আলী আমজাদের ঘড়ি।Ali Amzad’s Ghori।

0
214

আলী আমজাদের ঘড়ি
আলী আমজাদের ঘড়ি: কীন ব্রীজের পাশেই চাঁদনীঘাটে রয়েছে সিলেটের আরেক ঐতিহ্য আলী আমজাদের ঘড়ি। কীন ব্রিজ থেকে নীচের দিকে তাকালে, চাঁদনী ঘাটের কাছেই চোখে পড়ে আলী আমজাদের ঘড়ি। উনবিংশ শতকের একটি স্থাপনা, যা মূলত একটি বিরাটাকায় ঘড়ি, একটি ঘরের চূড়ায় স্থাপিত। কর্তৃপক্ষের খামখেয়ালীপনা আর অবহেলায় সিলেটের এ প্রাচীন ঐতিহাসিক নিদর্শন ঘড়িঘরটি এখন অচল অবস্থায় পড়ে আছে। ঘড়িটি নির্মিত হয় ১৮৭৪ সালে। সে সময় তৎকালীন বড়লাট লর্ড নর্থ ব্রুক সিলেট সফরে এলে তার সম্মানে এ ঘড়ি নির্মাণ করা হয় আলী আমজাদের জমিদারীর তহবিলের অর্থ থেকে। তাই এ ঘড়িটি আলী আমজাদের ঘড়ি হিসেবেই পরিচিত। ঘড়ির ডায়ামিটার আড়াই ফুট এবং ঘড়ির কাঁটা দুই ফুট লম্বা। এ অঞ্চলে যখন ঘড়ির অবাধ প্রচলন ছিল না, মানুষ সূর্যের দিকে তাকিয়ে সময় আন্দাজ করতো, ঠিক সে সময় এ ঐতিহাসিক ঘড়িঘরটি নির্মিত হয়। সে আমলে মানুষজন শহরের প্রবেশপথে স্থাপিত ঘড়িঘরের সময় দেখে শহরে আসা-যাওয়া ও কাজকর্ম সম্পাদন করতেন। লোহার খুঁটির ওপর ঢেউটিন দিয়ে সুউচ্চ গম্বুজ আকৃতির এ মনোরম স্থাপত্যশৈলীর পরিচায়ক ঘড়িঘরটি তখন থেকেই আলী আমজাদের ঘড়িঘর নামে পরিচিতি লাভ করে। বিরাট আকারের ডায়াল ও কাঁটা সংযুক্ত সুবিশাল ঘড়িটির ঘণ্টাধ্বনি শহরের বাইরে অনেকদূর থেকেও শোনা যেত। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন হানাদার বাহিনীর গোলার আঘাতে এই প্রাচীন ঘড়িঘর বিধ্বস্ত হয়। স্বাধীনতার পর সিলেট পৌরসভা ঘড়িটি মেরামতের মাধ্যমে সচল করলেও কিছুদিনের মধ্যেই ঘড়ির কাঁটা বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৮৭ খ্রিস্টাব্দে আলী আমজদের ঘড়ি মেরামত করে পুনরায় চালু করা হয়। এসময় ঘড়িটি চালু করার পর ঢাকার একটি কোম্পানীর কারিগররা ঘড়িটি চালু রাখার জন্য রিমোট কন্ট্রোলের ব্যবস্থা করে দেয়। পৌর চেয়ারম্যানের অফিসকক্ষ থেকে রিমোট কন্ট্রোলের মাধ্যমে ঘড়ির কাঁটা ঘুরতো। কিন্তু দুই-চার বছর যেতে না যেতেই ঘড়ির কাঁটা আবার বন্ধ হয়ে যায়। এরপর সিজান কোম্পানীর দ্বারা ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতিতে ঘড়িটি পূনরায় চালু করা হয়। কিন্তু বছর না ঘুরতেই ঘড়িটির কাঁটা আবারও বন্ধ হয়ে যায়। ২০১১ খ্রিস্টাব্দে সিলেট সিটি কর্পোরেশন এই ঘড়িটিকে পূণরায় মেরামত করলে তা আবার দৈনিক ২৪ ঘন্টাব্যাপী সচল রয়েছে।অবস্থান: সিলেট সার্কিট হাউজ ও ক্বিন ব্রীজ সংলগ্ন।যোগাযোগ ব্যবস্থা: সিলেট রেলওয়ে স্টেশন অথবা কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল হতে ১ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিম দিকে গেলেই ঐতিহাসিক আলী আমজাদ ঘড়িটির অবস্থান।ভাড়া: পর্যটকরা রিক্সা অথবা সিএনজি যোগে যেতে পারেন। ভাড়া ৩০-৫০/- টাকা।
ঘড়ি ঘরের পরিমাপ নিম্নরূপ: দৈর্ঘ্য: ৯ ফুট ৮ ইঞ্চি প্রস্হ: ৮ ফুট ১০ ইঞ্চি নীচ থেকে ছাদ পর্যন্ত উচ্চতা: ১৩ ফুট ছাদ থেকে ঘড়ি অংশের উচ্চতা: ৭ ফুট ঘড়ির উপরের অংশের উচ্চতা: ৬ ফুট মোট উচ্চতা: ২৬ ফুট

তথ্যসূত্রঃ www.sylhet.gov.bd

সংগ্রহঃ জীবন কৃষ্ণ সরকার।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে