অসমাপ্ত আত্মজীবনী : জাতির পিতাকে জানতে, বুঝতে ও হৃদয়ঙ্গম করতে হলে তার রচনাবলির পাঠ হওয়া উচিত প্রথম পদক্ষেপ। এ পর্যন্ত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মূল্যবান তিনটি লেখা গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়েছে। এগুলাে হলাে- ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ (২০১২), ‘কারাগারের রােজনামচা’ (২০১৭) এবং ‘আমার দেখা নয়াচীন’ (২০২০)। আমাদের আজকের লেখায় ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ সংক্ষেপে আলােচনা করা হলাে।
‘অসমাপ্ত আত্মজীবন ‘ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এক অনন্য রচনা। ১৯৬৬-৬৯ সালে কেন্দ্রীয় কারাগারে রাজবন্দি থাকাকালে তিনি এটি রচনা করেন। ২০১২ সালে এটি গ্রন্থাকারে প্রকাশিত হয়।
অসমাপ্ত আত্মজীবনীর বিষয়বস্তু
গ্রন্থটিতে আত্মজীবনী লেখার প্রেক্ষাপট, বঙ্গবন্ধুর বংশ পরিচয়, জন্ম, শৈশব, স্কুল ও কলেজের শিক্ষাজীবনের পাশাপাশি সামাজিক ও রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড, দুর্ভিক্ষ, বিহার ও কলকাতার দাঙ্গা, দেশভাগ, কলকাতাকেন্দ্রিক প্রাদেশিক মুসলিম ছাত্রলীগ ও মুসলিম লীগের রাজনীতি, দেশ বিভাগের পরবর্তী সময় থেকে ১৯৫৪ সাল অবধি পূর্ব বাংলার রাজনীতি কেন্দ্রীয় ও প্রাদেশিক মুসলিম লীগ সরকারের অপশাসন, ভাষা আন্দোলন, ছাত্রলীগ ও আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা, যুক্তফ্রন্ট গঠন ও নির্বাচনে বিজয়ী হয়ে সরকার গঠন, আদমজীর দাঙ্গা, পাকিস্তান কেন্দ্রীয় সরকারের বৈষম্যমূলক শাসন ও ষড়যন্ত্রের বিস্তৃত বিবরণ এবং এই সব বিষয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার বর্ণনা রয়েছে।
আছে তার কারাজীবন, পিতা-মাতা, সন্তান-সন্ততি ও সর্বোপরি সর্বংসহা সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন নেছার কথা, যিনি বঙ্গবন্ধুর রাজনৈতিক জীবনে সহায়ক শক্তি হিসেবে সকল দুঃসময়ে অবিচলভাবে পাশে ছিলেন। একইসঙ্গে বঙ্গবন্ধুর চীন, ভারত ও পশ্চিম পাকিস্তান ভ্রমণের বর্ণনাও বইটিকে বিশেষ মাত্রা দিয়েছে।
গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য
ইংরেজি সংস্করণ : Unfinished Memoirs
প্রচ্ছদ : সমর মজুমদার
প্রথম প্রকাশ: ১৯ জুন ২১২
গ্রন্থের নামকরণ : শেখ রেহানা
ভূমিকা লেখেন : শেখ হাসিনা
বিষয়বস্তুর সময়কাল : জন্মপূর্ব থেকে ১৯৫৫ খ্রি.
বিদেশি ভাষায় অনুবাদ প্রকাশ : ১৩টি।
সর্বশেষ প্রকাশিত অনুবাদ: কোরিয়ান ভাষায় (১ জুলাই ২০২১)।
প্রশ্ন ও উত্তরে অসমাপ্ত আত্মজীবনী
প্রশ্ন : অসমাপ্ত আত্মজীবনীর পাণ্ডুলিপি শেখ হাসিনার হাতে আসে কবে?
উত্তর : ২০০৪ সালে।
প্রশ্ন : ‘বসেই তাে আছ, লেখ তােমার জীবনের কাহিনী’-এ কথা কে বলেছিল?
উত্তর : বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী।
প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধুর দাদার নাম কী?
উত্তর : শেখ আব্দুল হামিদ।
প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পিতার পেশা কী ছিল?
উত্তর : সেরেস্তাদার।
প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শিক্ষা জীবন কোন স্কুল থেকে শুরু হয়?
উত্তর : এম. ই. স্কুল; টুঙ্গিপাড়া।
প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গ্লুকোমা রোগে আক্রান্ত হন কত সালে?
উত্তর : ১৯৩৬ সালে।
প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু প্রথম কারাবরণ করেন কত সালে?
উত্তর : ১৯৩৮ সালে।
প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কলকাতায় ইসলামিয়া কলেজে পড়ার সময় কোন হােস্টেলে থাকতেন?
উত্তর : বেকার হােস্টেলে।
প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহণ করেন কবে?
উত্তর: ১৯৩৯ সালে।
প্রশ্ন : ‘যারা কাজ করে তাদেরই ভুল হতে পারে, যারা কাজ করে না তাদের ভুলও হয় না’- উক্তিটি কে করেন?
উত্তর : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান মহাত্মা গান্ধীকে কী উপহার দেন?
উত্তর : কিছু দাঙ্গা-হাঙ্গামার ছবি।
প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কোন বিভাগে ভর্তি হন?
উত্তর : আইন বিভাগ।
প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রথম সভাপতিত্ব করেন কোন ছাত্রসভায়?
উত্তর : আমতলার সাধারণ ছাত্রসভায়।
আরো কিছু তথ্য…………………
প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু কোন শিল্পীর গানের ভক্ত ছিলেন?
উত্তর : আব্বাস উদ্দিন।
প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু ছাত্র রাজনীতি থেকে বিদায় নেন কোন সালে?
উত্তর : ১৯৪৯ সালে।
প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক গুরু কে ছিলেন?
উত্তর : হােসেন শহীদ সােহরাওয়ার্দী।
প্রশ্ন : কার নির্দেশে সর্বদলীয় সংগ্রাম পরিষদ গঠন করা হয়?
উত্তর : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের।
প্রশ্ন : বঙ্গবন্ধু তার অসমাপ্ত আত্মজীবনীতে মিয়ানমারকে কী নামে অভিহিত করেন?
উত্তর : ব্রহ্মদেশ।
প্রশ্ন : ‘আমি মন্ত্রিত্ব চাই না।’ যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে জয়লাভের পর কে এ কথা বলেছিল?
উত্তর : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
প্রশ্ন : শেখ মুজিবুর রহমান শেরে বাংলা এ কে ফজলুল হককে কী বলে সম্বােধন করতেন?
উত্তর : নানা।
প্রশ্ন : যুক্তফ্রন্ট মন্ত্রিসভায় সর্বকনিষ্ঠ মন্ত্রী ছিলেন কে?
উত্তর : বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।
প্রশ্ন : ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্বাচনী এলাকা কোন দুটি থানা ছিল?
উত্তর : গােপালগঞ্জ ও কোটালীপাড়া।
প্রশ্ন : ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ গ্রন্থটি কোন বাক্য দিয়ে শেষ হয়?
উত্তর : তাতেই আমাদের হয়ে গেল।