কবি মঞ্জুর মোহাম্মদের কবিতা

0
141

১। মৃদু বাক্
মনজুর মোহাম্মদ

কাঁচের জলে আকাশ নীলের
লাগলো মায়া বেশ,
স্নিগ্ধ সবুজ প্রেমের পরশ
রুপে ভরা দেশ।

চোখেতে গুণ থাকলে জানি
কেবল খুঁজে পায়,
সবচেয়ে দাম – কোন মানিকের
জানে শুধু মায়।

২। সব হৃদয়ের খাম
মনজুর মোহাম্মদ

রাজনীতিতে ব্যবসা দারুণ
কলকাঠিটা কেবল নাড়ুন
জমবে তাতে খেল,

পদ পদবীর হায় ক্রেতারা
হচ্ছে মালিশ আজ নেতারা
ঢালছে দেখুন তেল।

আগুন লাগুক তেলের দামে
তবুও যদি মালিশ থামে
বাড়ুক নীতির দাম,

নীতির সাথে বাড়লে প্রীতি
বদলে যাবে দেশের মিতি
সব হৃদয়ের খাম।

৩। পেঁয়াজ বড় মাল গো
মনজুর মোহাম্মদ

হায় কপালের ফের
মনের দামে শের
ছুঁতে গেলেই ঝাল গো
পেঁয়াজ বড় মাল গো
যদিও আছে ঢেড়
মনের দামে শের,

ছিঁড়ছে লাগাম রোজ
কে নিবে তার খোঁজ
লাগাম দিতে সরকারে
পারছে না কার দরকারে
আমরা কামাই ভোজ
ছিঁড়ছে লাগাম রোজ।

৪। হাওর বিলাস
মনজুর মোহাম্মদ

কাঁচের মতো জল ষোড়শী
নীলাভ রঙের মায়া,
তার গতরে তুলোট আকাশ
ঢালছে স্নেহের ছায়া।

সারি সারি মুকুট বাড়ি
হিজল করচ পাড়া,
জল জানেনা জলের কায়া
পর ত্বকে দেয় সাড়া।

৫। কাফন
মনজুর মোহাম্মদ

বাপ ভালো যার ছেলে
কার ব্যবহার পেলে
কও তো দেহি পাপন

কোন সাজা কই দিলা
তোমার ক্ষোভের লিলা
ক্রিকেট পেল কাফন।

ক্রিকেট ভালোবাসলে
চার ছক্কায় হাসলে
বাতিল রাগের নীতি,

ব্যাটের সাথে বল গো
চাইছি ভালো দল গো
তাতেই যদি জিতি।

৬। গুজব
মনজুর মোহাম্মদ

বাল ঠাকরে ছাল তুলেছেন
লবণ লাগে তাতে,
ভেড়ার পালে কি খাবে কাল
লবণ বিহীন পাতে।

খালের এবং বালের লবণ
অল্পতে সব শেষ গো,
কান নিয়েছে চিলে শোনে
চিলের পিছে দেশ গো।

৭। একের ভেতর তিন গো
মনজুর মোহাম্মদ

লাভের ভেজাল চাঙা করে
তাই তো তারা দাঙ্গা করে
কইরা ইসু তৈরি,

দিলের কপাট বন্ধ হলে
অন্ধ সবাই মন্দ হলে
হয় পরিবেশ বৈরী।

লাভকে লোভের বান্দা করে
ধর্ম নিয়ে ধান্দা করে
এই হলো যার দিন গো,

স্রষ্টাকে তার ভক্তিতে নয়
কেবল লাভের শক্তিতে হয়
একের ভেতর তিন গো।

৮। গুজব এবং শুদ্ধি
মনজুর মোহাম্মদ

খায় জনতা ছলের কলা
নেই রে ক্ষমা গুজব ওলা
অন্ধরা যায় ক্ষেপে,

তখন পাপীর দাশ হয়ে যায়
বুদ্ধিরা সব ঘাস হয়ে যায়
গরুর দাঁতে চেপে।

ধর্ম তখন হায়নাতে যায়
পুণ্য লাভের বায়নাতে হায়!
মানুষ মারে খুনে,

অমানুষের বল হয়ে যায়
খুনির বিরাট দল হয়ে যায়
শেষ হবে না গুনে।

নির্দোষেরা লাশ হয়ে যায়
আন্দোলনের মাস বয়ে যায়
ফায়দা ওলার পক্ষে,

আসবে গুজব কালে কালে
ফায়দাবাজের তালে তালে
জিদ মেটানোর লক্ষ্যে।

মানুষ হলে চিন্তা করে
কোনটা সঠিক পক্ষ ধরে
পথ দেখাবে বুদ্ধি,

সৎ মানুষের যুক্তি নিলে
এসব ভুলের মুক্তি মিলে
সম্প্রীতিময় শুদ্ধি।

৯। চাই
মনজুর মোহাম্মদ

বুশ লাদেনের বারুদ বোমা
জ্বলবে নতুন নামে,
নতুন দেশের নতুন ভূমির
মানব দেহের খামে।

বারুদ আমি চাই না বাড়ুক
চাইছি কেবল বই গো,
মরার পরেও ফিরলে যেনো
পৃষ্ঠা বইয়ের হই গো।

১০। তালাক নামা
মনজুর মোহাম্মদ

তিন তালাকের ডিকশনারি
রাগলে পাতা খুলতে পারি
বাবা এবং মায়ে

দুজনে ঠিক দুজন পাবেন
থাকলে ছাওয়াল একটু ভাবেন
দুর্দশা কার পায়ে।

কষ্ট পাবার কারণ গুলো
মানবে না আর বারণ গুলো
জীবন দিবে পিষে

চোখের দেখা অনেক আছে
সমাজ স্বজন নিকট কাছে
দুখের জাতে মিশে।

১১। পরিচয়
মনজুর মোহাম্মদ

ঘাসের পেটে ঘাস চলে যায় জীবের পেটে জীব,
হরেক খুনের চক্রতে ঠিক যেই গণিতের ইভ।

হাজার বছর ঘূর্ণয়নের মাটির কাছেই ঋণ,
এই মাটিতেই বীজের প্রেমে মুগ্ধ যাদের দিন।

হিউমাসেদের ঢেউয়ে ভেসে তাদের জিনেই ঠাঁই,
একটি শরীর কোষ শিকলে যার আদলে পাই।

বংশ ধারার সিঁড়ি বেয়ে এখন দশক চার,
একটি নামের এক অবয়ব করছে সময় পার।

তরু বিরুত গুল্ম আমার অন্ন মাটির স্তন,
হাত বদল ঐ খুনের তরল জমাট বাঁধা ধন।

জীব্ নামেতে হয় কাঠামো যেমন আমি এক,
আমার ভেতর হাজার কয়েক বইছে তারই লেক।

১২। বৃষ্টি
মনজুর মোহাম্মদ

শাবলের মতো বিন্দু বিন্দু প্রেমের প্যারাসুট
গেরিলার মতো লাফিয়ে পড়ে
মৃত্তিকায় আঁকে তুমুল স্রোত।
পৃথিবী যখন উষ্ণ হাহাকার
মহব্বতের টান পড়ে তার সুতোয়
সোহাগি গতর লেপ্টে দেয় তার শীতল স্পর্শ
বাতাসের খামে।
চোখের আয়তনের চেয়ে বড়
দানবীয় স্তনের মতো আকাশে তুলোট আকাশ
বিন্দু বিন্দু পেরেকের পতন
মাটির অন্তর ডুবিয়ে তার রসালো ত্বক বেয়ে
লাজুক কিশোরীর মতো পালিয়ে আসে
শরীরস্পিপ হামাগুড়ি
সাপের শরীর যেনো রেখে যায় চলার চিহ্ন
একই নিয়মের অনন্ত প্রেমর আলিঙ্গন
তারই চলো নাম প্রেম আমরা বলি নদী
জৈব জৈব কদমের প্রশ্রয়ে
তরুলতা গুল্মের বিজয়।

১৩। আমরা পশু হলে
মনজুর মোহাম্মদ

লোভের প্রদীপ রাজনীতিময়
ছয় রিপুতে ধর্ম উদয়
লাভ ভগবান ঈশ্বরে,

ধর্ম ধর্ম সব কিছুতে
দিচ্ছে মদদ তার পিছূতে
ভণ্ডরা আজ বিশ্বরে।

লাভের গাভীর ঘাস হয়ে যায়
আম জনতা দাস হয়ে যায়
এই পশুদের ছলে,

সাম্প্রদায়িক ঝাণ্ডা বাজা
পশুরা হয় ধর্ম রাজা
আমরা পশু হলে।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে