কৃপণের ধন হলে আরো কৃপণ হয়,অবশেষে সব হারায়-গল্প

0
276

এক নাপিত পথে চলতে চলতে হঠাৎ শুনতে পেল, কে যেন বলছে, ‘সাত ঘড়া টাকা নিবি?’ নাপিত আশ্চর্য হয়ে চারিদিকে চেয়ে দেখে, কিন্তু কাউকে দেখতে পায় না। সাত ঘভ়া টাকার নাম শুনে সে কিঞ্চিৎ লুব্ধ হয়ে ব্যাপারটা কি জানার জন্যে উচ্চস্বরে বললো, “নোবো’।
অমনি সে আবার শুনতে পেলে কে যেন বলল, “আচ্ছা, তোর বাড়িতে দিয়ে এলুম, নিগে যা।”

নাপিত বাড়ি গিয়ে দেখে যথার্থই তার বাড়িতে ঘড়া রয়েছে। নাপিত ভালো করে নেড়েচেড়ে দেখতে পেলে ছ’টি ঘড়া মােহরে ভরা আর একটি ঘড়া খালি রয়েছে। খালি ঘড়াটি পূর্ণ করবার জন্যে তার একান্ত ইচ্ছা হল এবং তার ঘরে সোনা-রূপা যা কিছু ছিল সব এনে সেই খালি ঘড়ার ভিতর পুরলে, কিন্তু তাতে সে ঘড়া পুরবে কেন? নাপিত সংসারের খরচ কমিয়ে রােজ রােজ সেই ঘড়ায় পুরতে লাগল।

অবশেষে কাকুতিমিনতি করে রাজামশাইকে জানালে যে তার সংসারে এখন ভারী কষ্ট হচ্ছে, সে যে ক’টাকা পায়, তাতে তার চলে না। রাজা তার মাইনে বাড়িয়ে দিলেন, কিন্তু নাপিতের যে দশা সেই দশা। সে এখন লােকের কাছে মেগে-পেতে খায় এবং যা কিছু টাকা পায় তা ঐ ঘড়ার ভিতর পোরে। পরে রাজা একদিন তার দুর্দশা দেখে বললেন , ‘হ্যাঁরে, আগে কম মাইনে পেতিস তাতে তো বেশ চলত, আর এখন তুই দ্বিগুণ পাচ্ছিস, তাের চলে না কেন রে? তুই কি সাত ঘড়া মোহর এনেছিস নাকি?

নাপিত থতমত খেয়ে বললে, “আজ্ঞে আপনাকে কে বললে?” রাজা বললেন,’ আরে সে যে যকের ধন, সেই যক্ষটা আমার কাছে এসে বলেছিল, সাত ঘড়া ধন নেবে? আমি বললাম,’ জমার টাকা না খরচের টাকা? যক্ষটা অমনিই পালিয়ে গেল , আর কোনো কথা কইলাে না। ও টাকা কি নিতে আছে, ও টাকা খরচ করবার জো নেই, ও কেবলই জমার টাকা, ভাল চাস তো ফিরিয়ে দিয়ে আয়’।

নাপিতও ঐ কথা শুনে তাড়াতাড়ি আগের সেই জায়গায় গিয়ে বললে, ‘তোমার টাকা তুমি নিয়ে যাও, আমার কাজ নেই।’ যক্ষ বলল, ‘আচ্ছা’। বাড়িতে এসে নাপিত দেখে ঘড়াগুলো কে নিয়ে গেছে। লাভের মধ্যে সেই সঙ্গে সে এতকাল ধরে সেই খালি ঘড়াটার ভিতরে যা পুরেছিল, সেগুলিও নিয়ে গেছে।

শিক্ষাঃ কৃপণের ধন হলে আরো কৃপণ হয়,অবশেষে সব হারায়।

সংগৃহিত

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে