বাউল কফিল উদ্দিন সরকার
===================
‘আমি চাইলাম যারে/ ভবে পাইলাম না তারে/ সে এখন বাস করে অন্যের ঘরে’,
`‘আমার বন্ধুয়া বিহনে গো, সহেনা পরানে গো, একেলা ঘরে রইতে পারি না` এবং
‘আতর গোলাপ সোয়া চন্দন, সাজাইলাম ফুল বিছানা/ অভাগির বাসরে বন্ধু কেন আইলায় না’
– এরকম হাজারো গানের রচয়িতা মরমী সাধক গীতিকার ও সুরকার বাউল কফিল উদ্দিন সরকার।
তিনি বাংলা ১৩৩৮ সনের ১৪ ফাল্গুন হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর উপজেলার মালঞ্চপুর গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁর বাবা মো. রিয়াজ উদ্দিন,এবং মা করিমুন্নেছা। চার ভাই- বোনের মধ্যে কফিল ছিলেন তৃতীয়। জন্মের পর মাত্র সাত বছর বয়সে মাড়াইকল জনিত দুর্ঘটনায় একটি হাত হারান তিনি। জানা যায়, সেই থেকেই গানের দিকে ঝুকে পড়েন কফিল উদ্দিন সরকার। পরবর্তীতে #সুনামগঞ্জ জেলার সীমান্তঘেসা দোয়ারাবাজার উপজেলার আকিলপুর গ্রামে স্থায়ী ভাবে বসবাস শুরু করেন এবং সেখানেই বাউল সাধনা চালিয়ে যান তিনি। মাত্র ১০ বছর বয়সে বাউলসম্রাট শাহ আবদুল করিম ও দুর্বিন শাহের সান্নিধ্যে পান তিনি। তিনি বাউল দূর্বিন শাহের শিষ্য ছিলেন। রত্বভান্ডার প্রথম খণ্ড এবং রত্বভান্ডার দ্বিতীয় খণ্ড নামে তার দুটি প্রকাশিত গানের সংকলন রয়েছে। যেখানে গানের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৪ হাজার।
তিনি দীর্ঘসময় বাউল সম্রাট শাহ আবদুল করিম ও দুর্বিন শাহের সঙ্গে থেকে মাঠে-ঘাটে, শহরে-বন্দরে ঘুরে ঘুরে গেয়েছেন দেশ, মাটি এবং প্রেমের গান। তার গানে তৈরি হয়েছেন বাংলাদেশের অনেক বড় বড় শিল্পী। তার হাত ধরে তৈরি হয়েছেন বাউল শিল্পী কালা মিয়া ও সাজ্জাদ নূরসহ অসংখ্য বাউল শিল্পী।
এছাড়া তার লেখা বেশ কিছু গান বিভিন্ন মোবাইল কোম্পানির ওয়েলকাম টিউন ও রিংটিউন হিসেবে বেশ জনপ্রিয়তা পায়।
শেষ বয়সে তার ক্যান্সার ধরা পড়ে। তখন এই বাউলশিল্পীর চিকিৎসা সহায়তায় অনেকেই এগিয়ে এসেছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ২০১২ সালের ২রা সেপ্টেম্বর রবিবার ৮৩ বছর বয়সে সিলেটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
#সংগ্রীত