কুণ্ড নয় বরং কুন্ড-ই সঠিক বংশীকুন্ডা বানান বিষয়ক একটি মৌলিক পর্যালোচনা।।বংশীকুন্ডা।।কুণ্ড নয় কুন্ড।।বংশীকুন্ডা নামকরণের ইতিহাস।।বংশীকুন্ডা বানান বিতর্ক-২।।

0
417

“কুণ্ড” নয় বরং “কুন্ড”- ই সঠিক – বংশীকুন্ডা বানান বিষয়ক একটি মৌলিক পর্যালোচনা

জীবন কৃষ্ণ সরকার

প্রথমেই হাত জোড় করে ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি সেই সব ফেইসবুক বন্ধুদের কাছে যারা এই বিষয়টিকে নিয়ে আলোচনায় বিরক্ত বোধ করছেন।আপনাদের জ্ঞাতার্থে এটুকুই বলবো আপাত দৃষ্টিতে আপনাদের কাছে বিষয়টা স্বাভাবিক মনে হলেও কোন একসময় এই বিষয়টি অস্বাভাবিক হয়ে আমাদের সামনে হাজির হলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবেনা।

কুন্ড শব্দটি ডিকশনারিতে নেই,এটা ব্যাকরণের ণ ত্ব বিধান ফলো করেনা ইত্যাদি কিছু বিভ্রান্তিকর তথ্য সামনে চলে আসায় এই লেখাটি আমি লিখতে বাধ্য হয়েছি।

আপনারা নিজ হাতে এখুনি কুন্ড শব্দটি গুগলে সার্চ দিয়ে দেখতে পারবেন “কুন্ড” শব্দের অর্থ জলাধার,দিঘী, গহ্বর,গর্ত যার স্ক্রিনসট লেখার শেষে দেয়া আছে দেখে নেবেন।তাহলে কুন্ড শব্দটি ডিকশনারিতে নেই বলে অপপ্রচার করে কোন ফায়দা হাসিল করতে চাচ্ছেন?।আর ণত্ব বিধাণ অনুসারে কুন্ড বানান শুদ্ধ নাকি অশুদ্ধ সেটা আপনারা একটু কষ্ট করে দেখে নেবেন নিচের একটি স্ক্রিনসট থেকে। সেখানে বিশ্বমুক্তকোষ উইকিপিডিয়া থেকে ণত্ব বিধান সম্পর্কিত নিয়মকানুনের একটি স্ক্রিনসট দেয়া আছে।আমি দেখেছি সেখানে ‘ক ‘ এর পর মূর্ধন্য ণ বসবে এমন কোথাও লিখা নেই।তবে হে ক এর পর ণ ব্যবহৃত হয় এমন অনেক শব্দ আছে যেমন কণ্ঠ, কণা,ইত্যাদি,কিন্তু ক এর পর ন দিয়ে শব্দও আছে যেমন কন্যা,কোনদিকে,কুনোব্যাং ইত্যাদি।কাজেই কোন শব্দের উপর ভিত্তি করে ব্যাকরণের বিধান বলে চালিয়ে দেয়াটা নিজের অজ্ঞতার পরিচয় প্রকাশ পেয়ে যেতে পারে।তাছাড়া কোন একটি ডিকশনারিতে কোন শব্দ না থাকলেই শব্দটি ডিকশনারিতে নেই বলে চালিয়ে দেয়া বিভ্রান্তি সৃষ্টির ই নামান্তর।যারা পড়া লেখা করেছেন তারা বুঝবেন ছাত্রজীবনে কত শব্দ এক ডিকশনারিতে না পেয়ে কয় ডিকশনারি খোঁজেছেন এবং শেষে পেয়েছেন। কাজেই ডিকশনারি বিষয়ক এই বিভ্রান্তি সৃষ্টি অব্যাহত রাখলে সেটা কোন নির্দিষ্ট কিছুকে নিয়ে উদ্যেশ্য প্রনোদিত ষড়যন্ত্রের নামান্তর বলে মনে করছেন কোন কোন মহল।

এবার আসি মৌলিক আলোচনায়

“কুন্ড” শব্দটির অর্থ ডিকশনারি মতে জলাধার, গহ্বর,কূয়া,গর্ত( নিচে স্ক্রিনশট দেখে নেবার অনুরোধ রাখছি) ইত্যাদি অপর দিকে কুণ্ড বা কুণ্ডা শব্দের অর্থ সিন্দুক বা দরজার কড়া(যেটা বিভিন্ন জন ব্যাখ্যা দিয়েছেন)।

Hypothesis-1

এবার প্রিয় পাঠকদের Sense of GK ব্যবহার করতে বলবো।আপনারাই বলুন ইতিহাস থেকে যা জেনেছেন আগের দিনের রাজাদের বাড়িতে কি সাধারণ মানুষের সহজ যাতায়াত ছিল যে তারা বংশীবদন চৌধুরীর ঘরের সিন্দুক বা দরজা দেখার ভাগ্য হয়েছিল? গুটি কয়েকজন দেখে থাকলে তাদের কথায় কি পুরো পরগনার মানুষ বিশ্বাস করবে? তাছাড়া অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে আগেকার রাজবাড়িতে সিন্দুক বা দরজার কড়া চাইতে আচানক, অপূর্ব জিনিস আর ছিলনা যে এইটা থেকেই নামকরণ করতে হবে? এই গুলো বলে কি আমরা বংশীবদনকে খাটো করছিনা?

Hypothesis-2

যদিও তর্কের খাতিরে বিখ্যাত সিন্দুক বা দরজার কড়া থেকে থাকে তাহলে কয়জন মানুষ সিন্দুক বা কড়া কে “কুণ্ডা” বলতো বা আগের বই পুস্তকে কুণ্ডা বা কুণ্ড লিখা আছে বলেন তো? তার মানে যদি বংশীবদনের বিখ্যাত আচানক সিন্দুক বা কড়া থেকেই থাকে সেটা লোকেরা সিন্দুক কিংবা কড়া-ই বলেই চিনেছে।কাজেই এই কুণ্ডা থেকে বংশীকুণ্ডা শব্দ গঠিত হওয়ার মতো কারণ এই মুহুর্তে আমি দেখছিনা।অপরদিকে ণ বর্ণটি বাংলা বর্ণমালায় আনুনাসিক বা নাসিক্য বর্ণ।বুঝাই যাচ্ছে এই বর্ণটি নাসারন্দ্র সহযোগে একটু দীর্ঘ সময় নিয়ে উচ্চারণ করতে হয়।এই বার আপনিই বলুন সিন্দুককেই যদি আগের লোকেরা কুণ্ডা মনে করে থাকে তাহলে তাদের উচ্চারণটা কি কুণ্ডা ছিল নাকি কুন্ডা ছিল(অর্থ কিংবা লিখিত রুপ যাই হোক)? নিশ্চই কুন্ডা ছিল।আর বংশীকুন্ডা নামটি আজ পর্যন্ত কোন গবেষক বা লোক শ্রুতি অনুসারে জানা যায়নি যে এটা কোন ব্যাক্তি দিয়েছে যে ণ দিয়েই বংশীকুণ্ডা লিখতে হবে।এই নামটি কালক্রমে মানুষের মুখে মুখেই এসেছে।কাজেই কালক্রমে অবশ্যই কুণ্ডা আসার সম্ভাবনাই নেই “কুন্ডা”ই এসেছে।


Hypothesis-03

এবার দেখবো দুটি শব্দের কোনটি লোকেদের মুখে প্রচার হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু। প্রথমেই কুণ্ডা শব্দটির বিশ্লেষণ করছি।রাজার বাড়ির সিন্দুকই বলেন আর দরজার কড়াই বলেন প্রথমত, অবাধ জনসাধারণের ওগুলো দেখার সৌভাগ্যইতো হওয়ার কথা নয় আবার প্রচার করবে কিভাবে? কোন সাধারণ মানুষকে রাজা বা রাজার দায়িত্বশীল কেউ ডেকে নিয়ে দেখানোর কথাও নয়।বাংলায় একটি প্রবাদ আছে “যাহা দেখিনা নয়নে, বিশ্বাস করিনা গুরুর বচনে”(একমাত্র স্রষ্টা ছাড়া অন্য সব ক্ষেত্রে প্রযোজ্য)। তাই মুষ্টিমেয় মানুষের কথাতেই এটা পুরো পরগনায় চাউর হয়ে যাবে এটা আমার বোধ গম্য নয়।তাছাড়া কোন জিনিস সর্বজনের কাজে ব্যবহৃত হয়না এমন জিনিস মানুষ প্রচার করবে কোন সুখে ?

অপরদিকে কুন্ডা শব্দটি বাংলা ব্যাকরণ অনুসারে “আ” প্রত্যয় যোগে (কুন্ড+আ) গঠিত হয়েছে যার মূল শব্দ কুন্ড যার অর্থ জলাধার বা দিঘী।লোকমুখ থেকে শুরু করে বর্তমানেও শোনা যায় বংশীবদন চৌধুরীর একটি সুনামধন্য সুগভীর দিঘীর অস্থিত্ব ছিল এখনো আছে।কালক্রমে দিঘীটা ভরাট হয়ে কিছুটা সংকুচিত হয়েছে।বংশীকুন্ডার ইতিহাস ভিত্তিক প্রথম ম্যাগাজিনের সম্পাদক মনিরুল ইসলাম মনির’র(তাদের বাড়িটাই মূলত বংশীবদনের বাড়ি বলে ধারণা করা হয় বা সঠিক বলে জানে এলাকাবাসি) সাথে কথা বলে জানা যায় “বংশীবদন চৌধুরীর একটি উল্যেখযোগ্য দিঘী ছিল এবং ওখানে একটা সানাই বান্দা ঘাট ছিল এখনো দিঘীটি আছে তবে সানাই বান্দা ঘাটটি ধ্বংস হয়ে গেছে।” আপনারা কেউ চাইলে দিঘীটি দেখে আসতে পারেন।আর আপনারা যারা কুণ্ডা মানে সিন্দুক নিয়া গলা ফটাইতেছেন, এত অবাক করা একটা সিন্দুক কিংবা কড়া যার জন্য পরগনার নাম হবে সেটি ব্যক্তি না হলেও সরকারি ভাবে হলেও তো প্রাচীন ঐতিহ্য হিসেবে জাদুঘরে সংরক্ষণ করার কথা ছিল।পারলে আপনারা তার অস্থিতটা দেখান।কোন এলাকার নামকরণে কেবল ব্যাকরণ টেস্ট করলেই সব হয়ে যায়না,কোন এলাকার নামকরণ তার ইতিহাস ঐতিহ্যের জনশ্রুতির উপর নির্ভর করে নির্ধারণ করা হয়।ঠেঙ্গামারা নামক স্থানের নাম শুনেছেন? পারলে তাদের জিজ্ঞাসা করে আসেন, কি তাৎপর্যপূর্ণ অর্থের উপর ভিত্তি করে তারা নামকরণটি করেছে? তাই নামকরণের ক্ষেত্র “নাম” আগে, প্রয়োজনে পরে ব্যাকরণ তা Absorb করে নিবে।

লোকমুখে জনশ্রুতি আছে বংশীবদনের একটি সানাই বান্দা ঘাট সহ স্বনামধন্য ঘাট ছিল।তৎকালিন সময়ে ঐ এলাকায় আজকের দিনের মতো এতো পরিস্কার পরিছন্ন কোন দিঘী বা জলাধার ছিল না।যেকারণে অত্র এলাকার মানুষ রাজপরিবারের জন্য নির্দিষ্ট সময় বাদে অনেকেই সেখানে গোসল/স্নান করতো।তখন যত্রতত্র আর তেমন ভালো জলাশয় ছিলনা।আর আগেকার মানুষ কোন গহ্বর বা জলাধার কে কুন্ড বলে জানতো। তখনো আধুনিক বাংলায় দিঘী শব্দের প্রচলন তেমন ছিলনা।সাধারণ মানুষ দিঘী বলতো, যারা বয়োবৃদ্ধ,একটু শিক্ষিত ছিল তারা শুদ্ধ বলতে গিয়ে কুন্ড বলতো।যেটা আমরা অনেকের মুখে শুনি আগের উচ্চ বংশের মানুষরা হাসকি বলতো।ছোট বেলায় আমি যদি একটু শুদ্ধ বলতাম তখন দাদা দিদিরা বলতো “ অইছে অত হাসকি মারন লাগদ না”।হাসকি বলতে ফার্সি,“ব্যাকরণিক অপভ্রংশ ক্রমানুসারে “ফার্সি<<ফারসি<<পারসি” সাধারণ মানুষ ব্যাঙ্গাত্বক বা উচ্চারণের তারতম্য হেতু হাসকি বলতো।আপনারা জানেন কোন এক সময় এ দেশে ফার্সি(হাসকির শুদ্ধরুপ) বা পারস্য (ইরানী শাখা) ভাষার প্রচলন ছিল এখনো আছে। আর এরকম বলা হতো কারণ কোন এক সময় ইরানকে পারস্য বলা হতো,(বিসিএসের বইগুলো একটু চর্চা করলে ভালো জানা যাবে) তাই এতদ অঞ্চলে পারসি শব্দের প্রচুর প্রচলন ছিল।এখনো আছে।কিছু উদাহরণ দিচ্ছি।ধর্মসংক্রান্ত: খোদা, পয়গম্বর, ফিরিশতা, বেহেশত, দোজখ, মসজিদ, ঈদগাহ, খানকাহ্, দরগাহ, নামায, রোজা, মরছিয়া, মাতম, জায়নামায, উযু, গুনাহ, নেক্কার, বদকার, পরহেজকার ইত্যাদি। শিক্ষাসংক্রান্ত: কাগজ, কেচ্ছা, পীর, বুজুর্গ ইত্যাদি। এছাড়াও কতো শত শত শব্দ আছে যেগুলো লিখলে কয়েক তা কাগজ লাগবে। অনেকের মতে সেই “কুন্ড" ( বর্তমানে বাংলায় আত্ত্বীকৃত) থেকেই আজকের কুন্ডা শব্দের উৎপত্তি।তবে কুন্ড শব্দটি ফার্সি শব্দ কিনা সেটা নিশ্চিত নয়।আমি যেটা বুঝাতে চেয়েছি,তৎকালিন সময়ে যারা নিজেকে একটু উচ্চ মর্যাদায় প্রতিষ্ঠিত করতে চাইতো তারাই শুদ্ধ উচ্চারন “কুন্ড" ব্যবহার করতো।যার ফলশ্রুতিতেই বংশীকুন্ডা শব্দের উৎপত্তি। কাজেই আমাদের পূর্ব পুরুষরা কোন সিন্দুক বা দরজার কড়া নিয়া দৌড়াদৌড়ি করেছিল এটা আমার কাছে কোনক্রমেই বোধগম্য নয়।আগেকার দিনে রাজা, বাদশা ছাড়া ব্যক্তিগতভাবে কেউ দিঘী বা কুন্ড খননের ইতিহাস কোন দলিল দস্তাবেজ সহ কোন প্রাচীন কিচ্ছা গল্প পুথিতেও নেই।তাইতো দেখা যায় কোন রাজা কোন দিঘী খনন করলে সেইটা ইতিহাস হয়ে যেতো যেমনটা দেখি সাগর দিঘী, কমলা দিঘী ইত্যাদি।তাই সব দিক বিবেচনায় ভুল করে নয় বরং সঠিক জেনেই আমাদের পুর্ব পুরুষগণ দন্ত্য ন ব্যবহার করেছেন। এতদ্বিষয়ে আমার আগের লেখায় কিছুটা সন্দেহ প্রকাশ করলেও অনুসন্ধান করে প্রকৃত সত্য( কারো পছন্দ না হলে ণ ব্যবহার করতে পারেন।এটা আর একান্ত ব্যাপার) উদঘাটনের পর আর সন্দেহের অবকাশ রইলোনা।সোস্যাল মিডিয়ায় যে স্ক্রিনশটটি এসেছে আগের দিনের ডকুমেন্ট হিসেবে ণ দিয়ে বংশীকুন্ডা বানান, এ বিষয়ে আমি বলবো কোন একটা বা গুটিকয়েক কাগজে কোন নির্দিষ্ট ব্যাক্তি অজ্ঞতায় অথবা যেহেতু স্ক্রিনশটটি হাতের লেখা নয় সে হিসেবে টাইপিং মিস্টেকের(সম্ভাব্য) কারণে লিখে ফেললেই সেইটা দলিল হয়ে যায়না।তাই এই বিষয়ে বিভ্রান্তির কিছু নেই।একবার ভাবুন আজকে আপনারা একটা স্ক্রিনশটকে আগের দলিল ভেবে শত সহস্র দলিলকে অশুদ্ধ বলতে চাচ্ছেন অথচ আজ থেকে ২০০ বছর পর আজকের এই দিনটিও তাদের কাছে প্রাচীন বলে মনে হবে।তখন যদি ণ দিয়ে লিখেন আর তখনকার কোন গবেষক যদি আজকের ন বানানের রেফারেন্স(নেটে হাজার হাজার ডকুমেন্ট থাকবে) দিয়ে তখনকার ণ বানানকে চেলেঞ্জ করে তাহলে কি তার অন্যায় হবে? তখনো তো তারা বিতর্ক করবে, বিভাজন হবে।তাহলে আমি আপনি কি চাই আমরা আজন্ম বিতর্কে ভোগী,আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম দ্বিধাদন্ধে থাকুক আর পুতের নামে ণ বাপের নামে ন লিখুক,কয়দিন পর পর নির্বাচন কমিশনে দৌড়াক ঠিক করার জন্য? আপনিই বলেন স্বাধীনতার পরবর্তি সময়ে কখনো কি এই বিষয়ে কোন বিতর্ক শোনেছেন? একটু সূক্ষ দৃষ্টি দিয়ে চিন্তা করলে আশাকরি বিতর্ক সৃষ্টির রহস্যটা পেয়ে যাবেন।ব্যাকরণের দোহাই দিয়ে আমাদের পূর্ব পুরুষদের অজ্ঞ,অসচেতন প্রমাণ করার হীন উদ্যেশ্য বর্জন করুন। তাই এতদ্বিষয়ে আমি আর বলতে চাচ্ছিনা আপনারাই সিদ্ধান্ত নিন সিন্দুক কিংবা কড়া নিয়ে নাড়ানাড়ি করবেন নাকি বুক ফুলিয়ে গর্ব করে ঐতিহাসিক দিঘীর পরিচয় তথা কুন্ড'র পরিচয় দিবেন।আমি আবারো বলছি কোন এলাকা বা বস্তুর নাম ব্যাকরণ বিচারে হয়না(ব্যকরণ শুদ্ধ ভালো শব্দ থাকলে মন্দ নয় বাট বাধ্যতামূলক নয়), এগুলো কোন এলাকার মুখের ভাষা থেকে হয়।শুধু নামকরণ নয় অনেক শব্দ আপনি চাইলেই ব্যাকরণের দোহাই দিয়ে অন্যের কান্দে চালিয়ে দিতে পারেননা।আপনি চাইলেই হাসন রাজা,আব্দুল করিমের গান গুলো নিজের ভাষায় গাইতে পারেননা,ব্যাকরণিক অশুদ্ধ হলেও আপনাকে তাঁদের ভাষাই গাইতে হবে।যেমন “লোকে বলে বলে রে ঘরবাড়ি বালা না আমার- হাসন রাজা" এখানে চাইলেও আপনি “ভালো" বলতে পারবেননা, তেমনি“হিন্দুর বাড়িন্ত যাত্রা গান অইত-শাহ আব্দুল করিম" এখানে আপনি চাইলেই বাড়ি বা হইতো বলে গাইতে পারবেননা আপনাকে ভুল সাব্যস্থ করবে শ্রোতা,সমাজ তথা রাষ্ট্র।অতএব এই বিষয়ে আর বিতর্ক না আনাই শ্রেয়। তাই আমার মতে বংশীকুন্ডাই শুদ্ধ ছিল, আছে এবং থাকবে।শুভকামনা সকল পাঠকদের জন্য। বিঃদ্রঃ লেখাটি কোন বিশেষ ব্যক্তি বা গোষ্ঠীকে ইঙ্গিত করে নয় নিজের জন্মভুমির প্রতি, জন্মভূমির মানুষের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ রেখেই লেখা হয়েছে।কেউ যদি নিজের গায়ে নিয়ে নেয় এটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার।লেখায় কষ্ট পেলে দুঃখ প্রকাশ করছি।সেই সাথে সম্মানিত কমেন্টারদের কাউকে ইঙ্গিত না করে মার্জিত ভাষায় কমেন্ট করার অনুরোধ রাখছি। লেখক কবি ও প্রাবন্ধিক সম্পাদক,হাওরপিডিয়া প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি কেন্দ্রীয় হাওরসাহিত্য গণপাঠার বংশীকুন্ডা হাওর সাহিত্য উন্নয়ন সংস্থা(হাসুস) বাংলাদেশ।

একটি উত্তর ত্যাগ

আপনার মন্তব্য লিখুন দয়া করে!
এখানে আপনার নাম লিখুন দয়া করে