হাসুস নামকরণ।।হাসুস নামকরন।।হাসুস নামকরণের যথার্থতা।।

0
186

হাসুস নামটি কিভাবে তৈরি হলো তার গ্রহণ যোগ্যতা কতটুকু সে বিষয় বিস্তারিত জানিয়েছেন “হাসুস” নামকরণের জনক, সংগঠণটির প্রতিষ্ঠাতা জীবন কৃষ্ণ সরকার।

প্রিয় বন্ধুগণ,হাসুস নামটি কিভাবে এলো,কি করে হলো,এটির বৈয়াকরিণিক দিক আছে কিনা,বৈয়াকরণিক সিদ্ধ কিনা,সাহিত্য সংগঠন হিসেবে স্বীকৃত কিনা এসব বিষয়ে অনেকেই প্রকাশ্যে, অপ্রকাশ্যে বিভিন্ন আলোচনা,সমালোচনা এনেছেন।এসব জ্ঞাণীদের হাসুস’র পক্ষ থেকে ধন্যবাদ যে তেনারা আমাদের বিষয়ে চিন্তা করেন, ভাবেন।সেই সাথে তাদের অনুরোধ করবো হয় আপনারা বিসিএস পরীক্ষাটা দিয়ে আসুন অথবা বিসিএসের বইগুলো একটু হাতিয়ে আসুন তাহলে লেখাটি বুঝতে একটু সহজ হবে। তাহলে চলুন দেখে নেই “হাসুস” শব্দটি কিভাবে এলো, তার বৈয়াকরণিক দিক কি।

হাসুস বাংলাদেশ’র প্রতিষ্ঠাতা হাওরকবি জীবন কৃষ্ণ সরকার

প্রথমেই দেখে নেয়া যাক “সংস্থা” শব্দের বুৎপত্তিগত অর্থ কি।
অক্সফোর্ড ডিকশনারি হতে প্রাপ্ত
“সংস্থা” শব্দের অর্থ- সমিতি,সংঘ,প্রতিষ্ঠান। যার কোন বিশেষত নেই যে কেবল আর্থিক প্রতিষ্ঠান হলেই সংস্থা হবে নতুবা নয়।অবা ইহা সাহিত্য সংগঠনের এক্সটেনশন হতে পারবেনা এব্যাপারেও কোন দিক নির্দেশনা নেই। এবার যাই মূল আলোচনায়।

হাওর সাহিত্য উন্নয়ন সংস্থা (হাসুস) বাংলাদেশ
Haor Sahitys Unnoyan Songsta (HASUS) Bangladesh.

বন্ধুরা অনেকেই সংগঠনের নামের ব্যাপারে অনেকটা অনভিজ্ঞতার ধরুণ আমাদের হাসুস নামটি নিয়ে অপব্যাখ্যা দিয়েছেন বা দ্বিমত পোষণ করেছেন। আসুন দেখা যাক আমাদের নামকরণটি কিভাবে আসছে।

উপরের ইংরেজী নামটি দেখেন সেখান থেকে
HA-Haor
S-Sahitya
U-Unnoyan
S-Songsta

অনেকেই বলবে প্রতি শব্দ থেকে প্রথম অক্ষর নেয়া যায় (মূলত এটাই তাদের অজ্ঞতা)

চলুন প্রিয় বন্ধুগণ দেখে নিই তাদের এই যুক্তিটা কতটুকু সঠিক।

নিচে সর্বজন স্বীকৃত সংগঠন বা নামের সংক্ষিপ্ত নাম রক্ষ করি।

1.D Lit -Doctor of Literataure.
2.PhD- Doctor of Philosophy.
3.PBX-Privet Branch Exchange.
4.VAE- Village level Agricultural Extension.
5.C-in-C-Commander-in-Chief.
6.Interpole-International Criminal Police Organization.
7.BREXIT-British Exit.

১নং সংক্ষিপ্ত নামটি Doctor থেকে D নেয়া হয়েছে ভালো কথা কিন্তু Literature থেকে Lit নেয়া হয়েছে।তাহলে এসময় কেন বলেননা D L ডিগ্রী?
অতএব Haor থেকে HA একসাথে নিলে সমস্যা কোথায়?

২নং টিতে Philosophy থেকে Ph নেয়া হয়েছে সে সময় তো বলেননা P D ডিগ্রী? তাছাড়া নিয়ম অনুসারে D P হওয়ার কথা তাও তো হয়নি তাহলে ওগুলো ঠিক করে আসেন!

৩নং টিতে Exchange থেকে X নেয়া হয়েছে।কই সেখানে তো E নেয়ার কথা ছিলো সেখানে তা করেনি।তাহলে ওঠা নিয়ে তো কেউ প্রশ্ন তোলেন নি।বিসিএস কম্প্লিট করতে গিয়ে তো পড়তে পড়তে প্যারা তুলে ফেলছেন ঐ সময় পন্ডিতি বিদ্যাটা জাহির করেননি কেন?

৪ নংটিতে level পুরো শব্দটাই বাদ দিয়েছে আবার ৫ নং টিতে in প্রিপজিশনটিও রেখে দিয়েছেন যা সচরাচর প্রায় সকল সংগঠনেই প্রিপজিশন,কনজাংকশন(For,and,the, etc) বাদ দেয়া হয়।
৬নংটিতে আসি। International থেকে Inter নেয়া হয়েছে আর Police থেকে Pole নেয়া হয়েছে।মাঝে ও শেষে Criminal ও Organization শব্দদুটো কোথায় গিয়েছে ওই সব বস্তাভরা বুদ্ধীবীজিদের বের করার জন্য অনুরোধ করছি।International থেকে যদি Inter নেয়া যায় তাহলে আমাদের Haor থেকে HA নিলে সমস্যা কি?

৭নং তে শেষের Exit পুরোটাই নেয়া হয়েছে।ওইসব বুদ্ধীবীজিদের বলুন B E লিখতে তারপর HASUS নিয়ে কথা বলতে আসুক।

ওরা বলবে হাসুস তো ইংরেজীতে নয় বাংলায়। ওদেরকে বলেদিন সরাসরি বাংলাকে ইংরেজিতে উচ্চারন ভিত্তিক সংগঠনগুলোকে সংশোধন করে আমাদের কাছে আসতে আমরা তাকে সেলুট করবো।

সমাজ সেবা অধিদপ্তরের কিছু উদাহরণ দেখে যান-

১।ঠেঙ্গামারা মহিলা সবুজ সংঘ (টিএমএমএস),সিরাজগঞ্জ
২।বাংলাদেশ সোনালী সংস্থা (বিএসএস) সিরাজগঞ্জ
৩।পল্লী রক্ষা সংস্থা (পরস) সিরাজগঞ্জ
৪।নারী ও শিশু কল্যাণ সংস্থা ( এন এস কে এস)

আরো দরকার উদাহরণ?

এবার বলবে হাসুস তো ইংরেজী উচ্চারণে নয় কারণ এটা সাহিত্য সংগঠন। এটাকে বাংলায়ই সংক্ষিপ্ত করতে হবে।তাহলে দেখে নেয়া যাক বাংলায় হাসুস’র কি অবস্থা।

হাওর সাহিত্য উন্নয়ন সংস্থা এর প্রাথমিক ভাবে এর উচ্চারণ হাসাউস ই হয়।কিন্তু উপরের উদাহরণগুলো থেকে স্পষ্ট প্রতভয়মান হয়েছে সংগঠনের সংক্ষিপ্ত নাম কোন ব্যাকরণ পন্ডিতি বিদ্যা থেকে নয় বরং সংগঠন বা সংস্থার প্রতিষ্ঠাতাদের পছন্দমতো সুন্দর সহজ উচ্চারনবোধ্য নামকেই সিলেক্ট করা হয়।আমরাও তার ব্যাতিক্রম নই।হাসাউসকেই আমরা হাসুস বানিয়েছি সহজবোধ্য উচ্চারনের জন্য।কিভাবে হলো –
হা-হাওর
স-সাহিত্য
ু(উ)- উন্নয়ন
স-সংস্থা
এই হলো হাসুস।বৈয়াকরনবিদদের বুঝে আসলোনা।এবার দেখে নেয়া যাক এই সব বৈয়াকরনবিদেরা নিচের সর্বজন স্বীকৃত সং- গঠন,সংস্থাগুলোর ব্যাপারে কি বলেন-

১।আসক- আইন সহায়তা কেন্দ্র
২।সুক-সমাজ উন্নয়ন কার্যক্রম,সিরাজগঞ্জ
৩।শিক্ষা স্বাস্থ্য উন্নয়ন কার্যক্রম (শিসউক)
৪।সিরাজগঞ্জ উত্তরণ মহিলা সংস্থা (সাম্স)
৫।হিউম্যান এইড (হ্যাস),সিরাজগঞ্জ
৬।মানস-মাদক নিরোধক সংস্থা

এবার আসি আলোচনায়।
১নং তে কে না নিয়ে ক নিল কেনো নাম বিশেষঞ্জগণ উত্তর দিন।২নং তে সউক কেনো হলোনা বিজ্ঞজনেরা জানাবেন।এটা যদি সউক কে সুক লিখতে পারে তাহলে আমরা উ এর বদল উ কার লিখে হাসুস বানালে সমস্যা কোথায়?
৩ নম্বরটিতে পন্ডিতগণের মতে শিস্বাউকা হওয়ার কথা কিন্তু হয়েছে শিসউক কেন এমন হলো পন্ডিতরা জানাবেন কি।ওটা যদি স্বা এর স্থলে শুধু স এবং কা এর বদল ক নিতে পারে তাহলে আমাদের সাহিত্য শব্দ থেকে শুধু স নিলে সমস্যাটা কোথায়? তার মানে হাসুস’ই যুক্তিযুক্ত হয়েছে।
৫ নম্বরটিতে হিউম্যান এইড কে হ্যাস লিখা হয়েছে এটার ব্যাখ্যা আর দেবার ইচ্ছে নেই ঐ সব বিজ্ঞজনেরা খোঁজে বের করবেন আশা করি।

এবার প্রশ্ন সাহিত্যের সাথে পরিষদ কথাটা মানায়,সংস্থা মানায় না।

এই সব বিজ্ঞ বন্ধুদের জন্য নিচে কয়েকটি সাহিত্য সংগঠন’র নাম দিচ্ছি-

১।বিশ্ব সাহিত্য নিকেতন
২।কপোতাক্ষ সাহিত্য অঙ্গন
৩।বাংলাদেশ সাহিত্য ক্যানভাস
৪।নবকন্ঠ সাহিত্য আসর
৫।বিশ্ব সাহিত্য সংঘ

শেষাংশে পরিষদ নেই তাই বলে কি ওগুলো সাহিত্য সংগঠন নয়? ও আচ্ছা ও গুলোতো সংস্থা নয় তাই সংস্থা দিয়ে সাহিত্য সংগঠন কিভাবে হলো। তাহলে আসুন নিচের সংগঠনগুলো সম্পর্কে একটু পরিচিত হই কেমন?

১।বিশ্ব কাব্য সংস্থা(বিকাশ) ভারত
২।সৃজনী সাহিত্য সংস্থা,পশ্চিমবঙ্গ
৩।অনুরাগ সাহিত্য সংস্থা,কাস্মীর
৪।মুক্ত চেতনা সাহিত্য সংস্থা,পশ্চিমবঙ্গ
৫।সোনালী সূর্য সাহিত্য সংস্থা,ঢাকা
৬।বাংলাদেশ সাহিত্য সংস্থা (বাসাস)
৭।আকিলপুর সাহিত্য উন্নয়ন সংস্থা(আসুস)
এগুলো প্রতিষ্ঠিত সাহিত্য সংগঠন।তাহলে ওগুলো নিষদ্ধ করে আসুন? লক্ষ করলে দেখবেন ৭ নাম্বারে “আকিলপুর সাহিত্য উন্নয়ন সংস্থা যদি “আসুস” হয় তাহলে আমাদের হাওর সাহিত্য উন্নয়ন সংস্থা (হাসুস) হলে কোন সমস্যা? আমার কাছে মনে হয় যে বা যারা নামকরণটি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তারা পুকুর দেখেই সমুদ্রের বর্ণনা দিচ্ছেন।তাদের জন্য হাসুস’র সমবেদনা।

অতএব বন্ধুগণ, উপরের আলোচনা থেকে প্রতিয়মান হয় সংগঠনের নাম ব্যাকরণ নয় বরং সংগঠন পরিচালকদের পছন্দ এবং সৌন্দর্য,সহজবোধ্যতাকে প্রাধান্য করে করা হয়।যারা সংক্ষিপ্ত নাম নিয়ে পন্ডিতি জাহির করেন তারা আসলেই সংক্ষিপ্ত পন্ডিত।ওদের ব্যাপারে আমাদের কোন কিছু বলার নেই।

সর্বশেষ “হাসুস” সর্বজন গৃহীত সৌন্দর্যপূর্ণ,সহজবোধ্য নাম এতে কোন সন্দেহ নেই।অতএব অযথা হিংসুকদের কথায় কাননা দিয়ে হাসুস সংশ্লিষ্টদের অনুরোধ সর্বদা সাহিত্য ও সমাজ উন্নয়নের ভাবনায় মেতে থাকুন।এতে দেশ ও জাতির মঙ্গল সাধিত হবে।ভালো থাকবেন বন্ধুরা। সবাইকে শুভকামনা ও শুভেচ্ছা নিরন্তর।

আহ্বানে –
জীবন কৃষ্ণ সরকার
প্রতিষ্ঠাতা হাসুস।

বিঃদ্রঃ লেখাটি যারা হাসুস কি, কিভাবে এলো তাদের জন্য নয়। যারা হাসুস কে বৈয়াকরণিক দিক থেকে চ্যালেঞ্জ করেছেন সেই সব মনিষীদের জন্য।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে