল। ঠিক এই সময় ছয়জন কৃত্তিকা(অগ্নির ছয় পত্নী) সেই পথ দিয়ে যাচ্ছিলেন।
আরও পড়ুন: হুজুগ বাড়ছে কার্তিকেরও, পুরোহিত মেলা ভার
Advertisement
তাঁরা শিশুসন্তানটিকে আদর করে বাড়ি নিয়ে গিয়ে মানুষ করতে থাকেন এবং স্নেহ ভরে নাম রাখেন কার্তিক। কার্তিকের অন্য নাম হল স্কন্দ, কুমারেশ, কুক্কুটধ্বজ প্রভৃতি। কার্তিকের দেহ তরুণ সূর্যসদৃশ, জ্যোতিস্বরূপ, সুকুমার, তপ্তকাঞ্চনবর্ণ, শক্তিধারী, দ্বিভুজ, উন্নত চক্ষু।তিনি সর্বদা সৈন্যদলের পুরোভাগে অবস্থান করেন। কার্তিকের জন্ম নিয়ে আরও নানা কাহিনি প্রচলিত আছে। যাই হোক, পরে পার্বতী অতি সুন্দর ও লাবণ্যময় কার্তিকের জন্মসংবাদ পেয়ে তাঁকে বাড়ি নিয়ে আসেন।
ময়ূর কার্তিকের বাহন। ময়ূর ভারতের জাতীয় পাখি। অসাধারণ কর্মতৎপর এই পক্ষী খুবই সুন্দর দেখতে। সৈনিক পুরুষের নানা গুণ ময়ূরকে বাহন করতে সাহায্য করেছে। ময়ূর খুব সামান্যই নিদ্রা যায়। সর্বদা সতর্ক। আলস্যহীন। ময়ুরের স্বজনপ্রীতি লক্ষণীয়। সৈনিক পুরুষ ময়ূরের মতো অনলস, কর্মকুশল এবং লোকপ্রিয় হবেন তা বলাই বাহুল্য। তাছাড়া, ময়ূর মেঘ দেখলে যেমন আনন্দে পেখম তুলে নৃত্য করে, তেমনই ধীর ব্যক্তি শত বিপদেও উৎফুল্ল থাকবেন। সম্ভবত এই সব কারণেই কার্তিকের বাহন ময়ূর।